যানজটে নাকাল ঢাকাবাসী যখন জাইকার আনুকুল্যে যানজট মুক্ত শহরের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে তখন কারিগরী ও অপারেশনাল বিষয়ে বিমান বাহিনীর কিছু সুপারিশকে অপ্রয়োজনীয় প্রতিভাত করে কয়েকজন বুদ্ধিজীবি পুরো পরিকল্পনাটিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছেন। গোল বেধেছে MRT'র ৬ নং লাইনটিকে নিয়ে।
প্রাথমিক পরিকল্পনায় উত্তরা থেকে পল্লবী, রোকেয়া সরণী, খামার বাড়ি, কামরুজ্জামান সড়ক হয়ে এই লাইনটির সায়েদাবাদ অব্দি যাওয়ার কথা থাকলেও। রহস্যময় কারনে রুট পরিবর্তন করে বিজয় সরণী দিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বিমান বন্দরের গা ঘেষে নিয়ে যাবার কারনে কারিগরী ও অপারেশনাল দিক খতিয়ে দেখার সময় পরিবর্তিত লাইনের ব্যবহারিক ও নিরাপত্তা জনিত ত্রুটি ধরা পড়ে।
বিমান বাহিনীর প্রতিবেদনে বলা হয় বিমানবন্দরের চারিপাশে স্থাপনা তৈরির ক্ষেত্রে রানওয়ের এ্যপ্রোচ ফানেলের কাছাকাছি স্থাপনার সর্বোচ্চ চুড়া রানওয়ের সাথে দূরত্বের ১:৫ আনুপাতিক হিসাব অনুযায়ী নির্মান করা হয়। এয়ার পোর্ট থেকে ৭০১ ফুট দূরত্বের MRT লাইনের সর্বোচ্চ উচ্চতা হতে পারে ১৪ ফুট। প্রস্তাবিত MRT লাইনের উচ্চতা ৬২ ফুট হওয়ায বিজয় সরণীতে এই লাইন নির্মান ঠিক তো হবেই না বরং তা হবে ঝুঁকি পূর্ণ।
বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবিদের অগাধ পান্ডিত্য। প্রায় মূর্খ বিমান বাহিনীর কথা তাঁরা মানবে কেন? যে কৌশলে নতুন রুটের নামে বিমান বাহিনীকে তারা একটু সাইজ করতে চাচ্ছিল সেই বিমান বাহিনীর কথা আমল দেওয়ার দরকারটাই বা কি? তাছাড়া মিডিয়া যেহেতেু তাদের দখলে তাদের আর পায় কে? সবচে' যারা উচ্চ কন্ঠ তাদের একজন ডাকসাইটে স্থপতি, একজন ঢাকা শহরের নাড়ি নক্ষত্র জানা ঐতিহাসিক আর একজন কানুন জানা সাংবাদিক।
নিজ নিজ ক্ষেত্রে ব্যুৎপত্তির কারনে তারা বিমান বাহিনীর প্রতিবেদনকে বুজরুকি ধরে নিয়ে মিডিয়ায় বিমান বাহিনীর প্রধান কে ভিলেন বানাবার চেষ্টায় ব্যস্ত। একজন বলেন বঙ্গবন্ধু নভঃথিযেটার তো ৬২ ফুটেরও বেশি উঁচু কিম্বা জাহাঙ্গীর গেটের কাছে নির্মনাধীন সেনা কল্যান ভবন কি ১৪ ফুটের বেশি উঁচু নয়? একজন বলেন পৃথিবীর আর কোন শহরের চার কোনায় ৪টি সেনা ছাউনি আছে? ঢাকা শহর কি জন বান্ধব না সেনা বান্ধব হবে? আর একজন বললেন এধরনের ধৃষ্টতা প্রদর্শনের সাহস বিমান বাহিনী পায় কি করে? ব্যাখ্যা চাই। মজার ব্যপার হচ্ছে এসব বুদ্ধিজীবিদের বডি ল্যাঙুয়েজ দেখে মনে হয়নি তারা আসলে বিমান বাহিনীর কথা শুনতে চান। কারন তাঁরা শুরু থেকেই একটি পরিকল্পিত মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। তেজ গাও বিমান বন্দরকে তারা প্রথম থেকেই পরিত্যক্ত বিমান বন্দর বলে আসছেন, অবশ্য তাদের মুখের ভাষা শুনলে বিমান বাহিনীকেই পরিত্যাজ্য বলে ধরে নিতে হয়।
বিমান উড্ডয়ন নিযে যেখানে সমস্যা সেখানে কোন বৈমানিকের কথা আমাদের বুদ্ধিজীবিরা শুনতে আগ্রহী নন। বিমান বাহিনী নয় অকাট মূর্খ, বেসামরিক পাইলটদের মতামতও তো নেয়া যেত। প্রায় প্রতিটি সভ্য দেশের রাজধানীতেই একাধিক বিমান বন্দর আছে। কৌশল গত কারণেই সেটা দরকার। আর্ন্তজাতিক বিমান চলাচল সংস্থার কাছে রেজিষ্টার্ড তেজগাও বিমান বন্দর সেদিক থেকে এক ধাপ এগিয়ে।
যদি বিজয় সরণী দিয়ে এমআরটির রুট নেয়া হয় দারুন ভাবে ব্যহত হবে তেজগাও এয়ারপোর্টের ব্যবহার। খাড়া কোনে নামাটা হবে এখনকার চেয়ে ৫ গুণ ঝুঁকি পূর্ণ। নভঃথিয়েটার উঁচু হলেও দুপাশে ম্যানুভারের যায়গা থাকায় বুঁকির মাত্র কম। বিজয় সরনীর এমআরটির রুট দেশের বুহত্তম প্ল্যানেটরিয়াম টিকে শ্রীহীন করে ফেলবে। সেনা জাদুঘর, এয়ারপোর্ট রোডের একটি মসজিদ এবং কুপারস সহ কিছু অংশ ভেঙে ফেরতে হবে।
তার চেয়ে বড়কথা খাড়া ভাবে ওঠানামা করতে গিয়ে যদি কোন বিমান দুর্ঘটনা ঘটে, প্রাণহানির আশংকা তাকবে এমআরটির যাত্রীদের ও। বিমান বাহিনীকে শিক্ষাদেবার জন্যে এত বড় ঝুঁকি নেয়া ঠিক হবে কি?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।