গুলশান-বনানীর অভিজাত এলাকায় প্রকাশ্য মাদক বিক্রি হচ্ছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ারাই মাদকের ক্রেতা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় এসব হলেও তারা এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সর্বনাশা মাদকের নীলনকশায় আমার সন্তানের জীবন আজ বিপন্ন। এ কথা বলেই কেঁদে ফেললেন বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মেজর জসীম উদ্দীন (অব.)।
গতকাল রোববার দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত মতবিনিময় সভায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ব্যবসায়ী নেতারা এভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর উদ্দেশে মেজর জসীম উদ্দীন (অব.) বলেন, মাদকের সর্বনাশা দর্শনে আমার মতো হাজার হাজার হতভাগা বাবা-মা আজ কাঁদছে। মাদকের হাত থেকে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করুন। আমাদের বাঁচান।
সকাল
সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী
দীর্ঘ ওই অনুষ্ঠানে ৪১ জন ব্যবসায়ী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর বক্তব্য রাখেন। আলোচনায় মাদক, যানজন, পরিবহনে চাঁদাবাজি, গাড়ি ছিনতাই, সীমান্তে চোরাচালান, নিম্ন ও ভেজাল দ্রব্যে ফরমালিন, নদীপথে জলদস্যুতাসহ দেশের নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন ব্যবসায়ীরা।
তিনি অভিযোগ করেন, আমার নিজের দুটি ট্রাক ছিনতাই হয়ে গেছে। ৫০০ পিস মাল ফেরত পেলেও পুলিশ আমার ট্রাক দুটি এখনও আটকে রেখেছে। মাদক, চাঁদাবাজি, হাইওয়েতে ছিনতাইসহ ব্যবসায়ীদের দাবিগুলো মেটাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সুনির্দিষ্ট কমিটমেন্ট চান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, মাদক নামক মহামারী আমাদের প্রতিটি পরিবারে ঢুকেছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন হতে হবে। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বলেন,দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের কারণে ব্যবসায় সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তিনি। শিল্পপুলিশ স্থাপন করেছি।
তবে দেশকে অস্থিতিশীল করতে জামায়াত-বিএনপি যড়যন্ত্র করছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা এখন স্বাভাবিক। তবে পরিপূর্ণভাবে আমরা সবকিছু নিয়ন্ত্রণে আনতে পারিনি। যানজট, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ব্যবসীদের অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনীকে আমরা এখনও পরিশুদ্ধ করতে পারিনি। কিছু কিছু দোষ তাদের রয়েছে।
মতবিনিময় সভায় এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ১৫ দফা দাবি পেশ করা হয়। এর মধ্যে পুলিশ বাহিনীকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করা, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পুলিশের তদারকি বাড়ানো, দেশের বিভিন্ন মার্কেটের সামনে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা স্থাপন, মাদক ব্যবসা বন্ধে পুলিশফাঁড়ি বাড়ানো, মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো, জলসীমায় নিরাপত্তা জোরদার, সীমান্তে চোরাচালান রোধে কার্যকর ব্যবস্থা, অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে মোবাইল কোর্টের সংখ্যা বাড়ানো, জনগণের সঙ্গে পুলিশের বন্ধত্বপূর্ণ সম্পর্ক বৃদ্ধি করা অন্যতম। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।