বাঙলা কবিতা ।। লিবিয়া : কী ঘটতে যাচ্ছে সেখানে ।। গাদ্দাফীর অদূরদর্শী একগুঁয়েমি আমি সমর্থন করি না পক্ষ-বিপক্ষ-প্রতিপক্ষের বাইরেও লিবিয়ায় রয়েছে সাধারণ নারী-শিশু ও জনতা তাদের মগজের কোষে কোষে সেঁটে দেয়া আতঙ্ক আর নিরাপত্তাহীনতার বিষ এবং মৃত্যুর হাতছানিময় প্রহরগুলি প্রতিনিয়ত নির্ঘুম নিঃস্বপ্ন আর বিপন্নতা এনে দিচ্ছে আমারও মগজে শান্তি, গণতন্ত্র, মানবাধিকার আর বিদ্রোহের নামে বেসামরিক পোশাকে পশ্চিমা-মদদপুষ্ট স্থানীয় সেনাদল আর তাদের নির্বিচার নৈরাজ্য আমি সমর্থন করি না বৈদেশিক বেতনভোগী লিবীয় বিদ্রোহীদের আমি সমর্থন করি না শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অযুহাতে ন্যাটোর সামরিক আগ্রাসন আমি সমর্থন করি না শুধু লিবিয়ায় নয়__ আফ্রিকায়, আরব দুনিয়ায়, তৃতীয় পৃথিবীর এক ইঞ্চি ঘাসেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ওইসব অভিযান আমি সমর্থন করি না ওইসব শান্তির দূত বিদ্রোহীদের কথা ভাবো! মানবাধিকার কিংবা মানুষের মুক্তি তাদের লক্ষ নয় তাদের অভীষ্টজুড়ে মেখে আছে ক্ষমতার হাতছানি এইসব ডামাডোলের ফাঁক-ফোঁকর গলিয়ে, লিবিয়ার কিংবা যে-কোনও দেশের জাতীয় সম্পদ পশ্চিমে পাচারের এই নান্দনিক কৌশল, আমি সমর্থন করি না গাদ্দাফী-পুত্র বিদ্রোহীদের হাতে__ এমন ঘোষণার পরপরই, তাকে দেখছি উল্লসিত সহস্র জনতার মাঝখানে... রাষ্ট্রীয় সেনাদের লক্ষ করে চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে কথিত বিদ্রোহীরা, ত্রিপোলী দখল করে নেবার দাবী তোলা বিদ্রোহীদের দেখতে পাচ্ছি, বিভিন্ন ভবনের গোপন আর নিরাপদ আড়ালগুলোতে, মাঝে মাঝে গুলিও ছুঁড়ছে... বেসামরিক জনতার হাতেও অস্ত্র দেখছি, গাদ্দাফীর সমর্থনে, আঙুলে বিজয়-চিহ্ন দেখাচ্ছে সরকারের সমর্থনে, বিপুল জনতা, বিজয়ের দাবীতে আঙুল দেখাচ্ছে বিদ্রোহীরাও... অবশ্য এর সবই পশ্চিমা টি.ভি ক্যামেরায়; আসলে কী ঘটতে যাচ্ছে, লিবিয়ায়? জাতিসংঘ কোথায় বসে দুগ্ধপান করে? তার হাতে আরও কিছু লেবেনচুস তুলে দাও! শিশুকাল কাটছে না তার, আঙুল চোষার মুদ্রা দোষও আছে; একজন জাতীয় নেতা চার দশকের অধিক কাল শুধুই স্বৈরতন্ত্রের ছড়ি ঘুরিয়েছে__ এমন বক্তব্য আমি সমর্থন করি না কী ছিলো সেই মন্ত্র, তার শেকড় খুঁজে দ্যাখো, কেন আজও এতো মৃত্যু আর অনিশ্চয়তা ছিঁড়েও এতো জনসমর্থন তার? তোমার জাতিসংঘকে বলো, আন্তর্জাতিক তত্ত্ববধানে গণভোট হোক! যদি গাদ্দাফীর জনপ্রিয়তা ভুল প্রমাণিত হয়, টেনে হিঁচড়ে নামাও তাকে! রাষ্ট্রপুঞ্জের শিশু, কোন জনতার স্বাধীনতা আর মুক্তি চাও তুমি, যখন তারা গাদ্দাকেই চায়? লিবীয়রা ভালো করেই জানে, পশ্চিমা প্রতিশ্রুতি মোতাবেক, বিদ্রোহীদের রাজ চলে এলে, কী ঘটবে, সেখানে! লিবিয়ার তেল দিয়ে কীভাবে পরিশোধ করতে হবে ন্যাটো-বাহিনীর অস্ত্র-রসদ আর সেনাদের বেতন; এসব অন্যদের দেখেই শিখে নিয়েছে তারা। ন্যাটো, বড্ড ন্যাংটো দেখাচ্ছে তোমাকে দুনিয়াব্যাপী মানুষের মনে প্রবোধ আর চোখে ধুলো-দেয়া চাতুরী ও তামাশা বন্ধ করো, ফিরিয়ে নাও তোমার ভাড়াটে বিদ্রোহীদের, বন্ধ করো নগ্ন-সামরিক-আগ্রাসন! নাভীর নিচের কাপড় সামলাও! বুকের অতলে যত্নে লুকানো সেই প্রকৃত বাসনা ঢাকতে ঢাকতে পাছার কাপড় বুক-অব্দি উঠে যাচ্ছে তোমার, হাঁদারাম ন্যাটো, তোমার নগ্ন পাছাটা সামলাও! মনে রেখো, গাদ্দাফী যে প্রজাতি, যে গণ___ তার সার্বজনীন নাম : হোমো সেপিয়েন্স!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।