সবাইকে আমার নিজস্ব ব্লগ ভিজিট করার আমন্ত্রন রইলঃ www.islameraalo.wordpress.com (এই সাক্ষাৎকারটি ‘ইসলামের আলো’ পত্রিকার জুন,২০১০ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল । সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন মুহাম্মাদ তাওহীদ আহমেদ । স্থান; আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়)
তাওহীদ আহমেদঃ স্যার, আপনি একজন সফল ডাক্তার হওয়া সত্যেও সেই পেশা ত্যাগ করে; আপনার সকল সময়, শ্রম এই দাওয়াহ’র কাজেই সমর্পন করে চলেছেন । এত বড় কৃতিত্বের জন্য কাদের তরফ থেকে সবচেয়ে সহযোগিতাপুর্ন প্রভাবের কথা আজও অনুভব করেন ?
ডা. জাকির নাইকঃ হ্যাঁ, এই দাওয়াহ’র কাজে অতিনিবেশকরণে যে ব্যক্তিত্ব আমাকে অনুপ্রাণিত করেন তিনি হলেন শেখ আহমেদ দিদাত । তিনি একবার মুম্বাই এসেছিলেন তখন আমি এম.বি.বি.এস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ।
সেই সময় আমি তাঁর বক্তৃতা শুনি এবং স্বয়ং তাঁর সাথে দেখাও করি । আর এর পরেই তাঁর কাছ থেকে ভীষণভাবে অনুপ্রানিত হয় তথা এই দাওয়াহ মুলক কর্মকান্ডের ময়দানে নেমে পড়ার জন্য খুবই প্রভাবিত হয়ে পরি । সুতরাং সেই মতো আমি আমার স্মাতক স্তরে পাঠরত দিন গুলিতেই শুরু করে দিয় দাওয়াহ’র কাজ । এমনকি আমাদের ওই মেডিক্যাল কলেজেও তা জারি রাখি । এরপর আমি যখন আমার ডাক্তারি শিক্ষা সফল্ভাবে সমাপন করি, তখন আমি আমার অর্ধেক সময় ব্যয় করতাম দাওয়াহ’র কাজে আর বাকি অর্ধেক ওই ডাক্তারি পেশায় ।
তারপর ধীরে ধীরে আমি মাত্র দু-ঘন্টা করে সময় দিতে লাগলাম আমাদের সেই ক্লিনিকে, যেটা পুর্ব থেকেই আমার বাবা ও দাদা দু-জনেই পেশাদার ডাক্তার হিসেবে পরিচালিত করে আসছেন সফল্ভাবে । যাইহোক এরপর আলহামদুলিল্লাহ সেই দু-ঘন্টা ব্যতিত বাকী সময়টা তখন এই দাও’আর কাজেই উৎসর্গ করার চেষ্টা করতাম । কিন্তু সুম্মাআলহামদুলিল্লাহ বিগত ১৯৯৫ থেকে আমি সম্পুর্নভাবে দাও’আর কাজেই ব্যতিব্যস্ত । হ্যাঁ, তবে প্রারম্ভিক দিন গুলিতে আমার মমতাময়ী মা চেয়ে ছিলেন যে আমি যেন আগামিতে (পৃথিবী বিখ্যাত ডাক্তার) ডঃ ক্রিস্টিয়ান বার্নাড এর মতোই একজন সফল ও বিখ্যাত ডাক্তার হয় । কিন্তু পরবর্তীতে আমি যখন আমার বেশির ভাগ সময় দাও’আ তেই দিতে লাগলাম, তখন একদিন আমার মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে আপনি কোনটা পছন্দ করেন- হয় আমি ডঃ বার্নাড হয় নই আহমেদ দিদাত ? তো মা বলেছেন, জাকির তুমি দুটোই হওয়ার চেষ্টা কর ।
অথচ আজ সেই একই প্রশ্ন আমার মার সামনে রাখলে তিনি বলেন, আজ আমি একজন শেখ দিদাতের জন্য সহস্র ক্রিস্টিয়ান বার্নাড ত্যাগ করতে পারি ।
তাওহীদ আহমেদঃ আপনার পরিবারের সমন্ধে আমাদের আরও কিছু বলুন ?
ডা. জাকির নাইকঃ আমার তিন জন সন্তান, এক ছেলে দুই মেয়ে । আর আমি এমনই এক অতিশয় ধর্মপ্রান পরিবারের সাথে যুক্ত রয়েছি, যেখানে একটা আদর্শ পরিবারের তরফ থেকে যতটা সম্ভব সমর্থন লাগে তার প্রায় সবটুকুই আমি পেয়ে এসেছি আলহামদুলিল্লাহ । আর এই সমর্থনের পরিপেক্ষিতেই আজ আমার সহধর্মনীও একজন ধার্মীক মহিলা স্বরুপ আমাদের ‘ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশান’ এর মহিলা বিভাগের প্রধান তত্ত্বাবধায়ীকা রুপে দাও’আর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ।
তাওহীদ আহমেদঃ আচ্ছা, আপনার কলেজ জীবনের ব্যাপারেও আমাদের কিছু বলুন ?
ডা. জাকির নাইকঃ আমার কলেজের দিন গুলিতে আমি বিশেষ করে আমাদের সম্মানিত-শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক মহাদয়গণকে এই দাও’আর প্রতি যথেষ্ট কৌশলের সহিত আকৃষ্ট করার কাজ চালিয়ে যেতাম ।
আর এভাবেই ইসলামের মর্মবাণী তাঁদের মর্মস্থলে স্পর্শ করানোর চেষ্টা করতাম । যদিও এতে তাঁরা প্রথমে আমাকে দার্শনিক (?) বলেই ডাক হাঁক দিতেন, তবুও প্রকৃতপক্ষে আমাকে ঢ়েড় বেশি সম্মানও করতেন । আর না তাঁরা এজন্য আমাকে কখনো ফেল করিয়েছেন । এমনকি তাঁরা যদিও বা আমাকে ফেল করিয়ে দিতেন, তবুও আমি নিশ্চিন্ত থাকতাম এই ভেবে যে, এই অতিরিক্ত একটা বছর আল্লাহ তা’লা আমাকে দিয়েছেন যাতে আমি তাঁদেরকে আরও এক বছর দাও’য়াত দিতে পারি । এটাই হল আমার আল্লাহর প্রতি ইমান (বিশ্বাস) ।
বড় পোষ্ট কেউ পড়তে চাই না । তাই সাক্ষাতকারটা কয়েকটি ভাগে দেব । আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে………. ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।