আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আরব মহাজাগরণ ও ছোটবেলায় খেলা আমার প্রিয় একটি ভিডিও গেম...

বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। [১৭:৮১-পবিত্র কুরআন] স্কুলে পড়া অবস্থায় হাত খরচের টাকা বাচিয়ে মহল্লার ছোট ছোট ভিডিওগেমসের দোকানে গিয়ে ২ টাকার কয়েন দিয়ে একটি গেম প্রায়ই খেলতাম। গেমটির আসল নামটি আমার মনে নাই। তবে সবাই ওটাকে মোস্তফা নামেই চিনতো।

কারণ ঐ গেমে মোস্তফা নামে একটা চরিত্র ছিল আর অধিকাংশই ঐ প্লেয়ারটা সিলেক্ট করেই খেলতো। যতদূর মনে পড়ে ওটাতে আটটা ধাপ ছিল এবং প্রতি ধাপের শেষেই একটা করে বস আসতো। এক একটা ধাপের বসদের হত্যা করেই পরবর্তী ধাপে যাওয়া যেত। আর শেষ ধাপের বস (মেইন বস) -কে মারতে পারলেই গেম ওভার হতো। আমার এক ফ্রেন্ড এক কয়েনই গেম ওভার করতে পারতো।

এই কারণে মাঝে মাঝে দোকানের মালিক সুইচ অফ করে দিত। সেটা ভিন্ন কথা, এবার আসি মূল আলোচনায়। সম্প্রতী আরব বিশ্বে যে মহাজাগরণ সংঘটিত হচ্ছে তা আমাকে ঐ গেমটার কথাই বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে। যেখানে আরবের সাধারণ জনতা হলো প্লেয়ার আর আরব স্বৈরশাসকগুলো হলো বস। এক একটা দেশ ঐ গেমের এক একটা ধাপের মতো।

একটি দেশের স্বৈরশাসকের (বস) পতন ঘটিয়ে আরব জনতা এক একটি ধাপ অতিক্রম করছে। বিখ্যাত আরব জাতি ইতিমধ্যেই তিনটি ধাপ অতিক্রম করেছে। তাদের সামনে আরো কয়েকটি ধাপ আছে, আমি মনে প্রাণে আশা করছি তারা গেম ওভার করতে পারবে। অনেকে হয়তো বলবেন এটা সিআইএ এবং মোসাদের ষড়যন্ত্র, পশ্চিমারা আরবের তেল সম্পদ লুট করতে চায় এরকম আরো অনেক কথা। আমি তা মনে করি না, সিআইএ ও মোসাদ যদি কোটি কোটি আরব জনতাকে জাগিয়ে তুলতেই পারে তাহলে তো সিআইএ ও মোসাদকেই সমগ্র আরবের শাসক বানিয়ে দেয়া উচিত।

হ্যা, এটা সত্য যে সিআইএ, মোসাদ, পাশ্চাত্য বিশ্ব এ বিপ্লব থেকে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। তারা তো অতীতেও এ সব স্বৈরশাসকের মাধ্যমে তাদের স্বার্থ উদ্ধার করেছে। আর এ সব স্বৈরশাসকেরা চরম দূর্নীতিগ্রস্থ ও ভোগবিলাসে লিপ্ত। তারা শুধু নামেই মুসলিম, কাজে কর্মে নয়। কিছু উদাহরণ দিচ্ছি, যেমন, তিউনিসিয়ার স্বৈরশাসক বেন আলির স্ত্রী দেশ ছেড়ে পালানোর সময় সঙ্গে করে দেড় টন স্বর্ণ নিয়ে যায় যার বাজার মূল্য ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশী।

অনেক মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞের মতে ক্ষমতাচ্যুত হোসনী মোবারক ও তার পরিবারের সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। বিপুল পরিমাণ খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এ অঞ্চলগুলো শুধুমাত্র অযোগ্য কুলাঙ্গার নেতৃত্বের কারণেই অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সামরিক দিক দিয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারেনি। আমার মনে হয় আরব জনগণের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। তাইতো তিউনিশিয়ার মুহাম্মাদ বুয়াজিজি যখন নিরুপায় হয়ে শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করে জালিম সরকারের কুকর্মের প্রতিবাদ জানায় তখন আরব জনতা আর চুপ করে বসে থাকতে পারেনি। তারা জেগে উঠে, তারা আজ উজ্জীবিত, একতাবদ্ধ।

তারা মেইন বসের (সউদী রাজ পরিবার) পতন ঘটিয়ে গেম ওভার করবেই ইনশাল্লাহ্। কিন্তু ঘটনার এখানেই শেষ নয়। আমার মনে হয় এরপর শুরু হবে আরেক গেম, স্বৈরশাসকদের পতনের পর আরবে ইসলামের পূণর্জাগরণ ঘটবে, উজ্জীবিত আরবদের মধ্য থেকে শেষ নবী ও রাসূল মুহাম্মাদ (সাঃ) - এর আদর্শে অনুপ্রাণিত এক নেতার আবির্ভাব হবে, যে আরবসহ মুসলিম বিশ্বকে একত্রিত করে পুনরায় খিলাফত প্রতিষ্ঠিত করবে আর নেতৃত্ব দিবে সাম্রাজ্যবাদী জালিমদের নির্মূল করার গেমে। তথ্যসূত্রঃ www.dailymail.co.uk/news/article-1347938/Tunisian-presidents-wife-Leila-Trabelsi-fled-riots-35m-gold-bars.html www.guardian.co.uk/world/2011/feb/04/hosni-mubarak-family-fortune english.aljazeera.net/indepth/features/2011/01/201111684242518839.html  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।