আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

।। ফিলিস্তিনী কবিতা : বাঙলায়ন : রহমান হেনরী ।।

বাঙলা কবিতা । । তাকাও আমার চোখ দুটোতে // জিহাদ আলী । । ______________ তাকাও আমার চোখ দুটোতে আর বলো, কী দেখতে পেলে তোমরা।

কচুও দ্যাখোনি, কেননা, সম্ভবত, তোমরা সম্পৃক্ত হতে পারো না আমার সাথে। আমাদের পৃথকত্বই অন্ধ করে রাখে তোমাদের। আমার জীবন কোনই অর্থ বহন করে না, তোমাদের চোখে। যন্ত্রণাক্লিষ্ট ফিলিস্তিনী আমি, তোমরা মার্কিনী, লাল, কালো বা নীল। রোজ ভোরে প্রশান্তির ভেতর ঘুম ভাঙে তোমাদের, চোখ দুটির সামনে পেরিয়ে যাবার জন্য থাকে না কোনই ভীতি।

আমি জেগে উঠি কৃতজ্ঞতার ভেতর, শোকরানা করি খোদা তা-আলার, যিনি জাগবার সামর্থ্য দিচ্ছেন আমাকে। তোমরা উদ্বিগ্ন তোমাদের শিক্ষাদীক্ষা নিয়ে আর ওইসব পরিশোধ্য বিলগুলির জন্য। আমি উদ্বিগ্ন আমার এই ঝুঁকিপূর্ণ জীবন নিয়ে টিকে থাকবো কী থাকবো না আরেকটা দিন। তোমরা ভীত তোমাদের ক্যাডিলাকগুলো নিয়ে প্রমোদভ্রমণের পর্যাপ্ত জ্বালানী মিলবে কিনা; আমার ভয় ওই ট্যাংকটাকে নিয়ে, যে এক্ষুণি ফিরে গেল; আবার ঘুরে আসে কিনা। মার্কিনীরা, তোমরা কি জানো, যে কর তোমরা পরিশোধ করো, তা আহার জোগায় সেই অপশক্তিকেই যা আমাদের প্রতিদিনের বেঁচে থাকাকেই পঙ্গু করে দেয়।

এইসব বুলডোজার, ট্যাংক, গ্যাস ও বন্দুক, ওইসব বোমা, যা এসে পড়তে থাকে আমার দরোজার বাইরে, এর সবই মার্কিনী অর্থায়নে। তোমরা কী সত্যিই জানো সেই সত্য তোমাদের টাকাগুলো কোথায় যায়? তোমরা কি নিজেদের বিভ্রান্ত করার সব অধিকার প্রচার মাধ্যমের হাতে তুলে দিয়েছো? এটা কি আদৌ কোনও বাস্তবতা যে মার্কিনীদের কেউ-ই জানে না কিছুই? ইহুদীবাদের অন্যায্য পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমার আত্মরক্ষার কাজকেই তোমরা দোষারোপ করছো। নিজভূমে সন্ত্রাসকবলিত আমি আর আমাকেই বলছো সন্ত্রাসী? তোমরা ভাবো, সন্ত্রাস বিষয়ে সব কিছুই জানো তোমরা, কিন্তু আমি যেভাবে জানি, তোমরা তা জানো না; শোনো, সন্ত্রাস বিষয়টাকে সংজ্ঞায়িত করতে দাও আমাকে। আর তোমাদেরকে শেখাতে দাও, যা জানো বলে তোমরা ভাবতে। অনেক বছর ধরে সন্ত্রাসকে জেনেছি আমি, পঞ্চান্ন বছর বা তারও চেয়ে বেশি; আমার বাড়ির চত্বরে ওই উপড়ে ফেলা ফলগাছগুলো, এটাই সন্ত্রাস।

