ফেসবুক স্ট্যাটাসে হয়তো একান্ত ব্যক্তিগত কিছু ভাবনা তুলে ধরলেন। বন্ধুদের নিয়ে, নিজের কর্মক্ষেত্র নিয়ে হয়তো বা দেশ ও দেশের রাজনীতি নিয়ে। কিন্তু সেই ভাবনা যদি ব্যক্তিবিশেষ কিংবা রাষ্ট্রের কোনো নীতির বিপক্ষে চলে যায়, তাহলেই কিন্তু সর্বনাশ। মামলা হয়ে যেতে পারে আপনার বিরুদ্ধে। অলস সময়ে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে করা আপনার একটি মন্তব্য কারণ হতে পারে অপরিসীম হয়রানির।
বিবিসি জানায়, বর্তমান সময়ে বিশ্বে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ও অন্যান্য অনলাইন ফোরামে করা মন্তব্য, প্রকাশিত ছবি ইত্যাদির কারণে মানহানির মামলা বেড়ে গেছে। কেবল ইংল্যান্ড ও ওয়েলসেই এ ধরনের মানহানির মামলা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বিবিসি অনলাইনের এক খবরে বলা হয়েছে, এ বছর যুক্তরাজ্য ও ওয়েলসে এমন মানহানির মামলার সংখ্যা সাত থেকে বেড়ে ১৬-তে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬-তে। সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন ওয়েবসাইট যেমন: ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারণেই এ সংখ্যা বৃদ্ধি বলে মনে করছেন অনলাইন বিশ্লেষকেরা।
সম্প্রতি ফেসবুকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি মন্তব্য করে ফেঁসেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে লিবেল রিফর্ম ক্যাম্পেইন গ্রুপ নামের একটি ওয়েবভিত্তিক ফোরাম মনে করে, দিন দিন করপোরেট হাউস ও অন্যান্য ক্ষমতাবান প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন অনলাইন ফোরাম ও ব্লগের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার প্রবণতা যে হারে বেড়েছে, তাতে এসব ক্ষুদ্র ফোরাম ও ব্লগগুলোর আরও বেশি আইনি সহায়তা ও সমর্থন প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে গণমাধ্যম আইন বিশেষজ্ঞ কোরিয়ে দুয়োদু বলেন, ‘সাধারণত এসব মামলা হচ্ছে ব্যক্তিগত মতামতের কারণে। ফেসবুক বা টুইটারে হয়তো কিছু লিখলেন, সে লেখাটা হয়তো একেবারেই আপনার ধারণাপ্রসূত।
কেবল তথ্যের সত্যতা যাচাই না করে লেখার জন্য আপনার বিরুদ্ধে মামলাও হয়ে যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমগুলো এদিক দিয়ে অনেকটা নিরাপদে রয়েছে, কারণ সেখানে যেকোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করেই তা প্রকাশ করা হয়। ’
তবে ইদানিং, সাংবাদিকেরা সংবাদের সূত্র হিসেবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট, ব্লগ ও অন্যান্য অনলাইন ব্যবহার করার কারণে তাঁরাও এই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছেন বলে জানান দুয়োদু।
দুয়োদুর মতে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে যেকোনো একটি তথ্য কোনো মনিটরিং ছাড়াই বিদ্যুত্গতিতে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। মাঝেমধ্যে যেকোনো ভুল তথ্য রাষ্ট্র ও সমাজের অপূরণীয় ক্ষতি করতে পারে।
এ ব্যাপারে আরও বেশি মনিটরিং ও সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোর জবাবদিহিই একমাত্র সমাধান বলে মনে করেন তিনি।
কিছুদিন আগেই সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটের শক্তি ব্যবহার করে ব্রিটেনে সংঘটিত হয়েছে স্মরণকালের ভয়াবহতম দাঙ্গা। এই দাঙ্গা কেড়ে নিয়েছে মানুষের প্রাণ। ক্ষতি করেছে অনেক সম্পদ। এমন একটি পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সরকার এ-সংক্রান্ত একটি আইন প্রণয়নের চিন্তা-ভাবনা করছে।
তবে সামাজিক গ্রুপগুলো এই আইন পাস হলেও যাতে এর শাস্তির মাত্রা সীমিত হয়, তার দাবি জানিয়ে আসছে।
source: Daily prothom-alo ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।