Never argue with idiots. They bring you down to their level and then beat you with experience
থ্রিজি প্রযুক্তি কি?
থ্রিজি প্রযুক্তিকে বলা হয় তৃতীয় প্রজন্মের তারবিহীন প্রযুক্তি। দ্রুত গতির তথ্য আদান প্রদান ক্ষমতা, উন্নত মাল্টিমিডিয়া সুবিধা, বিশ্বব্যপী রোমিং সুবিধা নিয়ে এই প্রযুক্তি বর্তমানে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন সংস্থা বা আইটিইউ অনুযায়ী থ্রিজি প্রযুক্তি হচ্ছে একটি মোবাইল প্রযুক্তি যাতে জিএসএম, ইডিজিই, ইউএমটিএস এবং সিডিএমএ-২০০০ প্রযুক্তি অন্তর্ভূক্ত৷ থ্রিজি’র পূর্বে ব্যাবহৃত প্রযুক্তি ডব্লিউ-সি ডি এম এ (W-CDMA), ডব্লিউ এল এ এন (WLAN) এবং সেলুলার রেডিনও ও এরকম অন্যান্য আরো প্রযুক্তির সম্মিলিত সংস্করণ হলো থ্রিজি প্রযুক্তি। আর এই সব কিছুর সম্মিলনে উচ্চ তথ্য আদান-প্রদান ক্ষমতা, অডিও এবং ভিডিও হিসেবে তথ্য আদান-প্রদান সুবিধা, ভিডিও কনফারেন্স সামর্থন, উচ্চগতি সম্পন্ন ওয়েব এবং ওয়াপ ইন্টারনেট ব্রাউজিং, আইপিটিভি (ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিভি দেখা) ইত্যাদি সম্ভব। আর এই প্রযুক্তির সাহায্যে ডিইসিটি এবং ওয়াইম্যাক্স সার্ভিস, ভয়েস কল, ভিডিও কল এবং ওয়্যারলেস ডাটা সবই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আদান-প্রদান করা যায়৷ মূলত মোবাইল ফোনভিত্তিক এই প্রযুক্তিটি একই সাথে ভয়েস সার্ভিস এবং উচ্চগতি সম্পন্ন ডাটা সার্ভিস (১৪ এমবিপিএস পর্যন্ত ডাউনলিংক এবং ৫.৮ এমবিপিএস পর্যন্ত আপলিংক) সাপোর্ট করে৷ থ্রিজি প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইলে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) ডিভাইসের মাধ্যমে এবং স্যাটেলাইটের সাহায্যে একজন ব্যবহারকারীর অবস্থান জানা সম্ভব৷
শুরুর গল্প
থ্রিজি প্রযুক্তির সাথে বিশ্ববাসীকে প্রথম পরিচয় করিয়ে দেয় জাপান।
এই মোবাইল প্রযুক্তি জাপানে ১ অক্টোবর ২০০১ সালে বাণিজ্যিকভাবে প্রথম বাজারে নিয়ে আসে এনটিটি ডোকোমো নামক মোবাইল অপারেটর কোম্পানি৷ বাণিজ্যিকভাবে ২০০৩ সালে জাপানী ভেরিজো ওয়্যারলেস অপারেটর থ্রিজি প্রযুক্তি সেবা নিয়ে বাজারে আসে৷
এই প্রযুক্তির সুবিধা
থ্রিজি প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি সাধারণ থ্রিজি সমর্থন করে এমন মোবাইলসেটের মাধ্যমেই অনেক কাজ সম্পাদন করা যায়৷ থ্রিজি প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় সুবিধা হল, এই প্রযুক্তি কার্যকর থাকলে মোবাইল হ্যান্ডসেটের মাধ্যমে ভয়েস সুবিধার পাশাপাশি ব্যবহারকারী ভৌগোলিকভাবে যে অবস্থানেই থাকুক না কেন উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে৷এর মাধ্যমে গ্রামের একজন মানুষ সারাবিশ্বের সাথে দ্রুত যোগাযোগ এবং সবধরনের