আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক দরবেশের কাহিনী ও বর্তমান আরববিশ্বের আন্দোলন

সবাইকে স্বাগতম বহু আগে শুনেছিলাম এক দরবেশের গল্প। গল্পের কাহীনি কতটুকু সত্য বা মিথ্যা সেটা আমি জানিনা। দরবেশের নামটাও ভুলে গেছি শুধু মনে আছে গল্পের সারমর্ম। একদেশে ছিল এক কঠোর মেজাজী, অত্যাচারী রাজা। রাজ্যের কোন প্রজা পান থেকে চুন খসলেই রাজার কঠোর বিচারের মুখে পড়তেন।

নানা অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হতে হত। এমনকি মৃত্যুদণ্ডটাও ছিল খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। সেই অত্যাচারী রাজার দেশে ছিলেন পরম আল্লাহ ভক্ত এক দরবেশ যিনি সব সময় আল্লাহর এবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকতেন আর মানুষের সেবা করতেন নিস্বার্থভাবে। রাজ্যের সাধারন মানুষ যে কোন বিপদে আপদে সমস্যায় পড়লে দরবেশের কাছে আসতো। দরবেশ সাধ্যানুযায়ী মানুষের সেবা করতেন এবং সবসময় জনগণের ভাল চেয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতেন।

দরবেশের মুরিদ এবং ভক্তগণ প্রায় সময় দরবেশের কাছে বাদশার বিরুদ্ধে নালিশ করত। এমনি একদিনে দেশের জনগণ অত্যাচারী বাদশার অত্যাচারের কথা এসে দরবেশের কাছে বলে অনেক মিনতি করে বলল, হে দরবেশ আপনি দয়া করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন যেন আল্লাহপাক এই অত্যাচারী বাদশার হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করেন। এই বলে জনগণ উনার পাশে জমায়েত হয়ে কান্নাকাটি করতে লাগলো। দরবেশ খুবই নরম দিলের ছিলেন। তিনি জনসাধারণের এই দু:খ দেখে সহ্য করতে না পেরে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এর কাছে দোয়া করলেন, হে রাব্বুল আলামিন এই অত্যাচারি বাদশাহকে ধংস করে এই দেশের জনগণকে মুক্তি দান কর।

দরবেশ ছিলেন আল্লাহর অনেক প্রিয় বান্দাদের একজন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন উনার দোয়া কবুল করলেন। দরবেশ দোয়া শেষ করার কিছুক্ষণ পরেই শুনলেন জনগণ হৈ হুল্লোর করে উনার কাছে আসছে। লোকজন এসে দরবেশকে অনেক অনেক ধন্যবাদ দিল বলল আপনার দোয়া আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কবুল করেছেন আমাদের কে এই অত্যাচারী রাজার কবল থেকে মুক্ত করেছ্নে। এই মাত্র খবর এসেছে বাদশাহ শিকারে গিয়ে ঘোড়া থেকে পাথরের উপর পড়ে গিয়ে মৃত্যু বরণ করেছে।

প্রজাগণ মুক্তির আনন্দে হৈ হুল্লুর করে আনন্দে পুরো সপ্তাহ কাঠিয়ে দিল কিন্তু তাদের এই আনন্দ বেশী দিন স্থায়ী হলনা। তাদের পাশ্ববর্তী দেশের রাজা এই সুজুগে হামলা করে দেশ দখল করে লুটপাঠ নির্যাতন শুরু করেদিল। চারিদিকে লুটপাট আর অত্যাচারে ভীত সম্ভ্রস্ত জনগণ আবার ছুটলো দরবেশের কাছে। গিয়ে বলল হে দরবেশ আপনি আবার আল্লাহর কাছে দোয়া করেন আল্লাহ যেন আমাদেরকে এই অত্যাচারী রাজার হাত থেকে রক্ষা করেন। এর চেয়ে তো আমরা আগে ভাল ছিলাম।

শান্তিমত বউ ছেলে মেয়ে নিয়ে বাস করতে পারতাম। এই দেশ, এই ভুমি আমাদের ছিল কিন্তু এখন তো আমাদের আমাদের এই ভুমি, জান মাল, সম্মান অন্য দেশের হাতে চলে গেছে আজ আমরা পথে ঘাটে নির্যাতিত হচ্ছি। আমাদের বউ-ঝি আজ ভীনদেশিদের হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। সব শুনে দরবেশ আবার আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে বসলেন। তখন আল্লাহর কাছ থেকে দরবেশের কাছে আদেশ এল হে আমার প্রিয় দরবেশ তুমি আগে প্রার্থনা করেছিলে এই দেশের বাদশাহর কাছ থেকে এই দেশকে মুক্ত করতে আমি তোমার প্রার্থনা কবুল করে এই বাদশাহর হাত থেকে এই দেশকে মুক্ত করেছি।

তাহলে তুমি কেন আবার প্রার্থনায় বসেছ। এই দেশের জনগন তাদের বাদশাহর ধংসের মধ্যেই ভেবেছিল তাদের সুখ। আসলে তা তাদের ছিল ভুল ধারণা। তাদের এই পরিণতি তাদের ভোগ করতে দাও। আসলে তাদের দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, এবং প্রাকৃতিক সম্পদের পরিপেৰিতে তাদের বাদশাহর এই রকম কঠোর হওয়ার দরকার ছিল কারণ তাদের দেশ ছিল অনেক প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর।

জনগণ ছিল ভিন্নমতাবলম্বি তাদের মধ্যে ছিল জাতিগত ধন্দ। তারা ছিল উগ্র মেজাজী। তাদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা ছিল অনেক বেশী। শুধুমাত্র তারা এতদিন একত্রিত ছিল এবং আইন শৃংখলা মেনে চলত আগের বাদশার কঠোর শাষনের কারণে। আর আগের বাদশার কঠোর মনোভাবের কারণে ভিন দেশী শত্রুরা এই রাজ্য আক্রমণ করার সাহস পেত না।

বাদশার মৃত্যুতে দেশের জনগণের মধ্যে তাদের স্বভাবসূলভ দ্বন্ধ লেগে গেল তাইতো ভিনদেশী শত্রু যখণ আক্রমণ করল তখণ তারা একত্রিত হয়ে মোকাবেলা করতে পারলনা সেই সুযোগে শত্রু সহজেই তাদের দেশ দখল করে লুটপাট করতে লাগলো। **গল্পটা মনে পড়ল কিছুক্ষণ আগে ব্লগার পোষা পাখি ভাইয়ের সুখে থাকলে ভূতে কিলায়! যেমনটা হয়েছে লিবিয় জনগণের লেখাটি পড়ে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।