সামনে কোরবানী ঈদকে টার্গেট করে ছিনতাইকারী,প্রতারক চক্র বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে!সারাদিন পত্রিকা,ব্লগ পড়ে কত ধরনের প্রতারক চক্রের বিষয়ে সতর্ক এই আমিই ধরা খেতে খেতেও খেলাম না! গত শুক্রবার ছুটির দিন সারাদিনই ঘুমিয়ে কাটালাম। সন্ধ্যায় ছবির হাটে আড্ডা শেষে বাংলামটর দিয়ে যাচ্ছিলাম, শরীররটা কেমন ভারি ভারি মনে হওয়ায় রিকশা ছেড়ে হাটতে লাগলাম। জনকন্ঠ ভবন পার হওয়ার সময় মনে হলো হোন্ডা থেকে দু'জন আমাকে ফলো করছে। আমি পাত্তা দিলাম না। হাটতে লাগলাম, হঠাৎ এক সিএনজি ড্রাইভার সিএনজি থামিয়ে টাইম জানতে চাইলো আমি রাত্র ৯ টা বাজে বললাম।
সময় বলে যাওয়ার সময় সিএনজি ওয়ালা দুটি বিদেশী টাকার নোট বের করে জানতে চাইলো কোন দেশের নোট। আমি চিনি কিনা?আমিও হাত বাড়িয়ে নিয়ে দেখলাম ১০০ বায়সার দুটি নোট, সেন্ট্রাল ব্যাংক অব ওমান। আমি বলাতে সে বলল আচ্ছা এটা নাকি ভাংগাতে পাসর্পোট লাগবে? আমি বললাম না এটা ভাংগাতে কোন পাসপোর্ট লাগবে না মানি এক্সচেঞ্জে গেলেই হবে। এমন সময় একজন এসে বলল সিএনজি যাবে? ড্রাইভার বলল না, আচ্ছা দেখেনতো ভাইয়া এই দুইটা নোট কোন দেশের লোকটা অবাক হয়ে বলল বেশ দামি নোট, আচ্ছা তোমাকে আমি ২হাজার টাকা দিবো আর যে মোবাইলটা আছে তার দাম ২হাজার টাকা হবে সেটা দেবো আমাকে দাও। আমার ভেতর কেমন একটা কাজ করলো, ভাবটা এমন আমি আগে সন্ধান পেয়েছি আমি নিবো !
আমি সিএনজি ড্রাইভারকে বললাম আচ্ছা তুমি কতো হইলে দিবা, সিএনজি ড্রাইভার খুব নম্রভাবে বলল স্যার দুইজন বিদেশী আমার গাড়ীতে প্রায় চার-পাচঁ ঘন্টা ঘুরেছে তারপর তারা এই টাকা দিছে এখন আমার টাকা দরকার যা পাই বিক্রি করে দিবো।
ঐ খানের পুলিশ সার্জনরে দেখাইছি সে বলছে ১০,০০০ টাকার মতো পাবো। আপনি ৭০০০ দিলেই দিয়ে দিবো। আমি সিএনজি তে উঠে মগবাজার ডাচ এর বুথে যেতে বললাম ওখানে বুথ থেকে টাকা উঠিয়ে দিবো বললাম। যথারিতি ওখানে থামানোর পরে একলোক সিএনজি যাবে কিনা জিজ্ঞাসা করলো ড্রাইভার আবারোও সেই নোটের দর দেখালো লোকটাও খুব আগ্রহে নোটের রেট জানার জন্য তার ভাই মানি এক্সচেঞ্জে চাকুরী করে সেখানে ফোন দিলো। আমি স্পষ্ট শুনতে পেলাম ১ বায়সা সমান ১৯২ টাকা, আমার স্পিড আবার বেড়ে গেলো।
আমি দ্রুত টাকা ওঠানোর জন্য বুথে প্রবেশ করলাম।
ক্রেডিট কার্ড প্রবেশ করানোর পর ভুলে অন্য পাসওয়ার্ড দেয়ায় দেরী হচ্ছিল আমিও ফাকে চিন্তা করলাম এভাবে টাকা দিয়ে বিদেশী মুদ্রা কেনা কি ঠিক?! ভুল করছি না তো। কয়েকজনকে ফোন দিলাম কেউই মুদ্রার দাম জানে না, মেজাজ গরম হয়ে গেলো। ছোট বোনের হাজবেন্ডকে ফোন দিলাম সে বলল আপনাদের বাসার নিচ তলায় মতিউর ভাই থাকে সেতো মানি এক্সচেঞ্জে চাকুরী করে সে ভালো বলতে পারবে। যাক শেষ ভরসা, কিন্তু আমাদের বাড়ির গার্ড মমিনকে ফোন দিলে কখনোও বাসায় পাওয়া যায় না।
তাহলে মতিউর ভাইকে কিভাবে পাবো? তবুও শেষ চেষ্ঠা, মমিনকে আজ পাওয়া গেলো মতিউর ভাইকে দিতে বললাম। ফাকে ডাচের সিকি্উরিটিকে বললাম কোন সিএনজি ওয়ালা আছে কিনা, সে বলল আছে আমার সন্দেহ বাড়লো যে লোকের এতা তারা সে প্রায় ১০-১৫ মিনিট ওয়েট করছে! চলে যাচ্ছে না! মতিউর ভাইকে পেলাম। ২০০ বায়সা সর্ম্পকে বললাম,মতিউর ভাইয়ের কথা শুনে আমারতো চক্ষু চড়াগগাছ! বলে কিনা ২০০ বায়সা সমান ১৬ টাকা! আর আমার পকেটে সদ্য ক্রেডিট কার্ডে তোলা ৭০০০ টাকা!
মোবাইলে কথা বলতে বলতে বেড়িয়েছি আমার এক্সেপ্রেশন দেখে ড্রাইভার সিএনজি স্ট্রাট করে টান দিয়ে খুব র্স্মাটলি হাত নেরে বললো স্যার আসি, যার কিছুক্ষন আগেও আঞ্চলিক ভাষায় সহজ সরল অভিব্যক্তি ছিলো! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।