আমার দরোজার সামনে এগিয়ে আসছে ওই যে বুলডোজার, এটাই সন্ত্রাস। যে বাতাসে শ্বাস-প্রশ্বাস নিই আমি, সন্ত্রাসও নিঃশ্বাস ফেলছে সেখানেই। ইশকুলে যাবার পথে ওই যে দেহতল্লাসী__ ওটাই সন্ত্রাস। এই যে কারফিউ, যা নিজগৃহে কারারুদ্ধ করে আমাকে, আর এটা ভাঙতে গেলে যে সাজাভোগ__ এর নাম সন্ত্রাস। সন্ত্রাস হলো আমার দেশটাকে ডাকাতি করে কেড়ে নেওয়া, আর অকথ্য নির্যাতন করা আমার মাকে, আমার নির্দোষ বাবার কারাভোগ আর আমার ছোট্ট মাসুম ভাইটির বুকে বিঁধে যাওয়া ওই গুলির নাম সন্ত্রাস।

কাজেই, ও মার্কিনী, আমাকে বলো না ওই কথা- সন্ত্রাস নামে আমি যা দেখি আর অনুভব করি, তা জানো তুমি। নিজদেশে সন্ত্রাস-বিদীর্ণ আমি আর সন্ত্রাসের দায় এসে চেপে বসে আমারই কাঁধে! কাজেই, বিশ্রামে যাবো না আমি, থেমে থাকবো না, কেননা, অন্তহীন এক অন্যায় ভোগ করছে আমার মানুষেরা; ফিলিস্তিন আমার মাতৃভূমি আর আমরা থেকে যাবোই এখানে। শেষদিন অব্দি, যতক্ষণ না নিরাপদ হচ্ছে মাতৃভূমিটি আমার। আর যদি এমন হয়, সেই দিন কখনই এলো না, তা হলে শান্তিময় একটা দিনও দেখতে পাবো না আমরা। মাতৃভূমি থেকে কেউ আমায় ছুঁড়ে ফেলবে দূরে, সেটা দেখতে জন্মিনি আমি।

ন্যায়ের জন্য আমার লড়াইকে জলাঞ্জলি দিতেও আসিনি আমি। আর যদি নিহত হই আমি, সেটাও হবে এই ফিলিস্তিনেই। প্রতিটি দমে দমে আমি লিখে রাখছি এই কতা। কাজেই, দেশপ্রেমের পক্ষে দেয়া তোমাদেরই প্রতিশ্রুতির দোহায়: "স্বাধীনতা ফিরিয়ে দাও আমাকে, না পারলে দাও মৃত্যু। " ___________________________ ।

। তাকাও আমার চোখ দুটোতে // জিহাদ আলী । । ______________ তাকাও আমার চোখ দুটোতে আর বলো, কী দেখতে পেলে তোমরা। কচুও দ্যাখোনি, কেননা, সম্ভবত, তোমরা সম্পৃক্ত হতে পারো না আমার সাথে।

আমাদের পৃথকত্বই অন্ধ করে রাখে তোমাদের। আমার জীবন কোনই অর্থ বহন করে না, তোমাদের চোখে। যন্ত্রণাক্লিষ্ট ফিলিস্তিনী আমি, তোমরা মার্কিনী, লাল, কালো বা নীল। রোজ ভোরে প্রশান্তির ভেতর ঘুম ভাঙে তোমাদের, চোখ দুটির সামনে পেরিয়ে যাবার জন্য থাকে না কোনই ভীতি। আমি জেগে উঠি কৃতজ্ঞতার ভেতর, শোকরানা করি খোদা তা-আলার, যিনি জাগবার সামর্থ্য দিচ্ছেন আমাকে।

তোমরা উদ্বিগ্ন তোমাদের শিক্ষাদীক্ষা নিয়ে আর ওইসব পরিশোধ্য বিলগুলির জন্য। আমি উদ্বিগ্ন আমার এই ঝুঁকিপূর্ণ জীবন নিয়ে টিকে থাকবো কী থাকবো না আরেকটা দিন। তোমরা ভীত তোমাদের ক্যাডিলাকগুলো নিয়ে প্রমোদভ্রমণের পর্যাপ্ত জ্বালানী মিলবে কিনা; আমার ভয় ওই ট্যাংকটাকে নিয়ে, যে এক্ষুণি ফিরে গেল; আবার ঘুরে আসে কিনা। মার্কিনীরা, তোমরা কি জানো, যে কর তোমরা পরিশোধ করো, তা আহার জোগায় সেই অপশক্তিকেই যা আমাদের প্রতিদিনের বেঁচে থাকাকেই পঙ্গু করে দেয়। এইসব বুলডোজার, ট্যাংক, গ্যাস ও বন্দুক, ওইসব বোমা, যা এসে পড়তে থাকে আমার দরোজার বাইরে, এর সবই মার্কিনী অর্থায়নে।

