আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘সেই হত্যাযজ্ঞের তুলনা কেবল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ’

ট্রাইব্যুনাল-১ এর প্রধান বিচারক এ টি এম ফজলে কবীর সোমবার সকাল ১১টা ৮ মিনিটে বহু প্রতীক্ষিত এই রায় ঘোষণা শুরু করেন।
রায়ের ভূমিকায় তিনি বলেন, গোলাম আযমের মামলাটি একটি ব্যাতিক্রমী মামলা। অপরাধের সময় গোলাম আযম নিজে উপস্থিত না থাকলেও তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের পেছনের মূল ব্যক্তি ও নির্দেশদাতা হিসাবে।
এরপর ২৪৩ পৃষ্ঠা রায়ের ৭৫ পৃষ্ঠার সংক্ষিপ্তসার পড়া শুরু করেন বিচারপতি আনোয়ার-উল হক। প্রথমেই মামলার শুনানির সময় দুই পক্ষের যুক্তিগুলো তুলে ধরেন তিনি।

একাত্তরে দেশের বিভিন্ন স্থানে আসলেই মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটেছিল কি না- এরপর সে বিষয়ে আলোচনা শুরু করেন তিনি।
রায়ের সংক্ষিপ্তসারে বিচারক বলেন, সেই সময়ে দেশ দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। একদিকে ছিল আওয়অমী লীগ ও অন্যান্য স্বাধীনতাকামী সংগঠন এবং ধর্মীয়ভাবে হিন্দু সম্প্রদায়।
“অন্যদিকে ছিল কিছু  ধর্মভিত্তিক রাজনিতক দলে এবং বিহারীরা। এসব দলের মধ্যে বিশেষ করে জামায়াতে ইসলমী ব্যাপক বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতা চালায়।


রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, “একাত্তরে ম্যাসিভ জেনোসাইড হয়েছে যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বেধর পর সবচেয়ে বড় হত্যাযজ্ঞ।
এটাকে কেবল নাৎসি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেই তুলনা করা যায়।   আর সেই হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তান ও তাদের এ দেশীয় দোসররা।
এরপর বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন রায়ের দ্বিতীয় অংশ পড়া শুরু করেন।
মামলার আসামি গোলাম আযম কাঠগড়াতেই উপস্থতি রয়েছেন, যাকে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের পেছনের মূল ব্যক্তি হিসাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

  
এর আগে সকাল ১০টার দিকে জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার ইমানুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কামাল তালুকদারকে জানান, সোমবার সকাল ১০টায় গোলাম আযমকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নিয়ে যাওয়া হয়।
১০টা ৫ মিনিটে একটি অ্যাম্বুলন্সে করে গোলাম আযমকে ট্রাইব্যুনালে ঢুকতে দেখেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক সুলাইমান নিলয়।  
সাদা পাঞ্জাবি পায়জামা ও টুপি পরিহিত গোলাম আযমকে একটি হুইল চেয়ারে বসিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ট্রাইব্যুনালের ভেতরে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের পরিকল্পনা, ষড়যন্ত্র, উস্কানি, পাকিস্তানি সেনাদের সাহায্য করা এবং হত্যা-নির্যাতনে বাধা না দেওয়ার ৫ ধরনের অভিযোগ রয়েছে জামায়াতে ইসলামীর মুক্তিযুদ্ধকালীন আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে।


এদিকে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে হাইকোর্ট সংলগ্ন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চারপাশে বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সোমবার সকালে ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার চারটি সড়কের প্রবেশ পথে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়েছে বিপুল সংখ্যক র্যাব।
শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, বঙ্গবাজার এলাকা, সচিবালয়ের প্রবেশপথ ও মৎস্যভবন সংলগ্ন রাস্তার দুইপাশে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের আশপাশের এলাকায় সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন সাদা পোশাকের গোয়েন্দারাও।


গোলাম আযমের বিচারের প্রতিবাদে আগের রায়ের দিনগুলোর মতো এদিনও সারা দেশে হরতাল করছে  তার দল জামায়াতে ইসলামী। সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত মিছিল, গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা ও বোমাবাজির খবর পাওয়া গেছে।  

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।