আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

“কলা” খান সুস্থ্য থাকুন !!

বৃক্ষ তোমার নাম কি, ফলেই পরিচয়..... কলা সারাবিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ফল যার ইংরেজি নাম Banana। সাধারণত উষ্ণ্ল জলবায়ুর দেশে কলা ভাল জন্মে। তবে দক্ষিণ- পূর্ব এশিয়াই কলার উৎপত্তিস্থল হিসাবে পরিচিত। বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বহু দেশে কলা অন্যতম প্রধান ফল। বাংলাদেশের নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, যশোর, বরিশাল, বগুড়া, রংপুর, জয়পুরহাট, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, প্রভৃতি এলাকায় কলা বেশি চাষ হয়ে থাকে।

পার্বত্য এলাকায় বনকলা, বাংলাকলা, মামা কলাসহ বিভিন্ন রকম বুনোজাতের কলা চাষ হয়। কলা সম্পর্কে খনা তার বচনে বলেছেন, “কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড়, তাতেই ভাত”। কলারজাতঃ বাংলাদেশে প্রায় ১৯টি জাতের কলা রয়েছে। দেশের পার্বত্য এলাকায় বাংলা কলা, বনকলা, মামাকলা ইত্যাদি নামেও কলার কিছু বুনো জাত দেখা যায়। দিনে দিনে কলার নতুন নতুন জাতের সংখ্যা বাড়ছে।

গাছের বৈশিষ্ট্য অনুসারে বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতের কলা গাছকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে যথাঃ (১)লম্বা জাতের গাছ, ও (২)খাটো জাতের গাছ। পাকা অবস্থায় খাওয়ার জন্য কলার জাত ৪ প্রকার যথাঃ হলুদবর্ণ পাকা কলা.সম্পুর্ন বীজমুক্ত কলাঃ যেমন-সবরি, অমৃতসাগর, অগ্নিশ্বর, দুধসর, দুধসাগর প্রভৃতি। দু-একটি বীজযুক্ত কলাঃ যেমন-চাম্পা, চিনিচাম্পা, কবরী, চন্দন কবরী, জাবকাঠালী ইত্যাদি। বীজযুক্ত কলাঃ এঁটেকলা যেমন-বতুর আইটা, গোমা, সাংগী আইটা ইত্যাদি। আনাজী কলাসমূহঃ যেমন-ভেড়ার ভোগ, চোয়াল পউশ, বর ভাগনে, বেহুলা, মন্দিরা, বিয়েরবাতি প্রভৃতি ।

কলার গুণাগুণঃ কলা বিভিন্ন গুণাগুনে সমৃদ্ধ একটি ফল। এর পুষ্টিগুণ অধিক। এতে রয়েছে দৃঢ় টিস্যু গঠনকারী উপদান যথা আমিষ, ভিটামিন এবং খনিজ। কলা ক্যালরীর একটি ভাল উৎস। এতে কঠিন খাদ্য উপাদান এবং সেই সাথে পানি জাতীয় উপাদান সমন্বয় যে কোন তাজা ফলের তুলনায় বেশি।

একটি বড় মাপের কলা খেলে ১০০ ক্যালরির বেশী শক্তি পাওয়া যায়। কলাতে রয়েছে সহজে হজমযোগ্য শর্করা। এই শর্করা পরিপাকতন্ত্রকে সহজে হজম করতে সাহায্য করে। প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ (খোঁসা ছাড়া)কলায় আছেঃ পানিঃ ৭০.১%। প্রোটিনঃ১.২%।

ফ্যাট/চর্বিঃ ০.৩%। খনিজ লবণঃ ০.৮%। আঁশঃ ০.৪%। শর্করাঃ ৭.২%। ক্যালসিয়ামঃ ৮৫মিঃগ্রাঃ।

ফসফরাসঃ ৫০মিঃগ্রাঃ। আয়রনঃ ০.৬মিঃগ্রাঃ। ভিটামিন বি কমপ্লেক্সঃ ৮মিঃগ্রাঃ। ক্যালরিঃ ১১৬। উপকারীতাঃ ¤শরীরের ক্লান্তি দূর করতে কলা বিশেষভাবে উপকারী।

¤কলা দুধের সাথে মিশে খাওয়া গেলে তা হতে প্রায় পুরোপুরি সুষম খাদ্য পাওয়া যায়। ¤কলা নিরাপদ হজমের জন্য পথ্য হিসাবে কাজ করে। ¤কলা নরম হবার কারণে হজম শক্তির কাজে বাড়তি ঝামেলা দেখা দেয় না। ¤দীর্ঘকাল স্থায়ী আলসার রোগের ক্ষেত্রেও কোন সমস্যা ছাড়াই কলা খাওয়া যায়। ¤কলা পরিপাকতন্ত্রের অতিরিক্ত অম্লত্ব নিরসন করে।

¤কলা পাকস্থলীর আভ্যন্তরীক দেয়ালের আস্তরণের ওপর একটি আবরণ সৃষ্টি করে আলসারের উত্তেজনাকে প্রশমন করে। ¤কলা কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়ায় মত রোগের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ¤কলা যহেতু পেকটিন সমৃদ্ধ যা পানিতে দ্রবনীয় তাই এই দুই ক্ষেত্রেই কলার ভূমিকা সমান দরকারী। ¤কলা পেটের ক্ষতিকারক জীবানুকে উপকারী ব্যাকটেরিয়াতে পরিণত করতে পারে। ¤কলা গেটে বাত ও বাতের চিকিৎসায় বিশেষ উপকারী।

¤কলাতে উচ্চ পরিমাণ আয়রন থাকাতে তা এ্যানিমিয়ার চিকিৎসার জন্য উপকারী। কারণ তা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ¤কলা ও দুধের মিশ্রণ শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। ¤ডায়েট চিকিৎসার ক্ষেত্রে ১০-১৫ দিন প্রতিদিন ৬টি কলা এবং চার গ্লাস দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। সাবধানতাঃ কলা খেয়ে কলার ছাল (খোঁসা) নিজ দ্বায়িত্বে নিরাপদ স্থানে ফেলুন , নইলে যেকোন ধরনের দুর্ঘটানা ঘটতে পারে।

সেই (দুরঃ)ঘটনার শিকার হতে পারেন আপনি নিজে অথবা আপনার পরিচিত কেউ। - http://www.tunerpage.com/archives/30554 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।