বাঁকানো চোখ, কামনার চাহনি। বক্ষ ধরিয়ে যায় মেয়েটি। চার পাশের হইচই, ঝনঝন শব্দ, যেন কানে আসে সঙ্গীতের সুর। তোলপাড় চলে হৃদয়ে। হৃৎপিণ্ডটা দ্রুত ওঠানামা করে।
এক পা-দু’পা করে সামনে এগোই। দেয়ালে চোখ রাখি, কালো পিচের দিকে তাকাই। ছেঁড়া পাতায় ধূসর লেখাপড়ার চেষ্টা করি। খচ খচ করে হেঁটে চলা যুবকের প্যান্টের দিকে তাকাই। একটা নীরব, নীল রঙ ধরে চোখে।
সে রঙ মনের গণ্ডি ছাড়িয়ে বাঁধনের পুরো রাজ্য রাঙায়। যেখানে সকাল-বিকেল বসে সুখের মেলা। সুখপাখিদের খরিদদার নেই, দু:খের পায়রা নির্বাসনে যে রাজ্য থেকে। অন্তহীন সুখ, সতত ভালোবাসার দেশ।
পথের পাশে বসা কাঁচাবাজারের চেঁচামেচি কানে ঢোকে না।
সরু রাস্তার দু’পাশে বিশাল বিশাল অট্টালিকা। এসবের ভেতর উঁচু জাতের সাহেবরা থাকে। আমরা নিচু জাতের মানুষেরা তার পাশ দিয়ে হেঁটে হেঁটে যাই। আমাদের জাত নেই, পাত নেই। ব্যক্তিত্বের বালাই নেই।
মধ্যবিত্তদের নাক ছিটকানোর অভ্যাস আছে। অপরের সুখ আর সাফল্য দেখে ঘুম হারাম করার আছে বদ অভ্যাস।
মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কাছে আসলে কিছু থাকে না। কিন্তু আমরা যারা নিুবিত্ত... কালো পিচের এ রাস্তাটা, পাথুরে অট্টালিকার শক্ত দেয়ালের নিচে লুকানো মাটিটাই আমাদের সব, আমাদের ভালোবাসা। আমরা ঝরেপড়া শুষ্ক পাতাকে ভালোবাসা দিয়ে সজীব করি, আর্দ্র স্পর্শে হাসি ফোটাই দেশের মাটির বুকে।
রিকশাগুলো শোঁ করে সামনে দিয়ে চলে যায়। আমি আনমনে হাঁটি। শূন্যলোকে ভাবনা ঘুরে, ভালোবাসা জেগে ওঠে, থেকে থেকে দোলে মনে, পাকায় প্রেমের বেণী... রাস্তার মোড়টা ঘুরতে গিয়ে চলন্ত গাড়ির ওপর পড়ি। জোরে ব্রেক কষে ড্রাইভার। গাড়ির জানালা খুলে চেঁচায়ও।
মাথা থেকে ভাবনাগুলো ঝরে পড়ে। দু’পায়ে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়াই।
পাশ দিয়ে ঠুনকো হেসে মিলিয়ে যায় আরেকটি মেয়ে। আমি পেছনে ফিরে তাকাই। চোখ পড়ে, বুক নড়ে, ফিরে আসে না।
এবার ভাবনাগুলো তাকে ঘিরে...ভালোবাসা ঘুরেফিরে...
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।