আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কি বলব এটা--- কোইন্সিডেন্স নাকি মিরাকেল

আমি পরাজিত হইনা বরং অন্যকে জয়ের সুযোগ করে দিই অফিস থেকে প্রায়ই আমার স্যার এর গাড়িতে বাসায় ফেরা হয়। আমাদের ম্যানেজার স্যার খুবই ভাল এবং হাসিখুশি মানুষ। তো ফেরার পথে আমরা বেশ মজার মজার কথা বলি, গল্প করি। সেদিন মানে ১১ অক্টোবর ২০১১ আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আমরা রওনা দিলাম। অনেক কথার মাঝখানে কোন কারন ছাড়াই আমি হঠাৎ আমার ছোটবেলার কাহীনি বলা শুরু করে দিলাম।

কথাগুলো ছিল এইরকম "জানেন স্যার, আমার ছোটবেলাটা অনেক মজার ছিল। বাবার চাকরির সুবাদে আমরা চিটাগং এর অনেক জায়গায় অনেক ধরনের মানুষের সাথে থাকার এবং মেশার সুযোগ পেয়েছি। আমার একেবারে ছোটবেলা কেটেছে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের সাথে। খুব ভোর বেলা আমি ঘুম থেকে উঠেই মাকে বলতাম দরজা খুলে দিতে। এক দৌড়ে চলে যেতাম বুদ্ধ মন্দিরে।

সেখানে পুরোহিতের জন্য যারা চা নাস্তা বানাতেন (তাদের বলা হত শীষ্য বা শ্রমন) আমি তাদের সাথে নাস্তা করতাম। চা এর অভ্যাস টা আমার তখন থেকেই। ওদের সবরকম ধর্মীয় অনুষ্ঠান আমি পালন করতাম ঠিক ওদের মত করে। মা বাবা আমাকে কখনই বাধাঁ দেননি। তো এইরকমই একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সন্ধ্যাবেলা আকাশে অনেক ফানুস ওড়ান হয়।

আমরা ওড়াতাম সেই মন্দিরের মাঠে। দেখার মত দৃশ্য। খুবই চমৎকার এবং স্মরণীয়। আমার বয়স ছিল তখন ৩ কি ৪। ওখানে আমরা ছিলাম ২বছর।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল তাদের সাথে বিশেষ করে সেই শ্রমনের সাথে আমাদের এখনও যোগাযোগ আছে। " সে যাক। স্যার অনেক অবাক হয়ে আমার কথা শুনছিলেন। এবার গাড়ি থেকে নামার পালা। নামামাত্রই আমার মাথায় ঘুরছিল যে আমি এতসব কথা স্যার কে কেন বললাম।

আমার ত এই কথাগুল সবসময় মনে পরেনা .। যাইহোক ঠিক তার পরের দিন মানে ১২ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে স্যারের ফোন পেয়ে একটু অবাক হই। স্যার আমাকে প্রথম-আলো পত্রিকার ৩য় পেইজ টা দেখতে আর আমার প্রতিক্রিয়া জানাতে বললেন। আমি এবার পুরোদুস্তর কৌতুহলী হয়ে উঠলাম। পত্রিকার ৩য় পাতা খুলে দেখলাম অনেক ফানুসের ছবি যা রীতিমত আমাকে হতভম্ব করে দিল।

গতকাল ছিল সেই দিনটি যে দিনে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা ফানুস উড়ায়। আমি আগের দিন যখন স্যার কে গল্প গুলো বলছিলাম সেটা ছিল ফানুস উড়ানর সঠিক সময়। আমি আসলে তখন ভেবে উঠতে পারছিলামনা এটাকে কি বলে? আমি বছরে ৩৬৫ দিনের ১ টা দিনই সেইদিনগুলর কথা মনে করলাম আর এভাবে মিলে গেল !!!! আমি সত্যি এই অনুভূতি ভাষায় ব্যক্ত করতে পারছিলামনা। আমি বোধহয় মনের অজান্তেই সেই দিনগুল খুব মিস করছিলাম। স্যার কে অনেক থাঙ্কস যে উনি দেখে আমাকে জানিয়েছিলেন।

নতুবা এই বিষয় টা আমার অজানাই থাকত। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।