আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৫০০ শব্দে আগামীর বাংলাদেশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র ২০১২ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী সরকার স্বাস্থ্য খাতে মাথাপিছু মাত্র ২১ ডলার ব্যায় করে থাকে, বিশ্বমানে পৌছার জন্য যা ৪৪ ডলার হওয়া প্রয়োজন। অনেক মহামারি রোগ দমনে আমাদের সাফল্য আছে বটে কিন্তু নতুন নতুন সংক্রামক ব্যাধি মোকাবেলায় আমাদের প্রচেস্থার ঘাটতি রয়েছে। ২০০৭ সালে জনস্বাস্থ্যে সরকারি বিনিয়োগ এসে দাঁড়িয়েছে মোট ব্যায়ের মাত্র ২.৭ শতাংশে! স্বাস্থ্য পর্যটনে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিদেশ চলে যাচ্ছে। খ্যাদ্যে ভেজাল মানবসৃষ্ট মহামারিতে পরিনত হয়েছে। একে ঠেকাতে না পারলে আগামীতে এক বধির সমাজ উপহার পাবে দেশ।

খেলাধুলায় আগ্রহীদের ছোটবেলা থেকেই প্রশিক্ষন দিয়ে আগামীর জন্য তৈরি করে নেওয়া জরুরি। প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের বি.কে.এস.পি’র সক্ষমতা অনেক কম! এইটির ন্যায় অঞ্চলভিত্তিক আরো নতুন কেন্দ্র তৈরি করতে পারলে সক্ষম খেলোয়াড়দের সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে। ক্রিকেটকে এখনও ছড়িয়ে দেয়া যায়নি ফুটবলের অবস্থাও তথৈবচ। হাডুডু, কুস্তির মত প্রাচীন খেলা শুধু সঠিক পৃষ্টপোষকতার অভাবে ভবিষ্যতে আর দেখা যাবে না! রাজনিতিকিকরণ, দলীয়করণ আর রেষারেষি কমিয়ে দিক নির্দেশনামূলক কার্যক্রম বাড়াতে পারলে ক্রিকেট, দাবা, শুটিং, জুডো, হকি আরো নতুন কিছু অপ্রচলিত খেলায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রভুত উন্নতি করতে পারবে। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে শিল্প, সংস্কৃতিতে বিনিয়োগের উঠা-নামা লক্ষ্য করা যায় যা অনভিপ্রেত।

দেশের বাইরে আমাদের কৃষ্টি কালচারই আমাদেরকে পরিচিত করে থাকে এবং ভবিষ্যতেও করবে আর এই ক্ষেত্রে যেকোনো প্রকার শৈথিল্য আমাদেরকে বিশ্বে অপরিচিত করে রাখবে। অসন্তোষ কমাতে শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিত করা জরুরি। এক্ষেত্রে মালিক, শ্রমিক ও সরকার এই তিন পক্ষকে একত্রে কাজ করা প্রয়োজন। আবার এটা সত্যি যে, “হ্যাপি লেবার” প্রকারন্তরে পন্যের উৎপাদন খরচ বাড়ায় আর এতে চীনের মত দেশ এখন আর আগের মত কম খরছে পন্য উৎপাদন করতে পারছে না। তারা এখন “হাই টেক” পন্য উৎপাদনে মনযোগী হয়ে উঠেছে, আমাদেরও আস্তে আস্তে এই পথে হাঁটতে শিখে নিতে হবে।

পৃথিবীর যেকোনো দেশের থেকে কম খরছে আমরা কাপড় সেলাই করতে পারি তবে বেকওয়ার্ড লিংকেজটা আরো একটু শক্ত হলে আসছে দিনে আমরা এই শিল্প আরো সফল হব। পোশাক শিল্পের পর জাহাজ নির্মাণকেই আমার কাছে সবচেয়ে বেশী সম্ভাবনাময় বলে মনে হয়। ট্রিলিয়ন ডলারের এই শিল্পে বাংলাদেশ একবারেই নতুন। আইনের কারণে ২৫ বছরের বেশি পুরনো জাহাজগুলো আগামী বছর থেকে চলাচল করতে পারবে না। আইএমওর এ নির্দেশনার কারণে কয়েক হাজার জাহাজকে প্রতিস্থাপন করতে হবে।

হাতেগোনা ইয়ার্ডগুলি এখনই ১০ হাজার টনের জাহাজ বানাতে শিখে গেছে সক্ষমতা বাড়লে বছর কয়েকের ভিতর আমরা দুই বিলিয়ন ডলারের বাজার দখল করতে পারব। গত বছর শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমান ছিল ১৩ বিলিয়ন ডলার বা ১ লক্ষ ৪ হাজার কোটি টাকা! শ্রমিকদের সামান্য শিখিয়ে পড়িয়ে পাঠালেই এই আয়কে সহজেই ২০ বিলিয়ন ডলারে রুপান্তর করা যাবে। শ্রমিকদের বিদেশ যেতে সরকার মধ্যস্থতায় জড়িয়ে থাকলে কম টাকায় ও সময়ে অনেকেই সহজে কাজ নিয়ে বাইরে যেতে পারবে। সামান্য প্রণোদনা পেলে চা, চামড়া, ঔষধ আমাদের অন্যতম রপ্তানি খাতে পরিনত হতে পারে। ৭ মাত্রার প্রবৃদ্ধি আগামী দুই দশকেই আমাদের মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত করতে পারে কিন্তু এর জন্য চাই বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ ও জ্বালানি খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ।

সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি ধরে রাখতে জলবায়ুর ব্যপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। পানি ও জ্বালানি সম্পদ ব্যাবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন। রাজনীতি অর্থনীতির গলায় কাঁটা হিসাবে বিঁধে আছে। এর থেকে বাঁচতে মেধা ভিত্তিক শিক্ষিত সমাজ গড়া ছাড়া উপায় নাই। একমাত্র শিক্ষিত তরুন সমাজই পারে এইসব কুলশিত রাজনীতিবিদদের শিক্ষা দিতে।

সুনামগঞ্জ, জুলাই ১৩, ২০১৩ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।