এটা আমার জন্য অনেক সুখকর যে, আমি এখন ব্লগ ও ফেইসবুক থেকে নিজেকে আসক্তিমুক্ত রাখতে পারছি। পরিবার ও পেশাগত জীবনের কর্মব্যস্ততা অনেক আনন্দের। ... ব্লগে মনোযোগ দিতে পারছি না; লিখবার ধৈর্য্য নেই, পড়তে বিরক্ত লাগে।
৯ সেপ্টেম্বর ১১ টার দিকে আর্জেন্টিনায় বাইক চালনার সময় পেছন দিক থেকে একটি প্রাইভেট কার ধাক্কা দেয় জাহিদকে।
বিস্তারিত : আমার ফেইসবুক
আর দেখুন, একটা মৃত মানুষের ফেইসবুক, যা কেবল মন্তব্য গ্রহণই করবে, কোনোদিন তার জবাব দেবে না।
জাহিদ খান
শাহনাজ মনে করিয়ে দিল- ২০০৯ সনে আমরা সপরিবারে শাহনাজের বাসা থেকে শাহনাজ সহ একটা ভাড়া করা মাইক্রোতে করে সন্ধ্যার দিকে বইমেলায় আসছিলাম। নীল ক্ষেতের মোড়ে জাহিদ এসে আমাদের গাড়িতে ওঠে। পরে একসাথে আমরা বইমেলায় যাই। ওখান থেকে শাহনাজ চলে যায় ওর বাসায়। আমরা কুমিল্লায় ফেরার পথে জাহিদ আমাদের সাথে সায়েদাবাদ পর্যন্ত আসে।
ঐদিন রাতে ওর সাথে মোবাইলে অনেক কোথা হয়। 'স্নান' নামক কোনো এক কবিতা আমার কাছে আছে কিনা, ওটা কার কবিতা আমার কাছে জানতে চাইলে ব্লগ থেকে জয় গোস্মামীর 'স্নান' বের করে ওকে শোনাই, এবং ওর মেইলে পাঠাই। ও খুব খুশী হয়। ও তার আগের বছর বিয়ে করেছিল। ভাবী ঢাকা ভার্সিটির মেয়ে।
পরিচয় হয় মোবাইলে। ভাবীর জন্য আমাদের কোনো সান্ত্বনা নেই- নেই আমাদের জন্যও কোনো সান্ত্বনা। হায় !!!!
আমরা দোহারের মালিকান্দা হাইস্কুলে লেখাপড়া করেছি ১৯৮৪ সন পর্যন্ত। জাহিদ তোলারাম কলেজে লেখাপড়া করেছে। পরে তোলারাম কলেজে বা স্কুলে কয়েক বছর শিক্ষকতাও করেছিল।
ফেইস বুকে আমার ৩ নং কমেন্টে সামান্য বর্ণনা আছে জাহিদের এক্সিডেন্টের। ফেইসবুক ফ্রেন্ড নিরুদ্দেশ যাত্রা আমাকে চ্যাট মেসেজে বলছেন :
উনার কোনো ভুল ছিল না।
ফ্লাইওভার এক্সিডেন্ট হয়।
পেছন থেকে একটা প্রাইভেট কার ধাক্কা মারে।
ড্রাইভার মাতাল ছিল।
যেদিন মারা গেছে তার ১ ঘণ্টা আগে আমার সাথে কথা হয়।
আমাকে বলেছিল আমি বাসায় আসতেছি।
তুমি তাড়াতাড়ি আসো।
১২টার দিকে কল করি। উনি কল রিসিভ করেন না।
২টার দিকে পুলিশ আমার মোবাইলে কল করে জাহিদ ভাইয়ের নাম্বার থেকে।
জাহিদুল ইসলাম তোমার কী হয়? উনি এক্সিডেন্ট করেছে। হসপিটালে আছে।
আমি খোঁজ নিলাম কোথায় আছে।
সকালে আবার পুলিশের ফোন যে, এই হসপিটালে আছে, উনি মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহে ওয়া....)
কেউ বিশ্বাশ করতে পারতেছিল না।
জাহিদের কাছ থেকে আমি গানকে ভালোবাসতে শিখেছিলাম। সেই ছোটোবেলাতেই সাহিত্যে জাহিদের দখল দেখে আমি সাহিত্যের প্রতি ঝুঁকে পড়েছিলাম। ওর অন্তর্ভুবন ছিল সুবিস্তৃত।
এমন নিষ্ঠুরভাবে জাহিদ চলে যাবে তা কি জানতাম? ৯ম শ্রেণিতে পড়বার সময় একদিন আচমকা জাহিদকে বলে বসি, আমি একটা উপন্যাস লিখবো, তার নায়কের নাম হবে জাহিদ। এটা ১৯৯৮২ সনের কথা হয়তো।
তা ভুলে গিয়েছিলাম। ২০০৩ সনে আমার প্রথম উপন্যাস বের হয়। বের হবার পর ওর সাথে অনেক দিন বিরতির পর দেখা। হঠাৎ মনে পড়ে- একেবারে কাকতালীয়ভাবে, আমার উপন্যাসের নায়কের নাম জাহিদুল ইসলাম। হায়, কী নিষ্ঠুর ইতিহাস!!
২০০৪ সনে আমার ২য় উপন্যাস 'খ্যাতির লাগিয়া' বের হয়, সেখানেও জাহিদ স্ব-নামে, স্ববৈশিষ্ট্যে।
পুরো বইয়ে জাহিদের সদর্প বিচরণ। কেউ যদি জাহিদকে জানতে চান- পুরো কাহিনি জুড়েই জাহিদ আছে। ১ম পর্বেই দেখুন জাহিদের বৈশিষ্ট্যগুলো।
তার পরের বছর 'অন্তরবাসিনী বের হয়। সেখানেও জাহিদ।
কেউ পড়তে চাইলে এখান থেকে লিংক ধরে পড়তে পারেন। দ্রুত লিখছি বলে সুনির্দিষ্ট লিংক দিতে পারছি না।
'অন্তরবাসিনী'তে জাহিদ।
অন্তরবাসিনীতে জাহিদ উজ্জ্বলভাবে।
এখানে লিখছি পরে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।