প্রদীপ হালদার,জাতিস্মর। চোখ যখন খোলাই আছে , তখন চোখের সামনের ছবি চোখের ভেতর দিয়ে মাথায় তো ঢুকবেই।
আমরা ভয় পাই । কিন্তু কেন ? তাহলে এই ভয়ের জন্য চোখ কি দায়ী ? চোখ কোন কিছু না দেখলে আমরা তো ভয় পেতাম না ।
চোখ কেন আমাদের মাথায় ভয়ের সৃষ্টি করছে ?
আমার চোখের সামনে কত ঘটনাই ঘটতে পারে ।
তাতে চোখের কি যায় আসে । ভয় আমি পাচ্ছি না । ভয় পাচ্ছে আমার চোখ । চোখ সঠিক দেখলো নাকি ভুল দেখলো তার তো বিচার করি না ।
আমার কান তো ভুল শুনতে পারে ।
কানে শোনার ওপর ভর করে চলবো কেন ? কান কি ভুল করে না ?
চোখ যখন খোলাই আছে , তখন চোখের সামনের ছবি চোখের ভেতর দিয়ে মাথায় তো ঢুকবেই। আমি দেখলাম আমার সামনে একটা ভূত দাঁড়িয়ে আছে। তাতে আমার ক্ষতি কি ? আমি কি তাকে মারছি , নাকি সে আমাকে মারছে ?
তাহলে ভয় কেন ?
আমার সামনে একটা সাপ আছে । দেখলাম । ভয় পাবো কেন ? আবার সাপটাকে মারার জন্য উদ্যোগ নেব কেন ?
আমাকে কেউ ক্ষতি করছে না , এমন কিছু আমার সামনে এলে ভয়ের কিছু নেই ।
ভূত মানুষের সাথে কথা বলতে চায় । মানুষ সেটা জানে না । যার ফলে আচমকা কোন কিছু দেখলে আমরা ভয় পাই ।
চোখের কাজ ছবি তোলা । আমার সামনে যা কিছু থাকবে , তার ছবি চোখে ধরা পড়বে ।
সেই ছবি নিয়ে আমাদের উত্তেজিত হবার দরকার নেই । তখন ভয় দূরে চলে যাবে ।
শেষ ।
গ্রহণ করবার ক্ষমতা আমাদের সকলের সমান নয় ।
সব পাত্র সব কিছু গ্রহণ করতে পারে না ।
পাত্রের গ্রহণ করার ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে , সেই পাত্রে কোন্ জিনিষ থাকবে ? বোতলে তরল পদার্থ রাখা সুবিধা । সেখানে আটা বা ময়দা রাখতে অসুবিধা হবে । ব্যাগে বই খাতা পত্র রাখার সুবিধা আছে , সেখানে জল রাখা যায় না ।
মানুষও এক ধরণের পাত্র । কার ভেতর কোন্ জিনিষ রাখা যাবে , আগেভাগে বোঝা যায় না ।
জিনিষ রাখতে রাখতে বোঝা যায় । কারোর মধ্যে পদার্থবিদ্যা রাখা যায় , কারোর মধ্যে রসায়নবিদ্যা রাখা যায় , কারোর মধ্যে ডাক্তারি শাস্ত্র রাখা যায় , আবার কারোর মধ্যে কোন কিছুই রাখা যায় না ।
শেষ ।
আজ জন্ম নিয়ে জানতে এসেছি - মানুষ কি বলে ভূত সম্বন্ধে । বই পড়ে জানতে চাইছি , আসলে সত্যটা কি ?
