আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৯/১১ ও অহিংস আন্দোলন...

আমার চোখে বর্তমান... ৯/১১ আসলেই আমি নিজের ভেতর একটু গুটিয়ে যাই। যদিও জানি আমার এইরকম মনে হবার কোন কারন নেই। আমি ৯/১১ বা এ জাতীয় চিন্তা চেতনার সমর্থক নই। ৯/১১ এর ঘটনা যখন ঘটল তখন আমি ছাত্র। দেশে একটি ইউনিতে পড়ি, আর অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশুনা করতে যেতে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

৯/১১ ঘটে যাবার পর মনে হয় কিছু বেশী অপ্রাতিষ্ঠানিক সমস্যায় ভুগতে হয়েছিল। যেমন সিংগাপুরে প্রায় আধা ঘন্টা আমার পাসপোর্ট পরীক্ষা করা হলো, ইত্যাদি ইত্যাদি। অস্ট্রেলিয়ার জীবনে বন্ধুদের সাথে মেলামেশাও একটু কঠিন হয়ে গিয়েছিল। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অনেকে জানতে চেয়েছিল ৯/১১ নিয়ে আমার বা আমার দেশের লোকদের মনোভাব কি। অনেকে তো জানি আরো অনেক বেশী বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরেছিলেন।

সে যাই হোক। অপ্রাসংগিক ভাবে একটু বলি, যখন নরওয়েতে হত্যাকান্ড ঘটল এই বছর, আমি মনের কোথাও যেন একটু রিলাক্সড অনুভব করলাম (খুব দুঃখিত এই কথা বলার জন্য, তবে কথা সত্যি)। . কারনটা হলো, এবারের ঘটনা ছিল অমুসলিম কারো দ্বারা সংঘটিত। ঘটনার সপ্তাহ খানেক পর এক পার্টিতে কিছু নরওয়েজিয়ান বন্ধুর সাথে আলাপের সময় তাদের সমবেদনা জানালাম। তখন এ বিষয়ে কথা বলতে অনেক দুঃখবোধ হয়েছিল, কিন্তু একটুও অস্বস্তি হয়নি।

৯/১১ এর পেছনে কারা ছিলেন তা নিয়ে অনেক সন্দেহ অনেকে করেন। তবে যেই করে থাকেন পুরো বিষয়টা একটা পুরোদুস্তর বোকামী ছাড়া আর কিছুই না। যে এক অবিশ্বাস্য নিষ্ঠা, দেশপ্রেম বা ধর্ম প্রেম বা অন্যায়ের প্রতিবাদ করার আকাংক্ষা নিয়ে একটি কিশোর বুকে বোমা বাধে তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, এভাবে কখনো সমস্যার সমাধান হয়নি, হবেও না। আমাদের দেশে ভারত বিদ্বেষ নিয়ে অনেক কথা হয়। যদি কথার কারনে কারো কোন ক্ষতি হতো তো আমাদের কথায় ভারতবাসী অনেক আগেই ধ্বংস হয়ে যেত, তাতে কোন সন্দেহ নাই।

কোন সন্দেহ নাই ভারত আমাদের সাথে অপমানমূলক আচরন করে, আমাদের থেকে শুধু নিজেই লাভবান হতে চায়, কোন সন্দেহ নাই আমেরিকা ও ইহুদিরা (ঈসরায়েল বিশেষ করে) মুসলমানদের প্রতি অনেক অন্যায় করেছে এবং সারা জীবনই মনে হয় করবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সহিংস আন্দোলনে কোন লাভ হয়নি, হবেও না। এই ধরনের বড় পর্যায়ের বিষয়গুলো অহিংস আন্দোলন, যুক্তি তর্ক উপস্থাপন, জন সংযোগ, এক কথায় অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে প্রতিরোধ না করলে কখনোই সফল হওয়া যাবে না। আপনি ভারতীয় সাইট হ্যাক করলেন, বা বোমা মেরে আমেরিকান কাউকে মেরে ফেললেন কিন্তু বাড়ী গিয়ে হিন্দী গানের শীষ দিতে দিতে বাথরুম সারলেন বা আপনার মোবাইলে রিং টোন কোন ধামাকা হিন্দী ছবির, কিংবা যে কম্পিউটারে আপনি আমেরিকান মারার বুদ্ধি করলেন তা আমেরিকান - তাহলে আপনার প্রতি অন্যদের শ্রদ্ধাবোধ কখনো তৈরী হবে না। আপনার আন্দোলন শুধুই একটি সহিংসতা হিসেবেই ইতিহাসে লেখা থাকবে।

বৃথাই হবে আপনার কষ্টসাধ্য সাইট হ্যাকিং, বৃথাই হবে আপনার জীবন দান। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।