তথ্য অতি সহজেই আদান-প্রদান করতে পারে৷ সাধারণ হিসাব অনুযায়ী দ্রুত গতিতে চলমান থ্রিজি প্রযুক্তি ব্যবহৃত যন্ত্রে তথ্য আদান প্রদান ক্ষমতা ১২৮ থেকে ১৪৪ কিলোবাইট পার সেকেন্ড, কম গতিতে চলমান যন্ত্রে তা ৩৮৪ কিলোবাইট পার সেকেন্ড এবং স্থির যন্ত্রে গতি ২ মেগাবাইট পার সেকেন্ড। একজন ব্যবহারকারী থ্রিজি সাপোর্টেট মোবাইল সেটের সাহায্যে ভিডিও কনফারেন্স করতে পারে৷ বিনোদনের ক্ষেত্রে এটি অদ্বিতীয়। এর মাধ্যমে ভিডিও ক্যামেরা, ইমেজ এডিটিং, ব্লগিং, ভিডিও কল, মুভি ট্রান্সফার সবই সম্ভব৷ বাণিজ্যিক কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রেও থ্রিজি অতুলনীয়৷ এর মাধ্যমে একজন বাণিজ্যিক কর্মকর্তা যেকোন জায়গায় বসে এমএস ওয়ার্ড, এক্সল, পাওয়ার পয়েন্ট, পিডিএফ ফাইল এবং অন্যান্য ফরমেটের ফাইল পড়ে এবং সংশোধন করে আপলোড ডাউনলোডের মাধ্যমে তার ব্যবসায়িক কাজ সম্পন্ন করতে পারেন৷ থ্রিজি প্রযুক্তি কার্যকর থাকলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে টেলি-মেডিসিন সার্ভিস আরো সহজ ও কার্যকরভাবে প্রদান করা সম্ভব৷ এক কথায় থ্রিজি প্রযুক্তির সার্ভিস যখন আমরা ব্যবহার করতে পারব তখনই কেবল আমরা এর পূর্ণাঙ্গ সুবিধা উপলব্ধি করতে পারব।
থ্রিজি ব্যাবহারের ব্যয়
বিশ্বব্যাপী এই থ্রিজি প্রযুক্তিটি খুব সাশ্রয়ী ব্যবস্থা নয় কিন্তু প্রযুক্তিটির সঠিকভাবে পরিকল্পিত ব্যবহার হলে তা সাধারণের নাগালের মধ্যে আনা সম্ভব। থ্রিজি প্রযুক্তিতে তথ্যগুলো সাধারণত ইন্টারনেটের মতো প্যাকেট আকারে চলাচল করে।
থ্রিজি প্রযুক্তির ব্যয় নির্ধারণ করা হয় সাধারণত ব্যবহারকারী কত কিলোবাইট বা মেগাবাইট তথ্য (প্যাকেট আকারে) আদান-প্রদান করেছে তার উপর। অর্থাৎ ব্যবহারকারী তথ্য আদান-প্রদান করতে (যেমন কথা বলা/ইন্টারনেট ব্রাউজ/ইন্টারনেট টিভি দেখা) যে পরিমাণ কিলোবাইট বা মেগাবাইট খরচ করেছে তার উপর নির্ধারণ করা হয় তার খরচের পরিমাণ। যেমন এর খরচের একটি উদারহণ- ব্যবহারকারীকে এক গিগাবাইট (১০২৪ মেগাবাইট) তথ্য একটি প্যাকেজ আকারে ব্যবহার করতে দেয়া হল, যার মূল্য সমান্তরাল অর্থাৎ নির্দিষ্ট এবং এর পরবর্তী ব্যবহার খরচ মিনিট হিসেবে কত মেগাবাইট ব্যবহার করা হল তার উপর নিধার্রণ করা।
প্রযুক্তি যেমন আশীর্বাদ আছে তেমনি অভিশাপও আছে৷ আশীর্বাদ না অভিশাপ তা নির্ভর করে ব্যবহারের উপর৷ বর্তমানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা ও হয়রানির খবরাখবর আমরা পত্রপত্রিকায় দেখতে পাই৷ থ্রিজি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিডিও কল করা সম্ভব যেখানে কলার এবং রিসিভার দুইজনই তাদের অবস্থান ও কর্মকান্ড দেখতে পাবে৷ আরএর জন্য আমাদেরকে অবশ্যই এই প্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।