আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই রাজাকারদের কি করা উচিৎ? যে উকিল পশুদের জন্য নিজেকে বিক্রি করে তারা আর ও বড় রাজাকার

ঘাস ফুল সাঈদীর বিরুদ্ধে ২০ অভিযোগ ১৯৭১ সালের ৪ মে। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরা পাকিস্তানি সেনাদের খবর দিয়ে পিরোজপুর সদর এলাকার মধ্য মাসিমপুর বাসস্ট্যান্ডের পেছনে নিয়ে যায়। সেখানে পরিকল্পিতভাবে আগে থেকে জড়ো করা ২০ জন নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩-এর ৩(২)(এ) ধারা অনুসারে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এ ধরনের অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে সহায়তা করা, চেষ্টা ও ষড়যন্ত্র এবং গণহত্যাসহ ২০ অভিযোগে সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গতকাল সোমবার সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, ৪ মে সাঈদী ও তাঁর দল পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে নিয়ে মাসিমপুর হিন্দুপাড়ায় যায়। সেখানে হিন্দু বাড়িগুলোতে লুট করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। মানুষ পালাতে শুরু করলে সাঈদী ও তাঁর দলের সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করলে ১৩ জন মারা যান। অভিযোগ-৩: ৪ মে সাঈদী পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে মাসিমপুর হিন্দুপাড়ায় মনীন্দ্রনাথ মিস্ত্রী ও সুরেশ চন্দ্র মণ্ডলের বাড়ি লুট এবং আগুন ধরিয়ে দেন।

সাঈদী নিজে বিভিন্ন গ্রামের রাস্তার পাশের অসংখ্য বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। অভিযোগ-৪: ৪ মে সাঈদী তাঁর রাজাকার বাহিনী ও পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে ধোপাবাড়ীর সামনে এবং পিরোজপুর সদর পুলিশ স্টেশনের এলজিইডি ভবনের পেছনের হিন্দুপাড়া ঘিরে ফেলেন। এ সময় গুলি চালানো হলে দেবেন্দ্রনাথ মণ্ডল, জগেন্দ্রনাথ মণ্ডল, পুলিন বিহারী ও মুকুন্দ বালা মারা যান। অভিযোগ-৫: তৎকালীন পিরোজপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সাইফ মিজানুর রহমান সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন। সাঈদী ও তাঁর সহযোগী শান্তিকমিটির সদস্য মন্নাফ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনাসদস্যকে নিয়ে ৫ মে পিরোজপুর হাসপাতাল থেকে তাঁকে ধরে বলেশ্বর নদের তীরে নিয়ে যান।

একই দিনে পুলিশ কর্মকর্তা ফয়জুর রহমান আহমেদ (লেখক হুমায়ূন আহমেদ ও মুহম্মদ জাফর ইকবালের বাবা) এবং ভারপ্রাপ্ত এসডিও আবদুর রাজ্জাককেও কর্মস্থল থেকে ধরা হয়। সাঈদীর উপস্থিতিতে এ তিন সরকারি কর্মকর্তাকে গুলি করে লাশ বলেশ্বর নদে ফেলে দেওয়া হয়। অভিযোগ-৬: ৭ মে সাঈদীর নেতৃত্বে শান্তিকমিটির একটি দল পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে পারেরহাট বাজারের আওয়ামী লীগ, হিন্দু সম্প্রদায় এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষের বাড়িঘর ও দোকান চিনিয়ে দেয়। এসব দোকান ও বাড়িতে লুটপাট করা হয়। এ সময় তারা মাখনলাল সাহার দোকান থেকে ২২ সের স্বর্ণ ও রুপা লুট করে।

অভিযোগ-৭: ৮ মে বেলা দেড়টার দিকে সাঈদী পাকিস্তানি সেনাদের নেতৃত্ব দিয়ে বাদুরিয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম খানের ছেলে শহীদুল ইসলাম সেলিমের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে নুরুল ইসলাম খানকে আওয়ামী লীগার ও শহীদুল ইসলামকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং পাকিস্তানি সেনাদের হাতে সোপর্দ করেন। পরে তাঁদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ-৮: ৮ মে বেলা তিনটার দিকে সাঈদী ও তাঁর দলের সদস্যরা চিথোলিয়া গ্রামের মানিক পসারির গ্রাম লুট করেন। এখানে পাঁচটি ঘরে কেরোসিন দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

