আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১১ বছরে পায়ে হেঁটে বিশ্ব ভ্রমণ

১১ বছর হেঁটে বিশ্ব প্রদক্ষিণ করে দেশে ফিরেছেন কানাডার মন্ট্রিলের জঁ বেলিভো। বয়স তখন ৪৫। বেশ অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। তার ভাষ্য, মনে হচ্ছিল, আর বেঁচে থেকে কী লাভ? সবে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়েছে। দুই সন্তান থাকে মায়ের কাছে।

নিজের ছোট একটা ব্যবসা ছিল, তাও লাটে উঠেছে। তাই পিছুটান নেই। ২০০০ সালের ১৮ আগস্ট নিজের ৪৫তম জন্মদিনেই তিনি হাঁটতে বেরিয়ে পড়লেন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ থেকে পায়ে হেঁটে গোটাবিশ্ব প্রদক্ষিণ করে আবার নিজের শহর মন্ট্রিলে ফেরার গোঁ ধরে বেরিয়ে পড়লেন তিনি। সঙ্গে ৩ চাকার একটা ট্রলি সুটকেস।

তার মধ্যে স্লিপিং ব্যাগ, কিছু জামা-কাপড়, প্রাথমিক চিকিত্সার কিছু সরঞ্জাম, সঙ্গে মাত্র ৪ হাজার কানাডীয় ডলার। কোথায় রাত কাটাবেন, কখন কী খাবেন, কিছুই জানা নেই। শুধু হেঁটে চলেছেন। রওনা হওয়ার পর প্রায় ১১ বছর কেটে গেছে। সত্যি বিশ্ব প্রদক্ষিণ করে তিনি মন্ট্রিলের কাছাকাছি এসে পড়েছেন।

এবার সামান্য যে পথ বাকি রয়েছে, তা অতিক্রম করে ১৬ অক্টোবর তার আবার নিজের শহরে পৌঁছনোর কথা। ৬৪টি দেশ ঘুরে প্রায় ৭৫ হাজার কিলোমিটার অতিক্রম করে তিনি সম্ভবত দীর্ঘতম পদযাত্রার রেকর্ড গড়তে চলেছেন। এতদিন পর কার কাছে ফিরবেন বেলিভো? তার জন্য অপেক্ষা করছেন দীর্ঘদিনের বান্ধবী লুস আর্শাম্বো। তিনি ও তার দুই সন্তানও বেলিভোকে বাধা দেননি। ঘরে থেকেই তিনি বেলিভোর এ অভিযানে মদত দিয়ে চলেছেন।

তৈরি করেছেন বিশেষ ওয়েবসাইট, যার ঠিকানা ‘ওয়াক ডট অর্গ’। তবে ‘ওয়াক’ শব্দে একটার বদলে তিনটে ডব্লিউ রয়েছে। অসাধারণ এ পদযাত্রাকে কাজে লাগিয়ে শান্তি ও অহিংসার বাণী প্রচার করার জন্য বেলিভোকে উত্সাহ দিয়েছেন তিনি। জাতিসংঘের শিশু কল্যাণ সংস্থা ইউনেস্কোর এক ঘোষণাই হয়ে উঠল এ পদযাত্রার মূলমন্ত্র। অবসাদগ্রস্ত এক মানুষের অভিযান যে এত অর্থবহ হয়ে উঠতে পারে, বেলিভো তা ভাবতে পারেননি।

এ ১১ বছর কীভাবে কাটালেন বেলিভো? কীভাবে তিনি অক্ষত অবস্থায় দেশে ফিরতে পারলেন? আশ্চর্যের বিষয়, যাত্রাপথে তেমন কোনো অপ্রিয় ঘটনা ঘটেনি। শুধু আলজেরিয়ায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, ইথিওপিয়ায় অকারণে তাকে একরাত হাজতবাস করতে হয়েছিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই মাতাল তার ওপর চড়াও হয়েছিল। তিনি মেক্সিকোয় ৯ দিনের জন্য এক নারীর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন, সুদানে থাকতে পাগড়ি পরে লম্বা দাড়ি রেখেছিলেন। আফ্রিকায় পোকামাকড়, দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুর ও চীনে সাপ খেয়েছেন। ইথিওপিয়ায় থাকতে বেলিভোর একবার মনে হয়েছিল, মাঝপথে পদযাত্রা ছেড়ে দেশে ফিরে যাবেন।

কিন্তু বান্ধবীর উত্সাহে তিনি হাল ছাড়েননি। সূত্র : ডিডব্লিউ  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।