মহান পুরুষ নিয়ে লেখার কি আছে। একদিন আগে এক আত্নীয়কে বিদায় জানাতে গিয়েছিলাম হজ্জ ক্যাম্পে। তখন সন্ধ্যা পার হয়েছে। ফ্ল্যাইট ছিল রাত ১২ টায়। ক্যানসেল হয়ে সেটি পরের দিন ১২ টায় হয়ে যায়।
নির্দিষ্ট হাজীদের থাকার জায়গা হয়েছিল হজ্জ ক্যাম্পের ৫ তলায়। যেখানে শুধু হজ যাত্রীদের যাওয়ার অনুমতি আছে। তবে বিশেষ প্রয়োজন হলে হজ্জ অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে যাওয়া যেতে পারে। হজ্জ অফিসার না থাকলে সহকারী হজ্জ অফিসার এ দায়িত্ব পালন করেন। আমার আত্নীয় বৃদ্ধ হওয়ায় নিজেই উপরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।
যথারীতি অনুমতি নিতে গেলাম। ততক্ষনে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত সাড়ে সাতটা। হজ্জ অফিসার নেই। বিটিভি'র একটি অনুষ্ঠানে সাক্ষাতকার দিতে গিয়েছেন তিনি। গেলাম সহকারীর রুমে।
তার রুম ফাঁকা। বেশ বড় সর একটা রুমে তিনটি বাতি জ্বলছে। দুই টি ফ্যান ঘুরছে। একটি মাথার উপর। আরেকটি বসার চেয়ারের পাশে।
অথচ রুমে একটি প্রানী নেই। রুমের সামনে গিয়ে কিছুক্ষন ডাকা-ডাকি করেও কোন লাভ হলোনা। শুরু করলাম অপেক্ষা করা। প্রায় মিনিট বিশেক পরে এক ব্যাক্তি এসে জানতে চাইলো আমি কিছু খুঝছি কিনা। আমি জানতে চাইলাম রুমের বাইরে যে ব্যাক্তি নেমপ্লেট রয়েছে তিনি কোথায়? জানালেন, তিনি নামাজে গেছেন।
এভাবে লাইট-ফ্যান জ্বালিয়ে রেখে কেন তিনি বাইরে গেছেন? বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে তো। এগুলো বন্ধ করেও যাওয়া যেত। তাহলে যে বিদ্যুত বাঁচতো তা দিয়ে অন্য কারো কাজে লাগতো। যাকে বললাম তিনি আরো গরম হয়ে গেলেন। বললেন, `সরকারি বিদ্যুতের হিসাব আর সাধারণ পাবলিকের হিসাব এক না।
তারা চাইলে সারাদিন-রাতই চালিয়ে রাখতে পারে। এটা কোন সমস্যা না। ' তাকে বুঝালাম। কিন্তু কোন লাভ হলো বলে মনে হলো না। আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম রুমের বাইরে লেমপ্লেটে লাগানো সেই ব্যাক্তির জন্য।
যার নাম আব্দুল মালেক, পদ-সহকারী হজ্জ অফিসার। আমি ১ ঘন্টা অপেক্ষা করেও তাকে পাইনি। তবে আমাকে জ্ঞান দেয়া ব্যাক্তিটি জানালেন, স্যার নামাজ শেষে চা-খেতে যেতে পারেন। কথায় জানলাম, তিনি এখানকার অফিস সহকারী।
আমার আর অনুমতি নেয়া হয়নি।
আত্নীয় কষ্ট করে নিচে এসেছেন। তার সঙ্গে দেখা করে চলে এসেছি। আপনারা যদি কেউ এরমধ্যে ওদিকে যান, দয়া আব্দুল মালেক কে বলবেন তিনি যেন, কষ্ট করে লাইট ও ফ্যান বন্ধ করে রুম থেকে বের হন।
ছবি: আব্দুল মালেকের সেই রুম। রুম কেউ নেই।
ফ্যান লাইট চলছেই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।