স্বপ্নরা ডানা মেলুক ইচ্ছে মত ..নীল আকাশে. হঠাৎ করে ভুমির কেঁপে ওঠাকে ভূমিকম্প বলে। এমন কিছুই পড়েছিলাম ছোট বেলায় বইতে। কিন্তু কখনো Experience করা হয় নি। এই সেদিন ২৩শে আগস্ট বৃহস্পতি বার। প্রথমবারের মত ভূমিকম্প অনুভব করলাম! কাজ করছিলাম। ডেস্কের এ পাশে আমি আর একটু দুরে আমার সুপারভাইজার। দুজনেই কিছু একটা করছিলাম..হঠাৎ করে পুরো ডেস্কটা কেঁপে উঠলো! আমার সুপারভাইজার ভাবলো আমি বুঝি দুস্টামি করে ডেস্ক নাড়াচ্ছি! মাঝে মাঝে এই কাজটি যদিও আমি করি কিন্তু এভাবে নিশ্চই না! এমন পুরো বিল্ডিং নিয়ে তো নয় ই! ২ সেকেন্ড পর শুরু হলো পুরো বিল্ডিং এর কাঁপাকাপি।পুরো ৩০ সেকেন্ড ধরে চললো! সবাই বের হতে লাগলো একে একে! আমার এত বছরের নিউয়র্ক লাইফে আমি এখানে ভূমিকম্পের নাম ও শুনি নি! অবাক হলাম খুব! আমি চুপ চাপ দারিয়েই রইলাম! বুঝতেই পারছিলাম না কি করা উচিৎ! আমার ৬৭ বছরের একজন স্পানিশ কো-ওয়ার্কার ছিল..সিসিলিয়া! ভদ্রমহিলা কেঁদে দিলেন! আমি তাকে জরিয়ে ধরে বললাম..দেখ এখনি বন্ধ হয়ে যাবে! কিচ্ছু হবে না!! ভয়ের কিছু নেই! তুমি কাঁদছো কেনো??? সে শুধু বললো..জীবনে নাকি অনেক ভূমিকম্প দেখেছে..হারিয়েছে অনেক প্রিয়জনকে। এখন শুধু ভয় হয়..আর হারাতে চায় না.... বাট এটা ছিল বেবি ভূমিকম্প! আসলটা তো ভারজিনিয়া আর ডিসির উপর দিয়ে গেসে! সেতুলনায় আমরা লাকি ছিলাম! ৩০ সেকেন্ড পর থেমে গেল! সাথে সাথে বাসায় ফোন করলাম! আম্মু জানালো সবাই সেফ আছে..আব্বু ফোন করে জানালো সেও ঠিক আছে..তুলতুলা কি বললাম কি করতেছিলি..ও শুধু বললো..আমি টিভি হোল্ড করে ছিলাম টিভিটা নাকি পরে যাচ্ছিল শুনে খুব হাসি পাচ্ছিল! যাই হোক প্রথম Experience আমার কাছে বেশ ফান লাগছে..কোথাও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি! ৫.৮ ম্যাগনিটউড হয়েও মেজর কোনো ক্ষতি করতে পারি নি আল্লাহর রহমেতে! এতো গেলো ভূমিকম্প! আর এখন শুরু হয়েছে "হারিকেন আইরিন"!! মাত্র চার দিন পরেই!! একটার পর একটা যেন লেগেই আছে!! যতদুর শুনেছি নিউয়র্কে হারিকেন নাকি লাস্ট টাইম দেখা গিয়েছিল ৮০ ইর দশকে! মেইবি আমার জন্মের ও আগে! কিন্তু হঠাৎ করে এই আইরিন বিবি কোথা থেকে এল বুঝতে পারলাম না। নিউইয়র্ককে স্টেট অফ ইমার্জেন্সি ঘোষনা করা হয়েছে! পাবলিক ট্রান্সপরটেশন বন্ধ! এয়ারপোর্ট বন্ধ! স্কুল-কলেজ বন্ধ! হসপিটাল/নার্সিং হোল,অল্ড হোম থেকে সবাইকে দুরে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে! প্রথমে যদিও ভয় লাগছিল না কিন্তু এসব এভাকুয়েশন দেখে একটু যে ভয় লাগছে না সে বলছি না! সকাল উঠেই ইমার্জেন্সি এলার্ট ফোন পেলাম! আব্বু-আম্মু মোম/টর্চলাইট, খাবার, খাবার-পানি সব কিনে রেখেছে আগে ভাগেই ..যাতে পরে বেরোতে পারলে অসুবিধা না হয়! কাল যখন আমার ম্যানেজার বলছিল যে কাজে আসতে হবে! দরকার হলে ওরা পিক আপ আর ড্রপ অফ করবে ..তখন মনে হচ্ছিল..ঠিক আছে করব না হয় কাজ! অন্য রকম একটা Experience তো হবে! কিন্তু বেলা শেষে জানতে পারলাম..কোনো কাজ নেই! সবাইকে বাসায় থাকতে হবে! আমাদের সবগুলো ফ্লাইট ক্যানসেল! ইনফ্যাক্ট এয়ারপোর্ট ই ক্লোজ! ফ্লাইট আসবে কি করে! মনে মনে ভাবলাম যাক বাবা দুই দিন এমনি এমনি ছুটি পেয়ে গেলাম :-) এখন শনিবার দুপুর প্রায় দুইটা! হারিকেন বিবি নাকি আজ রাতে আট্যাক করবেন! সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন! যদিও মরতে আমার ভয় নেই! সবাই একসাথে মারা যাবো..আর বেঁচে থাকার কারন যখন স্ট্রং না তখন মরলেই ক্ষতি কি?
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।