Shams মেয়ে দেরি করে বাড়ি ফিরল। বাবা জিজ্ঞেস করল ‘কোথায় ছিলে?’
মেয়ে বলল : বন্ধুর বাসায়।
বাবা মেয়ের সামনেই তার ১০ জন বন্ধুকে ফোন দিল:
৪ জন বলল ‘ও তো এখানেই ছিল’!
২ জন বলল ‘ওহ আঙ্কেল: ও তো এইমাত্র বের হয়ে গেল’!
৩ জন বলল ‘ও তো আমার বাসায় পড়ছে। ওকে কি ফোনটা দেব?’!!
১ জন তো পুরাই উড়াধুরা। সে বলল: ‘হ্যাঁ, বাবা, বল!!!’
এ হল প্রক্সি।
কলেজে পড়ার সময় খুব কম ছাত্রকে পাওয়া যাবে যে ক্লাসে হাজিরা ডাকার সময় প্রক্সি দেয়নি। আমার প্রক্সি দেয়ার জন্য আমার ক’টা সহপাঠী ছিল কলেজে, তারা আমার হয়ে প্রক্সি দিত আমি স্থানীয় ছেলে বলে। কিন্তু এক দুর্ঘটনার জন্য সেটা বন্ধ করতে হয়। দুর্ঘটনা হল : সবাই তো আর সব ক্লাস করে না এ জন্য মোট ৫ জনকে বলা ছিল হাজিরা দেয়ার জন্য। আর দুর্ঘটনার দিন সেই ক্লাসে ৫ জনই ছিল।
আমার রোল ৫৬৯৬৪২ বলার সঙ্গে সঙ্গে ৫ জন ‘ইয়েস স্যার’ বলে। ব্যাস, আমাকে মাঠ থেকে ডিপার্টমেন্টে মামা ধরে নিয়ে যায় চেয়ারম্যানের রুমে। অনেক কিছু হতো শুধু একটা সংজ্ঞা মনে রাখার জন্য পার পেয়ে ছিলাম। (সংজ্ঞাটা মনে রেখেছিলাম আঁতেল টাইপের মুরুব্বিদের জন্য যারা ম্যানেজমেন্ট পড়ছি শুনে ম্যানেজমেন্টে সংজ্ঞা জিজ্ঞেস করে। ) ‘অন্যের দ্বারা সুদক্ষতার সহিত কাজ করিয়ে নেয়াকে ব্যবস্থাপনা বলে।
’
একটা বহুল প্রচলিত কৌতুক বলি,
পথচারী : এই মিথ্যুক! তুমি তো অন্ধ নও। তুমি অন্ধ সেজে ভিক্ষা করছ কেন?
ভিক্ষুক : ঠিকই ধরেছেন স্যার। যে অন্ধ সে আজ ছুটি নিয়ে সিনেমা দেখতে গেছে। তার জায়গায় আমার ডিউটি পড়েছে। আসলে আমি বোবা।
এভাবে আমরা সবাই যখন যেখানে যা দরকার তাই হয়ে প্রক্সি দিয়ে যাচ্ছি। যেমন ধরেন, ছেলের রেজাল্ট কার্ডে বাবা টিপসই দিল ছেলে কারণ জিজ্ঞেস করলে বাবার উত্তর: তোর রেজাল্ট দেখে মনে হয় না বাড়িতে কোন শিক্ষিত কেও আছে।
এবার এক প্রকৌশলীর গল্প বলি। তিনি বদলি হয়ে গেলেন এক এলাকার দায়িত্বে। গিয়েই তিনি তার সহকারীকে আগের কয়েক বছরে কী কী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়েছে, তার একটা রিপোর্ট করার নির্দেশ দিলেন।
