আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিস আর ইবলিস

পাগলাটে ... ধোঁয়াশাপুর্ণ এক চরিত্র ... নিজেকে চেনার ব্যস্ততায় সর্বদা ব্যস্ত ... মাইলস্টোন কলেজে আর কিছুর অভাব থাক বা না থাক; স্টুডেন্ট আর টিচারের মাশাআল্লাহ কোন অভাব নেই । প্রায় প্রতিদিনই কলেজে ইউনিফর্ম ছাড়া(উলঙ্গ নয়) নিত্য নতুন ললনা দেখে দিলে শান্তি লাগতো; সেই ভুল ভাঙ্গতো পরীক্ষার সময়, যখন দেখতাম সেই ললনা’দের গার্ড আমার রুমেই পড়েছে (সো স্যাড)। যাই হোক, পোলাপাইন(বিশেষ করে আমাদের সেকশনের) সব দেখতাম কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টের এক মিস’র(নাম প্রকাশ করলে আমার মাইর খাওয়ার প্রবল চান্স রয়েছে) জন্য পাগল । আমার সেই মিসের প্রতি তেমন ভ্রুক্ষেপ কখনোই ছিল না । তাকে নিয়ে সবার এত মাতামাতিও আমার তেমন ভালো লাগতো না ।

তাই বলে সাধু বাবা ছিলাম; সেটাও না । কলেজে পুরো দুই বছরে ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের এক মিস’কেই কেবল ভালো লাগসে(don’t take it otherwise) ; ধরি তার নাম ‘এক্স’ । একদম শুরুর দিকের ঘটনা; একদিন কলেজ ছুটির পর সিঁড়ি দিয়ে নামছিলাম; হঠাত ধাক্কা । তাকিয়ে দেখি মিস !! উরিইইইই । শাহরুখ খান’র “ম্যায় হু না”র ঐ গান'টা মনে হল পেছন থেকে কেউ প্লে করে দিল ... “...তুমে জো ম্যায়নে দেখা... তুমে জো ম্যায়নে জানা... জো হোশ থা... ওহ তো গ্যায়া...” “ম্যায় হু না” শেষ হতেও সময় লাগলো না ।

ফিজিক্স’র আরেক স্যারের কাছে মিস’র ব্যাপারে ইনফরমেশন নিতে গিয়ে জানতে পারলাম মিস অলরেডী বিবাহিত । ইনার হাজবেন্ড নাকি মেজর । সব শুনে আমার তো পুরাই বালাতকার হয়ে গেল । ইশ ! এত তাড়াতাড়ী মিস’কে বিয়ে কে করতে বলসিল =\ ফার্স্ট ইয়ারের ফার্স্ট টার্ম পরীক্ষার ফার্স্ট ডে । ইংরেজি প্রথম পত্র ।

পানি না চাইতেই কোকা কোলা !! দেখি এক্স মিস’র গার্ড পরসে; ওহ ভি মেরে রুম মে !! আমি তো পুরাই **** ! দিল’মে আবার গিটার বাজা শুরু হল ... “...তুমে জো ম্যায়নে দেখা... তুমে জো ম্যায়নে জানা... জো হোশ থা... ওহ তো গ্যায়া...” মিস’র ডাকে হোশ ফিরলো । “এত অমনোযোগ কেনো? কতক্ষণ থেকে ডাকছি। ” মনে মনে বললাম, “মিস, অমনোযোগ’র কাহিনী বলে আর কি লাভ? আপনার লাভ তো সব ওই হারামী মেজরের জন্যে” । মুখে বললাম, “হঠাত একটা প্রিয় গানের কথা মনে পড়লো তো, তাই একটু...” । মিস একটা মুখ ভেংচি দিলেন বলে মনে হোল, উফফফ! ক্যায়া ভেংচি থা ওহ”!! একে তো ফার্স্ট টার্ম; তারপর আবার ইংরেজি পরীক্ষা ।

২ ঘন্টার মধ্যে ক্লাস প্রায় খালি । আমার খাতা’ও খালি’ই বলা যায় । মিস’কে দেখা যেন একটুও মিস না হয় এজন্য খাতার দিকে তাকানোর সময়ই পাইনি । মিস ততক্ষনে আমার অবস্থা কিছুটা বুঝে গেছেন মনে হোল(মনে গিটার বাজলে কি বাইরে শোনা যায়?)। আমার কাছে এসে বললেন, “দেখি তোমার খাতা”।

আমি একটু ইতস্তত করার পর দিলাম খাতা । “ইয়াল্লাহ, কিছুই তো প্রায় লিখোনি, তাড়াতাড়ি লিখো, সময় আর বেশি নেই” । কমন ডায়ালগ হলেও মিস’র থ্রোয়িংটা ছিল মচতকার ! ৪০ মিনিটে ৩ ঘন্টার পরীক্ষা দিলাম । সবার খাতা দেয়া শেষ । আমি আর সাক্ষর শুধু বাকি ।

ওই শালা’টাও দেখি খাতা দিয়ে বেরিয়ে গেল । আমি আর মিস শুধু রুম’এ(উফফ! হাউ রোমান্টিক ) । বেল’ও দিয়ে দিসে ততক্ষনে । মিসের বাকি খাতা গুলো গোছানো শেষ; আমার লেখাও মোটামোটি শেষ । মিসঃ কি, লেখা হইসে সব ? -জি মিস ।

মিসঃ এত লেট কেন ? লেখা বেশি স্লো ? -জি, না, মানে ওই যে বললাম না একটা প্রিয় গানের কথা মনে পড়ে গেসিলো তো, তাই একটু আরকি ... মিসঃ হুমমম... এখনো দাও না কেন ? (খাতা’র কথা বলছিলেন উনি) -মিস, “আমি তো আপনাকে দিতেই চাইতেসি(বেয়াদ্দপ); আপনিই তো আমার'টা(!) নিতেসেন না” !! =P =P =P যা হোক, এগুলো নিছকই মজা । টিচার-স্টুডেন্ট’র মাঝে ভক্তি-শ্রধা’র পাশাপাশি এক-আধটু মজা’ও থাকবে । আমরা স্টুডেন্ট অথবা টিচার’রা কেউ লিমিট অতিক্রম না করলেই হোল । ভালো-লাগা আর ভালো-বাসা নিশ্চয় এক জিনিস নয়, তাই না ? আমরা আশা করবোনা ভবিষ্যতে ভিকারুন্নেসা’র পরিমল’র মত শিক্ষকরুপি কোন পশু জন্ম নিক । এটাও আশা করবো না, কোন শিক্ষিকা তারই ছাত্রের কাছে লাঞ্ছিত হোক; সেটা কোন বাজে মন্তব্যের মাধ্যমেই হোক না কেন ।

[পরিশেষঃ মিস ‘এক্স’ মাইলস্টোন ছেড়ে চলে গেছেন আমরা ফার্স্ট ইয়ারে থাকতেই । প্রেগন্যান্সি ভ্যাকাশনে গিয়েছিলেন; আর জয়েন করেননি । শুনেছি মিস’র ছেলে হয়েছে । আফসুস কি বাত ক্যায়া বাতায়ু, মিস ‘এক্স’ যাওয়ার পরের দেড় বছরে আর কোন মিস’কে দেখে দিলে গিটার বাজে নাই । ] to be continued… ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।