আমি একজন ফাউ ইঞ্জিনিয়ার.। । । সামনে আছে এক বাটি ধোঁয়া ওঠা গোশতের ভুনা, আর এক বাটি নিরামিষ। অবশ্যই সবার আগে হাত যাবে গোশতের বাটির দিকে।
এত সুস্বাদু গোশতের ভুনা রেখে কে খাবে রসহীন নিরামিষ? সবার মনে এই প্রশ্নটা আসাটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু যারা নিরামিষের বাটিটি বেছে নিবে, তারা ওই গোশত ভুনা প্রেমীদের চেয়ে লাভবান হবে অনেক বেশি। কিন্তু, কিভাবে এবং কেন হবেন নিরামিষভোজী?
আসুন জেনে নেয়া যাক বিশেষজ্ঞরা এই প্রশ্নের উত্তরে কি বলেন-
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অন্তত এক সপ্তাহের জন্যও যদি নিরামিষভোজী হওয়া যায়, তাহলে স্বাস্থ্যের যে লাভ হবে তা অন্য কোনো খাবার কিংবা ওষুধে হবে না।
ডি-টক্সিফাইড: একজন নিরামিষভোজী, যাদের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন যথেষ্ট ফাইবার সম্পন্ন সবজি যেমন-লাউ, মিষ্টি কুমড়া, সবুজ শাক, বাধাকপি ইত্যাদি থাকে তাদের দেহের ক্ষতিকর দেহকোষ গুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এই সবজিগুলো দেহের সব বিষাক্ত উপাদান বাইরে বের করে দেয়।
ডিম, মাছ এবং মাংসে এই ফাইবার কম থাকে বলে, এগুলো দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরণে খুব বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে না।
হাড়কে শক্ত করা: মাংসভোজী ব্যক্তিদের নিয়মিত খাদ্য তালিকায় সবজি খুব সামন্য পরিমাণে থাকে। কিন্তু মাংসে আছে প্রচুর প্রোটিন এবং সবজিতে আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম হাড়কে শক্ত করে। কিন্তু দেহে প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে গেলে এবং সেই তুলনায় ক্যালসিয়াম কমে গেলে, ক্যালসিয়াম তার কাজ করতে পারে না।
যার ফলে দেহের অতিরিক্ত প্রোটিন শুষে নেয় ক্যালসিয়ামকে। যা হাড়ের ক্ষতি করে। তাই পুরোপুরি নিরামিষভোজী হওয়া না গেলেও, অন্তত দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় গোশত এবং সবজির একটা আদর্শ ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
কার্বোহাইড্রেট ঘাটতিপূরণ: একজন মাংসভোজীর খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি থাকে। যা আমাদের কেটসিস’এ আক্রান্ত করতে পারে।
কেটসিস হলো দেহে অতিরিক্ত চর্বি বেড়ে যাওয়ার ফলে শক্তির ঘাটতি এবং ক্লান্তির সৃষ্টি হওয়া। কিন্তু, খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ সবজির উপস্থিতি এই কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
পরিপাক প্রক্রিয়া সহজ করা: সবজিতে এমন সব উপাদান আছে যা দেহের পরিপাক ক্রিয়াকে সহজ করে। কিন্তু গোশত এবং মাছে প্রচুর পরিমাণে চর্বি এবং তেল থাকায় তা আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলে।
সুন্দর ত্বক: বিট, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া এবং করলা নিয়মিত খেলে ত্বকের বিভিন্ন দাগ দূর হয়ে যায়।
অন্যদিকে, পেয়ারা, আপেল, নাশপাতি ত্বকে এনে দেয় আকর্ষনীয় উজ্জ্বলতা।
ওজন নিয়ন্ত্রণ: ওজন বাড়তে না দেয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো, গোশত না খাওয়া। আর ওজন কমানো এবং নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো নিরামিষভোজী হয়ে যাওয়া। গমের রুটি, শিম, মটরসুঁটি, বাদাম এবং বিভিন্ন রঙিন ফল দেহের কোলেস্টেরেলের মাত্রা কমায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্থূলতা থেকে মুক্তি দেয়।
স্বস্তিতে থাকে দাঁত: আমাদের পেষণ দাঁতের কাজ হলো খাবার চিবিয়ে তা হজমের জন্য সালিভায় পাঠানো।
কিন্তু পেষণ দাঁত দিয়ে পেষণ বা চিবানোর কাজ না করে যখন টেনে গোশত ছেড়ার কাজে ব্যবহার করা হয়, তা দাঁতে এক ধরনের চাপের সৃষ্টি করে। অন্যদিকে সালিভাতে গিয়েও হজম প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি করে জটিলতার। কিন্তু সবজি সেদিক থেকে দাঁত এবং সালিভা, দুটোকেই স্বস্তি দেয়।
ফিটোনিউট্রিয়েন্টস: ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, কিডনির রোগ, হৃদরোগ এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করা যায় পর্যাপ্ত পরিমাণের ফিটোনিউট্রিয়েন্টস গ্রহণের মাধ্যমে। এই ফিটোনিউট্রিয়েন্টস হলো এক ধরনের স্বাস্থ্যকরী উপাদান যা শুধু সবুজ শাক-সবজিতেই পাওয়া যায় এবং এটি দেহে গ্লুকোজ ও রঞ্জক পদার্থের জন্য উপকারী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।