আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজব ডাকঘর

আগামীকাল বিশ্ব ডাক দিবস। না, ডাকাডাকি বিষয়ক দিবস নয়। মানে চিঠিপত্র বিষয়ক ডাক দিবস। ডাক দিবস উপল্েয জানুন আজব কিছু ডাকঘরের খবর। আজব ডাকঘর আহমেদ রিয়াজ আইফেল টাওয়ারের নিচে ৯৮৪ ফুট উঁচু আইফেল টাওয়ারে ঘুরতে গিয়ে অনেকেরই ইচ্ছে হবে, এখান থেকে প্রিয় কাউকে একটা চিঠি পাঠালে কেমন হয়? কিন্তু এত উঁচুতে কি ডাকঘর আছে? আইফেল টাওয়ারে একটা ডাকঘর আছে, তবে অত উঁচুতে নয়।

টাওয়ারের একেবারে নিচতলায়। কারণ অনেক পর্যটকই টাওয়ারে উঠতে ভয় পান। আর আইফেল টাওয়ার থেকে পাঠানো যেকোনো চিঠি বা পোস্টকার্ডে আইফেল টাওয়ারের বিশেষ ছাপ। ওই ছাপ দেখেই বোঝা যাবে, চিঠিটা আইফেল টাওয়ার থেকেই পাঠানো হয়েছে। সাগরতলে সাগরতলেও ডাকঘর! হুঁ।

ভানুয়াতি দেশে হাইডওয়ে দ্বীপের উপকূল থেকে ৫০ মিটার দূরে তিন মিটার পানির নিচে আছে দুনিয়ার একমাত্র সাগরতলের ডাকঘর। এটি প্রতিদিন এক ঘণ্টার জন্য খোলা হয়। ২০০৩ সাল থেকে শুরু হওয়া এই ডাকঘর দেখতে এসেছেন লাখ খানেক পর্যটক। দ্বীপে যাঁরা ঘুরতে আসেন, তাঁরাই পানির তলায় নেমে এই ডাকঘর থেকে চিঠিপত্র পাঠান। এ জন্য অবশ্য ব্যবহার করা হয় পানিরোধক বিশেষ পোস্টকার্ড।

ভাসমান ভাসমান এ ডাকঘর আছে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে। এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত মিশিগানের বিশাল হ্রদগুলোতে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ কাজ করে। হ্রদ সুপিরিয়র, হ্রদ মিশিগান, হ্রদ হারুন ও হ্রদ এরিতে যাতায়াতকারী জলযানগুলোকে ডাকসুবিধা দেওয়ার জন্য কাজ করছে ভাসমান ডাকঘরটি। ১৮৯৫ সাল থেকে এ এলাকায় ভাসমান ডাকব্যবস্থার শুরু। এখানে সপ্তাহের প্রতিদিন দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টাই পাওয়া যায় ডাকসুবিধা।

ডাক এলে ভাসমান ডাকঘরটি ঘুরে ঘুরে তা পৌঁছে দেয়। ডাকঘরটি পরিচালনা করছে জেডব্লিউ ওয়েস্টকট কম্পানি। পিপে থেকে ঠিকানায় ১৭৯৩ সালের কথা। ইকুয়েডরের গ্যালাপাগাসে ফোরিনা দ্বীপে যাত্রাবিরতি করলেন ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন জেমস কোলনেট। আবার যাত্রা শুরুর আগে কয়েকটি চিঠি ভরে একটি খালি কাঠের পিপে রেখে দিলেন দ্বীপে।

ইংল্যান্ডগামী কোনো জাহাজের নাবিকরা যেন চিঠিগুলো ঠিকানামতো পৌঁছে দেয়Ñএমন অনুরোধ জানিয়েও একটি চিঠি রাখলেন। তার পর থেকে ওই খালি পিপেই হয়ে গেল একটা ডাকঘর। কারণ এর পর থেকে ওই এলাকা দিয়ে কোনো জাহাজ গেলেই ওই পিপেতে চিঠিপত্র পোস্ট করে যায়। যদিও ওই ডাকঘরে কোনো পোস্ট মাস্টার নেই, নেই কোনো পিয়নও। এমনকি কোনো স্ট্যাম্প বা সিলও দরকার হয় না।

কেবল চিঠি পোস্ট করলেই হলো। কোনো জাহাজ ওখানে এসে পিপেটা খুলে চিঠিপত্র দেখে। তারপর মূল ভূখণ্ডে গিয়ে ঠিকানামতো পোস্ট করে দেয়। ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই চলছে ডাকঘরটি। সে জন্য ইকুয়েডরের ওই জায়গাটার নামই হয়ে গেছে পোস্ট অফিস বে বা ডাকঘর উপসাগর।

অ্যান্টার্কটিকার পোর্ট লকরয় অ্যান্টার্কটিকায় ডাকঘর! শুনেই তোমার চোখ দুটো কপালে উঠে যেতে পারে। বরফের ওই মহাদেশে আবার ডাকঘরের কী দরকার? তবে কি পেঙ্গুইনরা ওখান থেকে ডাক পাঠায়? যদিও ডাকঘরের আশপাশে পেঙ্গুইনদের আনাগোনা দেখা যায়, তবে ওরা ডাক পাঠায় না। মানুষই পাঠায়। ওই বরফঢাকা ডাকঘর থেকে বছরে প্রায় ৭০ হাজার কার্ড পাঠানো হয় ১০০টিরও বেশি দেশে। অবশ্য ঠিকানামতো ডাক পৌঁছাতে সময় একটু বেশিই লাগেÑদুই থেকে ছয় সপ্তাহ।

১৯০৩ সালে একদল ফরাসি অভিযাত্রী জায়গাটি আবিষ্কার করেন। ১৯৪৪ সালের পর থেকে পোর্ট লকরয় ব্রিটিশদের দখলে। ওখানে এখন ২০টির মতো ব্রিটিশ ঘাঁটি আছে। লিংক এখানে Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।