দেশকে নিয়ে ভাবার সময় আমার নেই, তাই মনে হয় আমি কোন প্রাণহীন দেহ নিয়ে বেচেঁ আছি। মানুষের সাথে না মিশলে নাকি তাদের সম্বন্ধে জানা যায়না কথাটি নিতান্তই সত্য। একবার দক্ষিণ গ্রাম থেকে যখন ফিরছিলাম তখন এক সুপারিওয়ালার কাছ থেকে কথাটা শুনি। ভাই, “আগে মানুষ না খাইয়া মরছে, অহন চালের দাম চল্লিশ ট্যাহা-কই আমরাতো মরিনে! কী লাভ সরকাররে দুশ দিয়ে?” একটু দাড়ালাম, ভাবলাম লোকটা আসলে কি বলতে চায়?
আটাশির বন্যার পরেও সে অনেক লোককে না খেয়ে মরতে দেখেছে। সে সময় চালের দাম ছিল মাত্র নয় টাকা, আর এখন তা চল্লিশ-পঞ্চাশ টাকা।
সুতরাং এটা তার স্বাভাবিক অভিব্যক্তি। আসলে এক্ষেত্রে তার কথায় অনেকগুলো বেদনা ফুটে ওঠেছে।
মানুষ যে না খেয়ে মারা যেতো কথাটা সত্য। এইতো ১৯৯১-৯২ সালেও গ্রাম অঞ্চলে ষাট শতাংশে বেশি মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে বাস করতো। প্রকৃতপক্ষে, সে সময় এই দারিদ্রগোষ্ঠীর বিরাট অংশেরই কাজের সুযোগ মিলতো না।
সেদিক থেকে এই সময়ে যোগাযোগ, শিল্প-বাণিজ্য, প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে মানুষ অনেকটা ব্যস্ত হয়ে পড়ার সু্যোগ পাচ্ছে। শহরমুখী হওয়ার ফলে গ্রামের বাদবাকী মানুষের কাজের সুযোগ মিলছে। তাইতো মানুষের(গ্রামের)বেচেঁ থাকার হারও বাড়ছে।
২০১১ সালে চালের দাম চল্লিশ-পঞ্চাশ টাকা, বিষয়টা কেমন যেন মনে হয়! ১৯৭২এ চালের দাম ছিলো ২টাকা, ৮০তে ৫টাকা, ৮৫তে ৭.৫০টাকা, ৯০এ ৯.৫টাকা, ২০০১এ ১১.৫০টাকা। এই ত্রিশ বছরে চালের দাম বেড়েছে মাত্র ৮-৯টাকা।
অথচ বিগত দশ বছরে এর দাম বেড়ে দাঁড়ালো ৪০-৫৫টাকা। এটা কীভাবে মেনে নেওয়া যায়??
যদিও হাইয়ার ইকোনকি, ব্যাংকিং-সিস্টেম, কৃষকদের চাহিদা- এই বিষয়গুলো এর সাথে জড়িত, তবু সরকার কি পারেনা তার দরিদ্র মানুষগুলোকে বাঁচাতে; মৃত্যুর হাত থেকে নয়, যন্ত্রনার ছোবল থেকে। ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।