নির্দেশমতো তদন্ত করে সহকারী তাকে যথাসময়ে প্রতিবেদন দিলেন। তিনি ঘেঁটে দেখলেন, এলাকায় পানির সমস্যা নিরসনে একটি প্রশস্ত দীঘি খনন করার বাজেট দেয়া হয়েছিল এবং রিপোর্টে উল্লেখ আছে, সেই দীঘিটা যথাসময়ে খনন করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা দাঁড়াল, যখন অনেক খোঁজাখুজি করেও তিনি রিপোর্টে উল্লিখিত জায়গায় কোন দীঘি পেলেন না, তার আর বুঝতে বাকি রইল না আসলে কী ঘটেছে। তিনিও এর সুযোগ নিলেন, তিনি ওপরের মহলে রিপোর্ট করলেন যে এ এলাকার মানুষ দীঘি থেকে পানি পান করে বলে এখানে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি, তাই অচিরেই যেন এ দীঘি ভরাট করে এখানে নলকূপ স্থাপনের বাজেট দয়া হয়। যথাসময়ে বাজেট মিলল এবং ‘না কাটা’ দীঘি ভরাট হয়ে গেল; সেই সঙ্গে ওই প্রকৌশলী ও তার সহযোগীদের পকেটও ভরল।
প্রক্সি চলে পাবলিক পরীক্ষাতেও। যে কোন পালিক পরীক্ষার সময় দেখা যায় এক জনের হয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়ে অন্যজন ধরা। মাঝেমধ্যে সংবাদপত্রে দেখা যায় এক জনের হয়ে অন্যজন কোর কারণে হাজিরা দিতে হাজতে। এমন চলে আছে কালে কালে, যুগে যুগে। কমিউনিস্ট আমলের জোকস বলি শুনুন:
স্তালিনের চুরুট গেছে হারিয়ে।
ঘটনা ঘটেছে সকালবেলায়। সন্ধ্যার মধ্যেই মিলিশিয়া গ্রেফতার করছে শ’খানেক লোককে। এরই মধ্যেই ক্রেমলিনের ঝাড়ুদার চুরুট খুঁজে পেয়েছে ডিভানের তলায় এবং স্তালিনের হাতে সেটা তুলেও দিয়েছে। স্তালিন তখন ফোন করলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আর কষ্ট করতে হবে না। চুরুট খুঁজে পাওয়া গেছে।
: কিন্তু স্যার আমরা কি করি এখন? যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকি সবাই স্বীকার করেছে যে তারাই চুরুট চুরি করেছে ।
: কী? এখনও একজন স্বীকার করেনি? তবে চালিয়ে যান তদন্ত!
অনেক জটিল-জটিল, ভারি-ভারি, বড়-বড় বিষয় নিয়ে মশকরা করা হয়েছে, এবার একটা সরল কৌতুক বলি।
ক্লাস টিচার মন্টুকে কিছু প্রশ্ন করলেন: মন্টু, বল তো আমেরিকার প্রেসিডেন্টের নাম কী?
: জানি না স্যার।
: আচ্ছা বল তো তোমার বাবা কত স্পিডে মোটরসাইকেল চালান?
: জানি না স্যার।
: মন্টু বল তো মুরগি কী দেয়?
: জানি না স্যার।
: ঠিক আছে কাল বাড়ি থেকে প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে আসবে, টিচার বললেন।
বাড়ি গিয়ে মন্টু মাকে বলল, আমেরিকার প্রেসিডেন্টের নাম কী? মা বলল, ওবামা। বাবাকে বলল, বাবা তুমি কত জোরে মোটরসাইকেল চালাও? বাবা বলল, ফুল গিয়ারে। মন্টু আপুকে বলল, আপু মুরগি কী দেয়? আপু বলল, ডিম দেয়।
পরদিন
শিক্ষক : মন্টু প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে এসেছ?
