1. ট্রানজিট কি?
দুই- বা তোতধিক দেশের মধ্য দিয়ে, যানবাহন চলাচল বা মালামাল পরিবহনের জন্য আন্তর্জাতিক সড়ক পথ ব্যাবহারের প্রক্রিয়ারই ট্রানজিট ।
বিশ্বে ট্রানজিটের উদাহরণ অনেক আছে, তার মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম ট্রানজিট হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ই-রোড নেটওয়ার্ক , যা জাতিসংঘের ত্বত্তাবধানে ইকোনোমিক্স কমিশন ফর ইউরোপ নামক সংস্থার সদস্য দেশ সমূহকে যুক্ত করেছে। এমনকি এই ট্রানজিটটি মধ্য এশিয়ার কিরগিস্থান পর্যন্ত এসে পৌছেছে ইকোনোমিক্স কমিশন ফর ইউরোপ এর সদস্য হওয়ার কারণে ।
ট্রানজিটের আরো কয়েক টি উদাহরণ - প্যান-আমেরিকান নেটওয়ার্ক, আফ্রিকার ট্রান্স-আফ্রিকান নেটওয়ার্ক
এবং সর্বশেষ এশিয়ান হাইওয়ে যেটিতে বাংলাদেশ যুক্ত হতে যাচ্ছে । এ নিয়ে আরো বিস্তারিত পরে আলোচনা করা হয়েছে ।
2. ট্রানজিট, করিডোর ও ট্রানশিফমেন্ট কি ?
পণ্য চলাচলে ভৌগোলিক সহযোগিতার তিনটি রূপ রয়েছে- ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্ট এবং করিডর। এই তিন ব্যবস্থার ভিন্ন ভিন্ন তাৎপর্য রয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ এ বিষয়ে ঠিক কোন সহযোগিতায় যাচ্ছে?
ট্রানজিট বলতে নির্দিষ্ট একটি ভূমি বা জলপথ দিয়ে সুনির্দিষ্ট চুক্তি ও নিয়ম-নীতির ভিত্তিতে আন্তমরাষ্ট্রীয় যাত্রী এবং মালপত্র পরিবহন বোঝায়।
ট্রানজিট প্রশ্নে আমরা খবরের কাগজে প্রায়ই একটি শব্দ দেখি "করিডোর" নামে এবং ভারত-বাংলাদেশ ট্রানজিটকে করিডোর হিসাবে আখ্যায়িত করা হয় । তাই এবার করিডোর বিষয়ে আলাপ করা যাক –
সহজ ভাবে বলতে গেলে করিডোর হচ্ছে দুইটি দেশের মধ্যকার বিষয় যেখানে ট্রানজিট অনেক গুলোদেশ সংশ্লিষ্ট ব্যাপার – একটি দেশ তার নিজ সার্বভৌমত্বের বিচ্ছিন্ন অংশ বা দূরবর্তী অংশে যাতায়াতের সুবিধার কারনে অপর একটি সার্বভৌমত্বের স্থল-নৌ-আকাশ পথ ব্যাবহার করার নামই হচ্ছে করিডোর ।
একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার করা যাক, যেমন দরুন পশ্চিম বঙ্গ হতে বাংলাদেশ হয়ে মেঘালয়, আসাম বা ত্রিপুরা পৌছলে,
বলা হবে করিডোর(ছবি-২) আবার যদি পশ্চিম বঙ্গ হতে বাংলাদেশ হয়ে চট্রগ্রাম দিয়ে মীয়ানমার হয়ে চীন বা থাইল্যান্ড পৌছলে তাকে আবার বলা(ছবি-১) হবে, ট্রানজিট । আসা করি ট্রানজিট করি ডোর বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে ।
আপাতদৃষ্টিতে ‘ট্রানজিট’ শব্দটি প্রয়োগ করা হলেও ভারতকে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ যে সুবিধা দিচ্ছে তা সরাসরি বা স্থায়ী করিডর না হলেও পণ্য চলাচলের সমধর্মী সুবিধা। ট্রানজিটের মালামাল বা যানবাহন চলাচলকালে যদি বাংলাদেশী যানের চলাচল স্থগিত রাখতে হয় তবে তাকে ‘করিডরধর্মী’ সুবিধাই বলতে হবে। সম্প্রতি আশুগঞ্জ দিয়ে ভারতীয় বিদ্যুতকেন্দ্রের মালামাল পরিবহনকালে সেটাই ঘটেছিল।
আন্তর্জাতিক পরিসরে এরূপ করিডর সুবিধা সচরাচর কোন ‘ল্যান্ডলক্ কান্ট্রি’ই পেয়ে থাকে। কিন্তু ভারত মোটেই ‘ল্যান্ডলক্ কান্ট্রি’ নয়। তার নিজের বহু বন্দর রয়েছে ।
অন্যদিকে, সচরাচর করিডর বলতে নির্দিষ্ট একটি ভূমিখন্ডে নিয়ন্ত্রণ অধিকারসহ তা অপর একটি দেশকে দেয়া বোঝায় এবং ভারতকে এ মুহূর্তে বাংলাদেশের বিশেষ ভূ-খন্ডের নিয়ন্ত্রণ দেয়া না হলেও তা একতরফাভাবে ব্যবহারের সুবিধা দেয়া হচ্ছে। আবার যেহেতু ভারত নিজ উদ্যোগে পণ্য পরিবহন করবে সেহেতু তাকে ট্রান্সশিপমেন্ট বলারও সুযোগ নেই।
সোজাসুজি বললে, বাংলাদেশের জল ও স'লপথ ব্যবহার করে ভারত তার এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যেভাবে পণ্য পরিবহনের সুবিধা পাচ্ছে তাকে কোনভাবেই ট্রানজিট বলা না গেলেও বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ এবং গণমাধ্যম কর্মীরা অজ্ঞাত কারণে এরূপ সুবিধাকে করিডরের পরিবর্তে ট্রানজিট হিসেবে অভিহিত করছে।
চলবে.........
লেখাটা সংগৃহিত। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।