দীর্ঘ ১৬ বছর। আরো সহজ করে বললে ৫৮৪০ দিন পার হওয়ার পরও আট হাজারের বেশি কাশ্মিরি নারী জানেন না তাদের স্বামী বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন। সরকারি বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তাদের আর হদিস মিলেনি। প্রতি মাসের ১০ তারিখ এলেই স্বামীহারা এমন নারীদের কান্নার শব্দে ভারী হয়ে ওঠে কাশ্মীরের স্থানীয় একটি পার্কের আকাশ-বাতাস। কান্নায় ভেঙে পড়েন আশেপাশের লোকজনও।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে এ ধরনের মহিলার সংখ্যা আট হাজারেরও বেশি। তাদের দুঃখের সীমা নেই। কিন্তু তাদের দুঃখের কথা শোনারও কেউ নেই। স্থানীয় বা কেন্দ্রীয় সরকারের এ বিষয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নেই।
এ ধরনের মহিলাদেরকে বলা হয় ‘আধা-বিধবা’।
তারা জানতে চান, তাদের স্বামী বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন। কিন্তু তাদের এ সামান্য অধিকারটুকুও পূরণ করার জন্য এগিয়ে আসছে না সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এমন নারীদের কেউ কেউ বলেছেন-'আমরাতো মুসলমান! সরকার কি আমাদের দাবি শুনবে? তবে এ ব্যাপারে সরকারের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে। চোখের পানিই আমাদের প্রতিবাদের ভাষা। '
প্রতি মাসের দশ তারিখে যেসব নারী তাদের স্বামীদের সন্ধানের দাবিতে একত্রিত হন ও কাঁদতে কাঁদতে অস্থির হয়ে পড়েন,তাদের একজন হলেন মুবিনান।
দীর্ঘ ১৩ বছর আগে তার স্বামী নিখোঁজ হয়েছেন। তিনি এখনও বিশ্বাস করেন- তার স্বামী ফিরে আসবেন।
কাশ্মিরে এখনো মাঝে-মধ্যেই গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়। অনেকেই মনে করেন, যারা নিখোঁজ রয়েছেন, তাদেরকে মেরে ফেলা হয়েছে এবং বিভিন্ন স্থানে গণভাবে কবর দেয়া হয়েছে। এ আশংকা স্বামীহারা এসব নারীদেরও।
কিন্তু এতেও তো সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেলেও কোনটি কার দেহাবশেষ, তা বোঝার উপায় নেই।
সরকারি উদ্যোগ ছাড়া এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বহু বছর ধরেই এ বিষয়ে সরকারের ওপর চাপ দিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার তাতে কান দিচ্ছে না।
#
সুত্র ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।