মন্টু : জি স্যার।
উত্তরগুলো এক দমে বলি স্যার।
শিক্ষক : আচ্ছা বল।
মন্টু : ওবামা ফুল গিয়ারে ডিম পাড়ে।
এমন ভুল বোঝাবুঝি প্রায় আমাদের জীবনে ঘটে। যেমন ধরেন রাস্তায় দেখছেন কয়েকটা ছেলে রাস্তায় চিল্লাচিল্লি করছে, সমান তালে হাতাপাই করছে; কাছে গিয়ে দেখছে বন্ধুবান্ধব ইয়ারকি করছে।
আবার কখনও দেখবে ২ বন্ধু হাসি হাসি মুখে এটিএম বুথে ঢুকছে। কিছুক্ষণ পর একজন বেরিয়ে চলে যাওয়ার পর আরেকজন বলে ছিনতাইকারী ছিল। এজন্য কখনও ভুল বোঝাবুঝি থেকে ‘ঘটনা’ হয়। আবার কখন ঘটনা ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হয়ে যায়। কখনও দোষী ‘ভুল বোঝা বুঝি’ তে পার পেয়ে যায়, এ জন্য অবশ্য থানা থেকে শুরু করে, গণমাধ্যমে বিবৃতি দিতে হয়।
আবার কখনও ভুল বোঝাবুঝিতে কারও সর্বস্ব শেষ হয়ে যায়, এজন্য থানা থেকে শুরু করে, গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েও কিছু হয়। বুঝেছেন ব্যাপারটা?
বুঝতে পরেনি? না তাহলে একটা কৌতুক বলি শুনুন:
মা : কোথায় ছিলে বাবা?
ছেলে : পাশের বাসার আন্টি ডেকেছিল মা।
মা : ও ভালো ছেলেদের তো সবাই ডাকে।
তা কি বলল উনি?
ছেলে : আন্টি বলল,আর কখনও যদি তাদের আমগাছে ঢিল মারি। তাহলে উনি আমার হাত ভেঙে দেবেন।
বুঝলেন? বুঝেননি! তাহলে শুনুন:
লোক: এই যে, তুমি যে ভিক্ষা চাইছ, কীভাবে বুঝব যে তুমি কানা?
ভিক্ষুক: এই যে দূরে একটা গরু দেখতাছেন, ওইটা আমি দেখতাছি না।
একেরপর এক প্রক্সি দিতে দিতে আমরা ভুলে গেছি কখন দেখি, কখন দেখি না, কখন দেখলেও বুঝি না। কখনও বুঝেও বুঝি না। যেমন, একদিন এক পকেটমারকে হাতেনাতে ধরার পর ভদ্রলোকের কেন যেন খুব দয়া হল।
সে পকেটমার ছেলেটিকে বলল : তুমি যদি পকেট কাটা ছেড়ে দাও তাহলে তোমাকে আমি মাসে ১,০০০ টাকা করে দেব।
জবাবে পকেটমার ছেলেটি বলল : আপনি যদি আমার সঙ্গে পকেট মারেন তাহলে প্রতি মাসে আমি আপনাকে ৫,০০০ টাকা দেব।
অনেক প্রক্সি হল এবার সব শেষে একটা শেষ কৌতুক শোনায় :
দুপুরে বাসায় কেউ নেই। এক ভদ্রলোক কাপড় চোপড় খুলে গোসল করছেন। এমন সময় বাসার কলিং বেল বাজল। ভদ্রলোক ভাবল, এমন দুপুর বেলায় কারও আসার কথা নয়।
নিশ্চয়ই ফকির এসেছে। শরীর ভিজিয়েছি আবার কাপড় পরব? আচ্ছা কাপড় ছাড়াই লুকিং গ্লাস দিয়ে দেখি কে? যদি ফকির হয় তাহলে ভেতর থেকেই না করে দেব ভিক্ষা দেয়া যাবে না। ভদ্রলোক দরজার ফুটা দিয়ে দেখেন, ফকির নয়, এসেছে পাশের বাসার অন্ধ ছেলে বল্টু। ভদ্রলোক ভাবলেন, কাপড় গায়ে নেই, অন্ধ বল্টুর সঙ্গে দরজা খুলে কথা বললেও সমস্যা কি? ও তো আর দেখবে না আমি... । দরজা খুলে:
ভদ্রলোক : কি ব্যাপার বল্টু তুমি এই দুপুরবেলায়, আবার তোমার হাতে মিষ্টিও দেখছি?
অন্ধ বল্টু : জী খালুজান, এ মিষ্টিগুলো রাখেন, আম্মা পাঠিয়েছে।
ভদ্রলোক : কি কারণে মিষ্টি, বল্টু?
অন্ধ বল্টু : খালুজান, আমি আজ সকাল থেকে দেখতে পাচ্ছি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।