আমি কার পক্ষে নই, আমি সেই পক্ষে, যে পক্ষে ঘুমিয়ে আছে ৩০ লক্ষ শহীদ মাস্টার'দা সূর্য সেন কত বড় দেশপ্রেমিক বিপ্লবী যুদ্ধা ছিলেন , কত বড় মহৎ চরিত্রের ও হৃদয়বৃত্তির অধিকারি ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামের আদর্শে কত বড় দিঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তার রচনার দু এক টি লাইনে ফুটে উঠেছে। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন,এইসব অসাধারন চরিত্রের , মাস্টারদা প্রীতিলতাদের ভুলে গেলে কোনও জাতি দাড়াতে পারে? কোনও দেশ দাড়ায়? অথচ আমরা তাদের ভুলে যাচ্ছি! যে দেশের জন্য তারা শহীদ হয়েছিল সেই দেশের আজ অবস্থা কি? কি স্বপ্ন দেখেছিল? আজ কি ঘটছে? আমরা নিজেদের কোথায় এনে দাড় করিয়েছি? আজ নিতি নৈতিকতাহিন সর্বাত্মক অন্ধকারে নিমজ্জিত এই দেশের দিকে তাকালে কি মনে হয়, একদিন এই দেশেই এই ধরনের উজ্জ্বল চরিত্ররা মনুষ্যত্যের উজ্জ্বল শিখা জ্বালিয়েছেন! সাম্রাজ্জবাদি শাসনে শৃঙ্খলিত ভারতবর্ষে যদি এটা সম্ভব হয়ে থাকে, তাহলে আজ স্বাধীন দেশে চরিত্রের ভয়াবহ সংকট কেন? এই সংকটের উত্তরনের কি কোনও পথ নেই? তারা যে স্বপ্ন দেখেছিল তা বাস্তবে কোনও দিন সম্ভব হিবে না? যারা জীবনের জন্য জীবন দিয়ে গেছে তাদেরকে কি আমরা এত সহজে ভুলে যাব? প্রিতিলতার আত্মদানের পনের দিন পরে মাস্টারদা বলেছেন... ''আজ মনে পড়ছে, কত সুন্দর অমূল্য রত্নরাজি দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবনের সুখ,সম্পদ,ঐশ্বর্য সব তুচ্ছ করে হাসতে হাসতে মাতৃযজ্ঞে নিজেদের আহুতি দিয়ে চলে গেছে,একটু দ্বিধা করেনি,একটু সংকচ করেনি,আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে স্বেচ্ছায় মরনের কোলে ঝাঁপিয়ে পড়েছে।.. কত স্নেহময়ি জননীর বুক শূন্য করে তার সোনার পুতলিকে স্বাধীনতার বেদিমূলে আহুতি দিয়েছি--- কতজন অন্তরিনে,কারাগারে,নির্বাসনে,দ্বীপান্তরে পাঠিয়েছি,ঘরে ঘরে হাহাকারের সৃষ্টি করেছি----- দেশের উপর গভর্নমেন্টের অত্যাচার নির্যাতন টেনে এনেছি। এ সবের দায়িত্ব থেকে নিজেকে বাদ দেই কি করে?... আমি কি অন্যায় করে যাচ্ছি?...... এ বিশ্বাস এখনও আমার অটুট আছে যে,আমি অন্যায় করছি না ,পাপ করছি না,দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করতে গিয়ে আমার দেশের যে হাহাকার ,অত্যাচারের সৃষ্টি হয়েছে,এর চেয়ে আরও অনেক বেশি--- সব দেশেই তাই হয়েছে। আমার আদর্শের উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস রেখেই আমার পথ আমি চলেছি --- এখনও কোনও দ্বিধা আসে নি। এত মায়ের চোখের জল ,এত বাপের বুকফাটা কান্না,এত ভাইবোনদের হৃদয়ভেদী দীর্ঘশ্বাস, এ সবের কারন হয়েছি বলেই আমি কি অন্যায় করেছি?...... কিন্তু আমার মনে হয় আমি ঠিক পথে চলেছি। তাই চারদিকে শ্মশান সৃষ্টি হচ্ছে দেখে মনে ব্যাথা পেয়েও আমি কান্নাকাটি বুকে চেপে ধরে আছি ---- এই আশায় যে,এ সকল পবিত্র পবিত্র শ্মশান স্তূপের উপরে একদিন স্বাধীনতার সৌধ নির্মিত হবে।'' লাল সালাম বিপ্লবী মাস্টার’দা সূর্যসেন
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।