জুন ২০১০
মুনান টিএসসি তে বসে আছে, ভয়ে তার অবস্থা খারাপ। আজ তার রেজাল্ট দেবে, সে এতটাই নার্ভাস ফিল করছে যে রেজাল্ট আনতে যায়নি। বন্ধুরা সবাই গেছে, তারাই তার রেজাল্ট নিয়ে আসবে। রেজাল্ট খারাপ হলে স্কলারশিপ পাবেনা, এই স্কলারশিপটার জন্যই এতো খাটাখাটুনি। মুনান ফিজিক্সে এমএসসি করছে।
ইচ্ছে আছে স্কলারশিপ নিয়ে ইউএস যাবে পড়তে।
এই সময় হটাত কোথা থেকে এক বয়স্ক লোক এসে আনন্দে আত্বহারা হয়ে তার হাত ধরে ঝাঁকাতে শুরু করলো। সে অবাক হয়ে দেখল বয়স্ক লোকটির চেহারা অনেকটা তারই মতো।
কংগ্রাচুলেশন ইয়াং টাইম ট্রাভেলার। লোকটি বলে উঠলো।
মুনান জবাব দিল কেন? লোকটি জবাব দিলো তোমার স্কলারশিপের জন্য। মুনান হতভম্ব!!
আপনি কে? আমার রেজাল্ট আপনি জানলেন কোথা থেকে, সবাই তো রেজাল্ট আনতে ভার্সিটি গেছে!!! আর আপনি এভাবে হাসছেন কেন??
লোকটি জবাব দিলো আসলে নিজেকে এভাবে দেখতে পাব ভাবতে পারিনি তাই এতো খুশী লাগছে। যাই হোক, আমার হাতে সময় নেই, তুমিতো “সময়” নিয়েই গবেষণা করতে চাও α কে ফলো করো, বাই। বলেই লোকটি হন হন করে হেঁটে চলে গেল।
ঝিম মেরে মুনান কিছুক্ষণ বসে রইল, লোকটি কে? কি বলে গেল মাথা মন্ডু কিছুই বুঝতে পারলোনা, সে তার ব্যাপারে এগুলা কোথা থেকে জানলো তাও বুঝতে পারছেনা।
টাইম সম্পর্কে তার এই আগ্রহ এই লোক জানলো কোথা থেকে !!!
এগুলো ভাবতে ভাবতে সফি, শাহিনরা চলে আসলো, এসেই কিল মারল, শালা এবার কি খাওয়াবি বল।
এতক্ষনে একটু ধাতস্থ হয়ে মুনান স্বাভাবিক ভাবে জিজ্ঞাসা করলো, কি খাবি?
ডিসেম্বর ২০৫৫
ল্যাবরেটরিতে বসে ঘামছে প্রফেসর মুনান, উত্তেজিত চোখে চেয়ে আছে বস্তুটির দিকে, জানেনা যন্ত্রটি কাজ করবে কিনা, আবার চেক করলো। থিওরিটিক্যালি যন্ত্রটি কাজ করছে। এতো বছর ধরে যে বিষয়ে গবেষণা করে আসছে আজ তার ফল পেতে যাচ্ছে।
নার্ভাস অবশ্যই।
এক বছর আগে টাইম মেশিন এর ফর্মুলা আবিস্কার করে সে। সেদিন এতই উত্তেজিত হয়ে পরে যে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। কাউকে এখনো জানায়নি, চেয়েছে একেবারে দুটো সারপ্রাইজ দিতে সব্বাইকে। সময়কে অতিক্রম করার সূত্র আর এই টাইম মেশিন।
যন্ত্রটা বেশ বড় হয়ে গেছে।
আপাত দৃষ্টিতে স্টেজের মতো জায়গায় চারটি পিলার দাড়িয়ে আছে। এখানে আলট্রা সেনসিটিভ ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি করবে। বস্তুটি এক অংশ দিয়ে ঢুকে অন্য অংশ দিয়ে বের হবে। এক অংশ দিয়ে ঢুকে অন্য অংশ দিয়ে বের হতে ১ মিনিট লাগবে এবং এই সময়টুকু সে বিচরন করবে অন্য সময়, অবশ্য। কিন্তু এই বর্তমান ১ মিনিট অতীত বা ভবিষ্যৎ সময়ে কতক্ষন তা সে এখনো বলতে পারছেনা।
যন্ত্রটি পরীক্ষা করার জন্য কালকে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইছেনা। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল। এখনই সে মেশিনটি চালাবে। যন্ত্রটি অন করে প্রফেসর ঘামতে লাগলো। সুক্ষ শব্দ হচ্ছে।
প্যানেলে টাইম ফিক্স করল , তবে সে প্রথমে যাবে অতীত এ। নিজের অজান্তেই বসালো সনঃ ২০১০ মাসঃ জুন তারিখঃ ১২ সময়ঃ ১৭:০০
এইবার সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ভালো করে নিঃশ্বাস নিয়ে হাটতে শুরু করলো ম্যাগনেটিক ফিল্ডের দিকে। চোখ বন্ধ করে প্রবেশ করলো।
প্রবেশ করেই সে গরম তাপ পেয়ে চোখ খুলে দেখল সে টিএসসির সামনে দাড়িয়ে আছে, আনন্দে তার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে। একি একটু দূরে সে ২৪ বছরের নিজেকে দেখতে পারল। হটাত সে বুঝতে পারল আজ তার রেজাল্টের দিন। কিছু না ভেবেই সে আনন্দের আতিশয্যে মুনান এর হাত ধরে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বলল “কংগ্রাচুলেশন ইয়াং টাইম ট্রাভেলার”। মুনান এর হতভম্ব ভাবটা বেশ উপভোগ করছে।
ইয়াং মুনান প্রশ্ন করলো কেন?
প্রফেসর জবাব দিলো তোমার স্কলারশিপের জন্য। ইয়াং মুনান হতভম্ব!!
আপনি কে? আমার রেজাল্ট আপনি জানলেন কোথা থেকে, সবাই তো রেজাল্ট আনতে ভার্সিটি গেছে!!! আর আপনি এভাবে হাসছেন কেন??
প্রফেসর জবাব দিলো আসলে নিজেকে এভাবে দেখতে পাব ভাবতে পারিনি তাই এতো খুশী লাগছে। যাই হোক, আমার হাতে সময় নেই, তুমিতো “সময়” নিয়েই গবেষণা করতে চাও, α কে ফলো করো, বাই।
বলেই প্রফেসর হাটতে শুরু করলেন। তিনি জানেন না তার হাতে কতক্ষন সময় আছে আর তাই যতক্ষণ সময় আছে ততক্ষন একটু ঘুরে ফিরে দেখতে চান ফেলে আসা সময়টিকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।