প্রদীপ হালদার,জাতিস্মর। ভূতের অস্তিত্ব আছে । ভূতের অস্তিত্ব না থাকলে জাতিস্মরের অস্তিত্ব থাকে না । যেহেতু জাতিস্মরের অস্তিত্ব আছে , সেহেতু ভূতের অস্তিত্ব আছে ।
কিন্তু বিজ্ঞান এখন পর্যন্ত জাতিস্মর এবং ভূতের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে পারে নি ।
আর সেজন্য মানুষ এই দুটোকে নিয়ে নানান রকমের মন্তব্য করছে কিংবা করে চলেছে ।
দীর্ঘদিনের প্রচলিত বিশ্বাসকে মানুষ দূরে ফেলে দিতে পারে না ।
জাতিস্মর কাকে বলে ? এর উত্তরে আমি বলতে পারি- যে মানুষ তার পূর্ব জীবনের কথা বলতে পারে , তাকে নাকি জাতিস্মর বলে । এখন পর্যন্ত এই ব্যাখ্যাটাই প্রচলিত আছে । এখন পর্যন্ত সব জাতিস্মরই পূর্বের একটি জীবনের কথা বলতে পেরেছে , মৃত্যুর পর কি ঘটেছিল , সেটা তারা বলতে পারে নি ।
যার ফলে জাতিস্মরের ব্যাখ্যাটা ঐ রকমই আছে ।
এবার আপনারা সকলে ভাবুন- আমরা সবাই পূর্বজীবনের কথা ভাববার চেষ্টা করছি , কিন্তু সেই রকম কিছু স্মরণে আনতে পারছি না । তাহলে আমরা জাতিস্মর নই ।
আমরা আমাদের ছোট্টবেলার কথা কয়জনে মনে রাখতে পারি ? চেষ্টা করুন , দেখবেন সাউন্ড বা শব্দের ধারণা আনতে পারবেন না , কেবল কিছু ছবির ধারণা অর্থাৎ বাড়ি ,স্কুলের ছবি মনে আনতে পারবেন । তারপর বয়স বাড়লে স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে ।
আমাদের মাথার যখন এইরকম স্মৃতিশক্তি ,তখন একটি ছেলে বা মেয়ে কিভাবে বলছে তার পূর্বজীবনের কথা ?
এর ব্যাখ্যা এখন পর্যন্ত কেউ দিতে পারে নি ।
কিন্তু দেখা গেছে , যা বলছে , স্পটে গিয়ে তার সন্ধান পাওয়া গেছে । মানুষ তখন অবিশ্বাস করতে পারছে না । আবার যারা বেশী বুদ্ধিমান , তারা বলছে , আগে থেকে বাচ্চাটাকে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছিল , কিংবা সম্পত্তির লোভে বাচ্চাটাকে ওইসব কথা বলতে শেখানো হয়েছে । আবার কেউ বলছে -আত্মা আবার জন্ম নেয় ।
আর নানান মানুষের নানান কথা ।
বিজ্ঞান এর কথায় বলি - একটা গান যেভাবে রেকর্ডিং করা হয় এবং যে ভাষায় রেকর্ডিং করা হয় , গানটি বাজালে সেই ভাষায় এবং পর পর সেইভাবে বাজতে থাকে।
মানুষের ক্ষেত্রে বলি - আমরা যেভাবে শুনি , বলার সময় পর পর সেইভাবে বলতে পারি না । একটা গান শোনার সাথে সাথে গাইতে পারি না ।
একজন মানুষের মাথায় স্মৃতিতে যে সব ধারণা থাকে , সেই সব ধারণা তার মৃত্যুর পর ইলেকট্রোম্যাগ্নেটিক ওয়েভ এনার্জির মাধ্যমে অর্ডার ফর্মে বের হয়ে যাবে ।
এই ধারণা বাতাসের মধ্যে জায়গা করে নিয়ে আগের আকার নিয়ে নেবে । একে আমরা ভূত বলি ।
এই ধারণা বা ভূত এবার কোন গর্ভবতী মহিলার শরীরের বাচ্চার মধ্যে ঢুকে গেলে , আর বের হতে পারবে না । তখন বাচ্চাটা বড় হয়ে ঐ ধারণার কথা বলতে পারবে এবং এই বলাটা রেকর্ডিং এর মতো বলা । বাচ্চাটার মনে হবে এটা বুঝি তার আগের জীবনের কথা - আসলে তার জীবন নয় , অন্যের জীবন ।
আমরা অনেক সময় শুনি ওকে ভূতে ধরেছে । তারপর ওঝা ডাকি । ঝাঁকফুঁক করি। মারধোর করি। আমি বলি - কোনটাই করা উচিৎ নয় ।
ভূতে ধরা সত্য । নিজেকে চেষ্টা করতে হবে , তাহলে সে চলে যাবে । আমাদের শরীর হলো হিট ইঞ্জিন । অতিরিক্ত এনার্জি শরীরে ঢুকলে শরীর কাজ করতে পারে না । তাই গরমে আমরা হাসফাস করি ।
ভূত শরীরে ঢোকার অর্থ হল অতিরিক্ত এনার্জি শরীরে ঢুকেছে , তখন শরীর কাজ করতে পারবে না । ভুত শরীরে ঢুকে , বের হয়ে যেতে পারে ।
আর জাতিস্মর যাদের বলছি , তাদের ক্ষেত্রে ভূত, শিশুটি ভুমিষ্ঠ হবার আগেই মায়ের শরীরের মধ্য দিয়ে গর্ভে থাকা শিশুটির মধ্যে ঢুকে যায় এবং শত চেষ্টা করেও ভূতটি আর শিশুটির শরীর থেকে বের হতে পারে না । এই ভূতটি তখন শিশুটির শরীরে থেকে শিশুর মাধ্যমে তার কথা বলে । শিশুটি বুঝতে পারে না , তার মধ্যে ভূত ঢুকে আছে ।
এটাই বলি জাতিস্মর ।
সেজন্য কোন গর্ভবতী মহিলাকে একাকী ভর দুপুরবেলায় ,সন্ধ্যাবেলায় গাছতলায় বা পুকুরঘাটে যেতে নেই । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।