মানিক পসারির ভাই মফিজুদ্দিন ও ইব্রাহিমকে ধরে সেনাক্যাম্পে ফিরে যাওয়ার সময় সাঈদীর প্ররোচনায় পাকিস্তানি সেনারা ইব্রাহিমকে হত্যা করে। মফিজকে সেনাক্যাম্পে নির্যাতন করা হয়। অভিযোগ-৯: ২ জুন সকাল নয়টার দিকে সাঈদী ও তাঁর সশস্ত্র সহযোগীরা ইন্দুরকানি পুলিশ স্টেশনের নলবুনিয়া গ্রামের আবদুল হালিম বাবুলের বাড়িতে লুটপাট করে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট এবং আগুন ধরিয়ে দেন। অভিযোগ-১০: ২ জুন সকাল ১০টার দিকে সাঈদীর নেতৃত্বে সশস্ত্র দল উমেদপুর গ্রামের হিন্দুপাড়ার ২৫টি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। সাঈদীর ইন্ধনে বিসাবালী নামের একজনকে নারকেলগাছের সঙ্গে বেঁধে গুলি করে হত্যা করা হয়।

অভিযোগ-১১: ২ জুন সাঈদী টেংরাখালী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুবুল আলম হাওলাদারের বাড়িতে পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে যান। সেখানে তাঁর বড় ভাই আবদুল মজিদ হাওলাদারকে ধরে নির্যাতন করা হয়। এরপর সাঈদী নগদ টাকা লুট ও মূল্যবান জিনিস নিয়ে যান। পরে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ-১২: সাঈদীর নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি সশস্ত্র দল পারেরহাট বাজারের ১৪ জন হিন্দুকে ধরে দড়ি দিয়ে বেঁধে পাকিস্তানি সেনাদের কাছে নিয়ে যায়।

পরে তাঁদের গুলি করে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। অভিযোগ-১৩: মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার দুই-তিন মাস পর সাঈদীর নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনারা নলবুনিয়া গ্রামের আজহার আলীর বাড়িতে যায়। সেখানে আজহার আলী ও তাঁর ছেলে সাহেব আলীকে ধরে নির্যাতন করা হয়। সাহেব আলীকে পিরোজপুরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। অভিযোগ-১৪: মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে সাঈদীর নেতৃত্বে ৫০-৬০ জনের একটি রাজাকার বাহিনী হোগলাবুনিয়ার হিন্দুপাড়ায় যায়।

এখানে একজনকে (নাম প্রকাশ করা হলো না) ধর্ষণ করা হয়। পরে এই হিন্দুপাড়ার ঘরে আগুন দেওয়া হয়। অভিযোগ-১৫: মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে সাঈদীর নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের রাজাকার দল হোগলাবুনিয়া গ্রামের ১০ জন হিন্দু নাগরিককে ধরে। পাকিস্তানি সেনারা এঁদের সবাইকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। অভিযোগ-১৬: সাঈদীর নেতৃত্বে ১০-১২ জনের রাজাকার দল পারেরহাট বন্দরের গৌরাঙ্গ সাহার বাড়ি থেকে তাঁর তিন বোনকে ধরে পাকিস্তানি সেনাক্যাম্পে নিয়ে যায়।

সেখানে তিন দিন ধরে ধর্ষণ করে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ-১৭: সাঈদী ও তাঁর নেতৃত্বের রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা পারেরহাটের বিপ্লব সাহার মেয়েকে তাঁর বাড়িতে আটকে নিয়মিত ধর্ষণ করে। অভিযোগ-১৮: ভাগীরথী পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে কাজ করতেন। সাঈদী এক দিন খবর দেন, ভাগীরথী মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়মিত নানা খবরাখবর দেন। পাকিস্তানি সেনারা তাঁকে হত্যা করে লাশ বলেশ্বর নদে ফেলে দেয়।

অভিযোগ-১৯: সাঈদী প্রভাব খাটিয়ে পারেরহাটসহ অন্য গ্রামের ১০০-১৫০ জন হিন্দুকে ইসলাম ধর্মে রূপান্তর করে। তাঁদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে বাধ্য করা হতো। অভিযোগ-২০: নভেম্বরের শেষ দিকে সাঈদী খবর পান, সাধারণ মানুষ ভারতে পালিয়ে যাচ্ছে। তাঁর নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি সশস্ত্র দল পরিকল্পিতভাবে ইন্দুরকানি গ্রামের তালুকদার বাড়িতে আক্রমণ চালায়। ৮৫ জন ব্যক্তিকে আটক করে তাঁদের কাছ থেকে মালামাল কেড়ে নেওয়া হয়।

১০-১২ জন বাদ দিয়ে বাকিদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। Click This Link কবে এই রাজাকারার নির্বংশ হবে এই বাংলার মাটি থেকে। তারি অপেক্ষায় ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।