আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাম্বার ওয়ান...(গল্প)

২০০০ সাল। তখন আমি পঞ্চম শ্রেণীতে। রোল নম্বর এক। বৃত্তি পরীক্ষা দেব। তাই আমাদের থেকে বাছাইকৃত ২০জনকে আলাদাভাবে পাঠদান করা হচ্ছে স্কুলে।

পারভিন ম্যডাম রয়েছে আমাদের দায়িত্বে। উনি স্কুলের সবচেয়ে সিনিয়র শিক্ষক। তার উপর ইংরেজী ম্যাডাম। বৃত্তি পেতেই হবেই এবার উনার ঘোষণা। বিকাল ৪টা পর্যন্ত উনি নিজ থেকেই এক্সট্রা সময় দিচ্ছেন আমাদেরকে।

বাড়ীর কাজ দেয়া, তা আদায় করে নেয়া, পরীক্ষা নেয়া, পরীক্ষা খারাপ করলে তা বাড়ীতে রিপোর্ট করা- সবই চলতেছে কঠোরভাবে। এদিক থেকে আমি সুবিধাভোগী ছিলাম। রোল নম্বর এক, তার উপর আবার প্রথম বেঞ্চে বসি। সুতরাং পড়া জিজ্ঞেস করার ক্ষেত্রে আমি সন্দেহের তালিকায় একদমই থাকতাম না। প্রতিদিন তবুও আতঙ্ক বিরাজ করতো।

কিভাবে আজকের মতো বাঁচা যায়। তার উপর আবার বুধবার (বুধবার মানে ঊংংধু মুখস্থ করে আসার দিন)। ক্লাসের মাঝে দশ নম্বর বিপদ সংকেত বিরাজ করতেছে। সবার উঠে পড়ে লেগেছে পড়া আয়ত্ব করার জন্য। ক্লাসের আলোচিত আজগর এরও টাইম নেই সিমার দিকে তাকানো।

হঠাৎ ম্যাডামের প্রবেশ। “এই! দু’জন উঠে এসো তো, একটু খাসের হাট স্কুলে যেতে হবে (এ স্কুলটি আমার স্কুল থেকে এক মাইল দূরে), কে পারবে যেতে?” আমি মনে মনে ভাবলাম এ সুযোগ কোন ভাবেই মিস করা যাবে না। যেতে পারলে আজকে পার পেয়ে যাওয়া যাবে। আমি দাড়ালাম। বন্ধু নজরুলকেও সুযোগের ভাগিদার করলাম।

দুজনই বেজায় খুশি। ম্যাডাম বললেন “যাও। এ চিঠি ঐ স্কুলে দিয়ে আস, তাড়াতাড়ি চলে আসিও”। আমরা আনন্দের যাত্রা শুরু করলাম। পৌঁছালাম সাড়ে বারোটায়।

আরো একঘন্টা ঘুরলাম। সময় যে কাটতেছে না। যেভাবে হোক অন্ততঃ তিনটা বাজলেই হলো। কারণ তিনটার পর আর পড়া ধরা হয় না। আস্তে আস্তে রাস্তার পিঁপড়া মেরে, রিক্সা সাইকেল গুণে গুণে, আসলাম ঠিক তিনটা দশ মিনিটে।

লক্ষমাত্রা থেকে দশ মিনিট বেশি পার করা গেল। সুতরাং আরো নিশ্চয়তা বোধ করতে লাগলাম। ক্লাসে প্রবেশ করলাম। ম্যাডাম ক্লাসে গল্প করতেছেন। “কোন সমস্যা হয়নি তো যেতে?” ম্যাডাম জিজ্ঞেস করলেন।

“না, ম্যাডাম কোন সমস্যা হয়নি” (মনে মনে বলতেছি ম্যাডাম যত কাজ থাকে আমাদেরকেই দিয়েন, আমরাতো এটাই চাই)। এবার ম্যাডাম বলতেছেন, “শোন, তোমাদের জন্য আমরা অপেক্ষা করতেছিলাম। কারণ তোমরাতো স্কুলের কাজেই গিয়েছ। তোমরা এসেছ, এখন আমরা ক্লাস শুরু করব। এতক্ষণ গল্প হচ্ছিল।

তো নাম্বার ওয়ান তরিক তুমিই শুরু কর...। ” মোহাম্মদ তরিক উল্লাহ আইন বিভাগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।