আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

!!!রঙ যেন মোর মর্মে লাগে আমার সকল কর্মে লাগে!!!

রঙ যেন মোর মর্মে লাগে, আমার সকল কর্মে লাগে সন্ধ্যাদীপের আগায় লাগে, গভীররাতের জাগায় লাগে....... প্রায় প্রায়ই মর্মে এমন সব রঙ লাগে আমার। যদিও মনে রঙ লাগালাগি শব্দটা ফানি বা ব্যাঙ্গার্থেই ব্যাবহৃত হয় তবুও এই আজগুবী সব রঙের খেলা খেলবার সময় আমি সদা ও সর্বদা কেনো যেনো রবিঠাকুরের প্রিয় গানের এই দুটি লাইনই গুন গুন করি। যাই হোক বসন্তের এই মাতাল সমীরণের মন উচাটন দিনে এত এত হরতাল, স্কুল বন্ধ, গৃহবন্ধি অবস্থা, নো শপিং, নো ঘুরাঘুরি কার আর ভালো লাগে? আর এইসব হানাহানি মারামারির মাঝে মনে রঙ লাগবেই বা কি করে? তাই সব দুঃখ কষ্ট আর বেদনা ভুলে যেতেই খুলে বসলাম আমার রঙের ঝাঁপি। পেপারে, ক্যানভাসে, পটারীতে, কাপড়ে, দেওয়ালে, হাতে মুখে চোখে অনেক রঙ করা হলো, অনেকদিন গ্লাসের উপর আঁকিবুঁকি করিনা। কাজেই গ্লাসপেইন্ট ভুতটাই হঠাৎ মাথায় চেপে বসলো।

এখন গ্লাস পাই কোথায়? জানালার গ্লাসেই আঁকতে বসে যাবো নাকি আলমারীর গ্লাসই খুলে নেবো ভাবছিলাম। যাইহোক শেষ মেশ সমাধান হলো, বাসার কাছেই একটা গ্লাসের দোকান যেটা হরতালেও খোলা থাকে সেখান থেকে কিনে আনলাম ৮x৯ আর ১০x১২ সাইজ গ্লাসগুলো। আর তারপর পছন্দের ছবিগুলোর উপর গ্লাস রেখে তার উপর গ্লাস পেইন্টের আউটলাইনটা দিয়ে একে ফেললাম আউটলাইনগুলো। এরপর আউটলাইন ভালোমত শুকানোর জন্য অপেক্ষা। পরদিন মনের মত রঙ ঢেলে ঢেলে আর তাতে গ্লিটার্স ছড়িয়ে বানিয়ে ফেললাম আমার মনের মাধুরী মিশিয়ে নানান সব চিত্রকর্ম।

আমার পল্লীবালার ঘাঘরী-চোলি, ওড়নায় রঙ ঢেলে তাতে ছড়িয়ে দিলাম ঝিকিমিকি গ্লিটারস। আমার সপ্তবর্ণা গরবিণী ময়ুরী!!!! আমার রাজকুমারী চিত্রামালা। নৃত্য গীত পটিয়সী অপ্সরী, কিন্নরীদের বোন। উর্বশী অথবা মেনকা ফুলের সাজে বনদেবী। আমার কুংফু পান্ডা।

আমার মত যারা হরতালে বাসায় বসে বসে বোর হয় তাদের জন্য বা আমার প্রিয় ভাইয়া আপুনিদের পিচ্চু পাচ্চি বাবুগুলি যারা এখনও আন্টিমনির মত এইসব আজগুবী কাজগুলি করার সুযোগ পায়নি আমি তাদেরকে শিখিয়ে দিতে পারি কেমন করতে হয় আমার মত অং বং গ্লাস পেইন্ট। গ্লাস পেইন্ট রেসিপি- উপকরণঃ ১. গ্লাস পেইন্ট বক্স- এটার সাথেই রঙের আলগা ক্যাপসহ ছোট ছোট বোতলগুলো আর একটা আউটলাইনার থাকে। গুলশানের বই বিচিত্রা, গাউসিয়া রঙ বিতান বা নিউ মার্কেটের মর্ডানে পাওয়া যায়। ২. গ্লাস- যেমন ইচ্ছে তেমন সাইজ। গ্লাসের দোকানে গিয়ে কাঁটিয়ে আনতে হবে।

এই ঝামেলা না চাইলে পানি খাবার গ্লাস, ভাত খাবার প্লেট, তরকারীর বাটি অবশ্যই সেসব ট্রান্সপারেন্ট হতে হবে। চিনামাটিতে বা সিরামিকেও করা যায় তবে সে আবার অন্য ঝামেলা। যাইহোক দরজা জানালার কাঁচ বা আলমারীর গ্লাসও ইউজ করা যেতে পারে। ৩. ছবি - যে কোনো পছন্দসই ছবি। ৪. গ্লিটারস বা নানা রকম পুঁতি চুমকি, জরি।

- ডেকোরেশনের জন্য। প্রণালীঃ যে কোনো পছন্দসই ছবিটা গ্লাসের নীচে রেখে এঁকে নিতে হবে আউটলাইন দিয়ে। ২৪ ঘন্টা শুকানোর জন্য ওয়েট করতে হবে। আমি অবশ্য দুইঘন্টাও করিনা। তারপর পছন্দমত রঙ ঢেলে ঢেলে ছবিতে আঁকা প্রাকৃতিক দৃশ্য বা আমার মত মনুষ্যদৃশ্য ফুটিয়ে তুলতে কাপড়, গয়না, হাত মুখ পা রাঙিয়ে দিয়ে হবে।

এরপর গ্লিটারস, সিকোয়েন্সে ডেকোরেট করে ফেলা। এখন ফ্রেমকরে টেবিলে সাজিয়েও রাখা যায় বা দেওয়ালে ঝুলিয়েও দেওয়া যায়। অবশ্য আমার এই ছবিটা বুকিং হয়ে গেছে রিমঝিমনির কাছে। তবে বাকীগুলো আমি সব অনিন্দিতামনিকে দিয়ে দিলাম। আর কুংফু পান্ডাটা ইখতামিন ভাইয়াকে।

আঁধার নিশার বক্ষে যেমন তারা জাগে, পাষান গুহার কক্ষে নিঝর ধারা জাগে... মেঘের বুকে মেঘের যেমন মন্দ্র জাগে বিশ্বনাচের কেন্দ্রে যেমন ছন্দ জাগে তেমনি আমায় দোল দিয়ে যাও কাঁদন-বাঁধন ভাগিয়ে দিয়ে॥ ....................................... রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও যাও গো এবার যাবার আগে....... রাঙিয়ে দিয়ে যাক রঙগুলো সব সবার মনে............. একই শিরোনামে আরও একটি অনেক আগের পোস্ট Click This Link  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।