আমি রমেশ সাহা।
আমি নিজেকে প্রশ্ন করলাম। আমি জন্ম নিয়েছি কার জন্য ? আমি জন্ম নিয়েছি আমার নিজের জন্য। আমি এবং প্রদীপ এক হয়ে আছি। দুধ এবং জল মেশানো হলো। এবার দুধ এবং জলকে আলাদা করতে বললাম।
দেখবেন কেউ আলাদা করতে পারছে না । দেখবেন জল মিশ্রিত দুধকে সবাই দুধ বলছে , জল বলছে না ।
জাতিস্মরকে নিয়ে অনেকে বই লিখেছে । অনেক না বোঝা মন্তব্য আছে । মানুষ বিশ্বাস করেছে ।
আর তাদের বই হু হু করে মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছে । বিনিময়ে লেখকের উপার্জন বেড়েছে ।
আর যে জাতিস্মর , সে নিজেই জানে না , আসলে সে কে ? সে কেবল পেছনের স্মৃতিতে ফিরে গিয়ে তাদের কাছে থাকতে চায় । সেটা তো সে পায় না । জাতিস্মর ব'লে ডাকাতে সে নিজেকে একটু গর্ববোধ করে ।
আর আগের জীবনের ভাবনাই ডুবে থাকে , বর্তমান জীবনকে নিয়ে ভাবতেই চায় না । সবসময় তার ভালো লাগে পূর্বের স্মৃতিতে ফিরে গিয়ে সেই ঘটনার কথা বলতে । আর সে ভাবে ওটা তারই জীবন । মৃত্যুর পরের কথা জানতে চাইলে বলে মনে নেই ।
দুধ এবং জলকে যেমন আলাদা করা যায় নি , তেমনিভাবে জাতিস্মরের ভাবনাও আলাদা করা যায় নি ।
দুধ আর জল যেমন আলাদা , তেমনি জাতিস্মরের বর্তমান জীবন এবং পূর্বের জীবন আলাদা । দুধের মধ্যে যেমন জল ঢুকে গিয়েছে , তেমনিভাবে বর্তমান জীবনের মধ্যে পূর্বের কোন একজনের জীবন ঢুকে গিয়েছে -এটাই জাতিস্মর । আসলে কোন জাতিস্মর পূর্বের যে জীবনের কথা বলছে সেটা তার নিজের নয় , অন্য এক মানুষের জীবন ।
এই কথা বলতে গিয়ে সবাই আমার দিকে নানান কথা ছুঁড়ে দিলো । দিতেই পারে ।
তার জন্য আমি কেন কষ্ট পাবো ? যার প্রয়োজন হবে সে আমার কাছে আসবে । যার প্রয়োজন নেই সে আমার কাছে আসবে না ।
আমি জন্ম নিয়েছি আমার জন্য । আমার পড়াশোনা আমার জন্য । আমি ভূত হয়েছিলাম ।
আজ জন্ম নিয়ে জানতে এসেছি - মানুষ কি বলে ভূত সম্বন্ধে । বই পড়ে জানতে চাইছি , আসলে সত্যটা কি ?
আমাকে সবাই আঘাত করতেই পারে । আমাকে ছেড়ে অনেকে চলে যেতেই পারে । সেই সব কষ্ট গায়ে মেখে লাভ নেই । তাদের জন্য আমি নই ।
আমি আমার জন্য । আমার দেখা পথে আমি হেঁটে চলেছি । নতুন পথের ঠিকানা এখানে নেই । তাই আমার জন্ম আমারই জন্য ।
আমি রমেশ সাহা।
আমার পথ আমাকে খুঁজে নিতে হবে। আমাকে সাহায্য করবে এমন ভাবনাটা আমার না থাকাই ভালো । মৃত্যুর পর ভূত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম বই পড়ে ভূত সম্বন্ধে জানতে পারবো । অনেক বই পড়লাম ।
সঠিক তথ্য পেলাম না।
আমি পড়াশোনা করেছি আমার জন্য । অন্যের জন্য আমি পড়ি নি । আমি কাউকে ভালবাসি আমার জন্য , ভালবাসার পর যদি সে চলেও যায় , দুঃখ নেই , বরং আর একজন অপেক্ষা করছে আমাকে ভালবাসার জন্য । আমাকে ছেড়ে সবাই চলে গেলে আমি বেশী খুশী হবো ।
শেষ ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।