আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘এটা পুরো দেশের অর্জন’

আমার মাঝেই আমার বসবাস ঢাকার মাঠে আর্জেন্টিনাকে দেখার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। সেই স্বপ্নদ্রষ্টার নাম কাজী সালাউদ্দিন। আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচের আয়োজন নিয়ে কাল বাফুফে সভাপতির সাক্ষাৎকার নিলেন মাসুদ আলম  আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচটা তো ভালোভাবেই শেষ হয়েছে। নিশ্চয়ই খুব নির্ভার লাগছে? কাজী সালাউদ্দিন: একটু নির্ভার তো লাগছেই। এত বড় একটা ধকল...তবে এখনো সব শেষ হয়নি।

এই একটু আগেই তো একটা মিটিং শেষ করলাম।  গত কয়েক দিন নাকি আপনার ঘুম-টুম বলে কিছু ছিল না। তা কাল রাতে নিশ্চয়ই লম্বা একটা ঘুম দিয়েছেন? সালাউদ্দিন: আর ঘুম! রাত দুটায় বাসায় গিয়েছি। ঘুম আসছিল না সেভাবে। তিন-চার ঘণ্টা বোধ হয় ঘুমিয়েছি।

ক্লান্ত লাগছিল।  ক্লান্তিটা কি এখনো আছে? সালাউদ্দিন: হুম, সত্যি কথা বলতে, এখনো আমার ক্লান্ত লাগছে। এটা কাটতে কয়েক দিন সময় লাগবে।  এমনিতে খুশি তো? সালাউদ্দিন: ঠিক খুশি বলব না। আবার একেবারে অখুশিও নই।

কারণ, আয়োজনের দিক থেকে আমাদের আরও ভালো করার সুযোগ ছিল। পারলাম না।  কী নিয়ে অখুশি আপনি? কোনটা করতে পারেননি? সালাউদ্দিন: অনেক কিছুই আছে, লম্বা কাহিনী বলতে চাই না। একটা উদহারণ দেই—এই যে ম্যাচের সময় জায়ান্ট স্ক্রিনটা চলল না, এটা কোনো কথা হলো? আমার তো খুবই বিব্রত লাগছিল। বসে বসে মাথার চুল ছিড়েছি।

মাঠে বড় পর্দা আছে, কিন্তু চলছে না। অথচ মাঠে মেসির মত খেলোয়াড় খেলছে। এমন বাজে অবস্থা কেন হবে?  আগে জানা ছিল না? সালাউদ্দিন: জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এটা চালানোর কথা। আমরা তো জানি সব ঠিকঠাক আছে। আমাদের বলাও হয়েছিল, সব ঠিক।

কিন্তু ম্যাচ শুরু হওয়ার পর দেখলাম, ওটা অচল। যা-ই হোক, এ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।  ভবিষ্যতে তাহলে কী করবেন? সালাউদ্দিন: ভবিষ্যতে এ ধরনের বড় আয়োজনের এক মাস আগেই মাঠ নিয়ে নেব আমাদের হাতে। মানে বাফুফের তত্ত্বাবধানে। এখন তো মাঠসহ সব অবকাঠামো ক্রীড়া পরিষদের হাতে থাকে।

 এখন তো মানুষের প্রত্যাশা বেড়ে গেছে অনেক। তা সামনে আর কী চমক আছে? সালাউদ্দিন: এখন কীভাবে বলব! মাত্র একটা বড় কাজ শেষ করলাম। কয়েকটা দিন যাক। তারপর ভাবব।  তার পরও আপনার নিজের একটা ইচ্ছে আছে না? সালাউদ্দিন: তা তো আছেই।

আমি বার্সেলোনা, ম্যানইউকে ঢাকায় দেখতে চাই। তার মানে এই না যে চেলসি বা ইউরোপের অন্য বড় দলের প্রতি আগ্রহ থাকবে না। ব্রাজিলকে আনার সুযোগ থাকলে নিশ্চয় সেটাও নিতে চাইব।  এসবের ভিড়ে আমাদের ঘরোয়া ফুটবলটা আবার আড়ালে পড়ে যাবে না তো?. সালাউদ্দিন: মোটেও আড়ালে পড়বে না। আমরা ঘরোয়া ফুটবলের সূচি দিয়ে দিয়েছি।

