এসব অভিযোগের মধ্যে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনাও রয়েছে।
প্রসিকিউটর এ কে এম সাইফুল ইসলাম ও নূরজাহান বেগম মুক্তা বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কাছে এই অভিযোগ জমা দেন।
এর আগে গত ৮ জুন আজাহারের যুদ্ধাপরাধের তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
প্রসিকিউশনের ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, রংপুর অঞ্চলে ১ হাজার ২২৫ ব্যক্তিকে হত্যা, চারজনকে হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক ও নির্যাতন এবং শতশত বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের অভিযোগ আনা হয়েছে জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের বিরুদ্ধে।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, আজহার তখন রংপুরের কারমাইকেল কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র এবং জামায়াতে ইসলামীর তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের রংপুর শাখার সভাপতি।
জেলার আলবদর বাহিনীরও নেতৃত্বে ছিলেন তিনি।
আজহার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পরিকল্পনা, ষড়যন্ত্র ও তা বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে জড়িত থেকে অপরাধ সংঘটন করেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ ও ২৭ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংঘটক, ন্যাপের (ভাষানী) নেতা ও আয়কর আইনজীবী এওয়াই মাহফুজ আলীসহ ১১ জনকে অপহরণের পর নির্যাতন করা হয়। এরপর ৩ এপ্রিল তাদের দখিগঞ্জ শ্মশানে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়, যাতে আজহারও জড়িত বলে অভিযোগ।
১৬ এপ্রিল রংপুরের বদরগঞ্জ থানার ধাপপড়ায় ১৫ জন নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালীকে গুলি করে হত্যাসহ লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায়ও আজহার জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ এনেছে প্রসিকিউশন।
“একই বছরের ১৭ এপ্রিল রংপুরের বদরগঞ্জের ঝাড়ুয়ারবিল এলাকায় ১২শ’র বেশি নিরীহ লোককে হত্যা, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গেও আজহার জড়িত ছিলেন। ”
এছাড়া ১৭ এপ্রিল কারমাইকেল কলেজের চারজন অধ্যাপক ও একজন শিক্ষকের স্ত্রীকে কলেজ ক্যাম্পাসের বাসা থেকে ধরে নিয়ে দমদমা ব্রিজের কাছে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায়ও আজহারের সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনেছে প্রসিকিউশন।
অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে রংপুর শহর ও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন বয়সী নারীদের ধরে এনে টাউন হলে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণ এবং নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালিকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন, গুরুতর জখম, হত্যা ও গণহত্যার সঙ্গেও এই জামায়াত নেতা জড়িত ছিলেন।
এছাড়া নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে রংপুর শহরের গুপ্তাপাড়ায় একজনকে নির্যাতন এবং ১ ডিসেম্বর বেতপট্টি থেকে একজনকে অপহরণ করে রংপুর কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে নিয়ে নির্যাতনের সঙ্গেও আজহার জড়িত ছিলেন বলেও তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। এ সময় ৬০ জনেরও বেশি ব্যক্তির বক্তব্য শোনেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তবে প্রতিবেদনে তারা সাক্ষী করেছেন ২৭ জনকে।
গতবছর ২২ অগাস্ট মগবাজারের বাসা থেকে এটিএম আজহারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।