তোমরা কী সত্যিই জানো সেই সত্য তোমাদের টাকাগুলো কোথায় যায়? তোমরা কি নিজেদের বিভ্রান্ত করার সব অধিকার প্রচার মাধ্যমের হাতে তুলে দিয়েছো? এটা কি আদৌ কোনও বাস্তবতা যে মার্কিনীদের কেউ-ই জানে না কিছুই? ইহুদীবাদের অন্যায্য পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমার আত্মরক্ষার কাজকেই তোমরা দোষারোপ করছো। নিজভূমে সন্ত্রাসকবলিত আমি আর আমাকেই বলছো সন্ত্রাসী? তোমরা ভাবো, সন্ত্রাস বিষয়ে সব কিছুই জানো তোমরা, কিন্তু আমি যেভাবে জানি, তোমরা তা জানো না; শোনো, সন্ত্রাস বিষয়টাকে সংজ্ঞায়িত করতে দাও আমাকে। আর তোমাদেরকে শেখাতে দাও, যা জানো বলে তোমরা ভাবতে। অনেক বছর ধরে সন্ত্রাসকে জেনেছি আমি, পঞ্চান্ন বছর বা তারও চেয়ে বেশি; আমার বাড়ির চত্বরে ওই উপড়ে ফেলা ফলগাছগুলো, এটাই সন্ত্রাস। আমার দরোজার সামনে এগিয়ে আসছে ওই যে বুলডোজার, এটাই সন্ত্রাস।

যে বাতাসে শ্বাস-প্রশ্বাস নিই আমি, সন্ত্রাসও নিঃশ্বাস ফেলছে সেখানেই। ইশকুলে যাবার পথে ওই যে দেহতল্লাসী__ ওটাই সন্ত্রাস। এই যে কারফিউ, যা নিজগৃহে কারারুদ্ধ করে আমাকে, আর এটা ভাঙতে গেলে যে সাজাভোগ__ এর নাম সন্ত্রাস। সন্ত্রাস হলো আমার দেশটাকে ডাকাতি করে কেড়ে নেওয়া, আর অকথ্য নির্যাতন করা আমার মাকে, আমার নির্দোষ বাবার কারাভোগ আর আমার ছোট্ট মাসুম ভাইটির বুকে বিঁধে যাওয়া ওই গুলির নাম সন্ত্রাস। কাজেই, ও মার্কিনী, আমাকে বলো না ওই কথা- সন্ত্রাস নামে আমি যা দেখি আর অনুভব করি, তা জানো তুমি।

নিজদেশে সন্ত্রাস-বিদীর্ণ আমি আর সন্ত্রাসের দায় এসে চেপে বসে আমারই কাঁধে! কাজেই, বিশ্রামে যাবো না আমি, থেমে থাকবো না, কেননা, অন্তহীন এক অন্যায় ভোগ করছে আমার মানুষেরা; ফিলিস্তিন আমার মাতৃভূমি আর আমরা থেকে যাবোই এখানে। শেষদিন অব্দি, যতক্ষণ না নিরাপদ হচ্ছে মাতৃভূমিটি আমার। আর যদি এমন হয়, সেই দিন কখনই এলো না, তা হলে শান্তিময় একটা দিনও দেখতে পাবো না আমরা। মাতৃভূমি থেকে কেউ আমায় ছুঁড়ে ফেলবে দূরে, সেটা দেখতে জন্মিনি আমি। ন্যায়ের জন্য আমার লড়াইকে জলাঞ্জলি দিতেও আসিনি আমি।

আর যদি নিহত হই আমি, সেটাও হবে এই ফিলিস্তিনেই। প্রতিটি দমে দমে আমি লিখে রাখছি এই কতা। কাজেই, দেশপ্রেমের পক্ষে দেয়া তোমাদেরই প্রতিশ্রুতির দোহায়: "স্বাধীনতা ফিরিয়ে দাও আমাকে, না পারলে দাও মৃত্যু। " ___________________________ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।