এখন আমাদের লিগটার মান বাড়ানো উচিত। নইলে নিজেরা এগোতে পারব না।  জাতীয় দল নিয়ে কী ভাবছেন? ওটাও তো খুব গুরুত্বপূর্ণ... সালাউদ্দিন: জাতীয় দল নিয়ে অনেক অনেক পরিকল্পনা আছে। ভাবছি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। তাঁর সহযোগিতা চাইব।

তিনি সহযোগিতা করলে কিছু কর্মসূচি নেব। কারণ, যেকোনো কর্মসূচি নিতে গেলেই টাকা দরকার। শুধু পরিকল্পনা করলেই তো হবে না।  ম্যাচ প্রসঙ্গে ফেরা যাক। ৩০ কোটি টাকার এই আয়োজনে লোকসান হবে বলে এসেছেন আপনি।

আসলে কত টাকা লোকসান হয়েছে? সালাউদ্দিন: এটা আমি বলব না। তবে অনেক টাকা লোকসান হবে। পুরো অর্থনৈতিক দায়িত্বটা নিয়েছিল বেক্সিমকো গ্রুপ। তারা উদার হয়ে না এলে এই আয়োজন সম্ভব ছিল না।  ম্যাচটা আয়োজনে অনেক অব্যবস্থাপনা ছিল।

এগুলো সামাল দিতে না পারা বাফুফের জন্য কতটা ব্যর্থতা? সালাউদ্দিন: হ্যাঁ, কিছু ব্যর্থতা ছিল। বুঝতে হবে, এমন আয়োজন আমরা প্রথম করেছি। এটা করতে গিয়ে কারও কারও কারণে আমাকে বিপদে পড়তে হয়েছে। আমি নিজে অনেক কিছু শিখলাম, জানলাম এবং বাস্তব অবস্থাটা দেখলাম। অনেক বিষয় আছে, সেগুলো আমি বলব না।

 কেন বলবেন না, আপনার কিসের ভয়? সালাউদ্দিন: ভয়ের কিছু নয়। সব কথা বলা যায় না। আমার প্রতিশ্রুতি ছিল মেসিকে আনব, এনেছি। দর্শক খেলা দেখেছে। তারা খুশি কিনা, এটা জানতে আমার ইন্টারভিউ না নিয়ে দর্শকদের ইন্টারভিউ নিতে পারেন।

 দর্শক তো খুশিই। আপনার কথা তো মানুষ শুনতে চায়... সালাউদ্দিন: আপনি লিখতে পারেন, আমি বলেছি, আমাদের মানসিকতা আরও ওপরের দিকে তুলতে হবে। আমরাও পারি—এই আত্মবিশ্বাস থাকা সবার মধ্যে জরুরি। দেখুন, কত বড় একটা অর্জন আমাদের। ফিফার খাতায় আমাদের নাম উঠে গেছে।

মানে ফিফার কাছে এরপর আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ম্যাচ চাইলেই আমরা পাব।  ডিনারে মেসিরা এলেন না। ক্ষুব্ধ হয়ে পৃষ্ঠপোষক বাকি সব অবিক্রীত টিকিট নিয়ে গেলেন ম্যাচের আগের রাতে। ওই রাতে নাকি ৫টা পর্যন্ত ফেডারেশনে ছিলেন? সালাউদ্দিন: কী যে একটা রাত গেছে! শুধু আমি নই, আমাদের অনেক কর্মকর্তাই সঙ্গে ছিল। সবাই সহযোগিতা করেছে।

তার পরও হাজারো সমস্যা এসেছিল। কোন দিক থেকে কোনটা সামলাব—চিন্তায় পড়ে যাই।  শেষ পর্যন্ত তো আপনি সফল... সালাউদ্দিন: আমার নিজের কোনো কৃতিত্ব নেই। এটা পুরো দেশের অর্জন। ভয় ছিল, মেসি ৯০ মিনিট খেলবে তো? শেষ পর্যন্ত মেসির ম্যাচে মেসি ৯০ মিনিটই খেলল।

সবাই যা দেখতে চেয়েছিল, সেই পায়ের জাদুও দেখিয়েছে। ভালো ম্যাচ হয়েছে। এটা ভেবে আমি তৃপ্ত। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।