উড়ে যাই, উড়ে যাই, উড়ে উড়ে যাই. . .
প্রথম পর্ব
কি রে, তুই তো দেখি হেভি পড়া শুরু করছস! মাস্টার হবি নাকি?
- ধূর, কি যে বলিস না
কেউ নাই,তুই একা বইসা বই পড়ছিস, আবার দেখি কিছু নোটও করছিস মনে হচ্ছে
- স্যারের সাইকোলজির ফরগেটিং মেথডগুলো তুলে নিচ্ছি, আর কিছু না, লেকচার লিখি নাই তো!
- ও,আরে এইটা কোনো বিষয়! কারো লেকচার তুলে নিলেই পারতি
হুম, তোর কি অবস্থা
- না রে, কিছু না। জাস্ট আসলাম আর কি
এগুতে থাকে কথার ঝুড়ি। মিতু ভাবছে এসেই যখন পড়েছি লাইব্রেরীতে তখন ফাহমিদের সঙ্গে আড্ডা দিলে খারাপ হয় না। ফয়সল স্যারের ক্লাসটাও ২ টায় হবে না। তিনটায় বাসে চলে যাওয়া যাবে বাসায়।
ফাঁকে এক ঘন্টা লাইব্রেরীতেই বসে কিছু নোট নিয়ে কথা বললেও হয়।
আচ্ছা তুই থাকিস কৈ, ক্লাসের পরে আর খুঁজেই পাই না!
- নিজে তো বিকেলে ক্লাস শেষেই টিউশনি ধরতে হয়, এটা এভাবে না বলে ফাহমিদ বলে.. আরে কতো কাজ থাকে রে, বাসে না গেলে আবার ঝামেলা, দৌড়ে তাও কোনো রকম বাসের হ্যান্ডেল ধরা যায়।
ফাহমিদ আসলে মিতু মেয়েটার ভক্তই বলা যায়। প্রথম যখন ক্লাসে আসতে শুরু করেছে তখন থেকেই কেন যেন, মেয়েটার মিশুক স্বভাব ও সদালাপী দৃষ্টিভঙ্গি তাকে কেমন যেন অন্যরকম ভাবতে খুচিয়ে বেড়ায়। ক্লাসে আগে আসলে মিতুর পাশেই বসার চেষ্টা করে ফাহমিদ।
সব সময় হয় না রাজীব, অলক, রুমির কারণে। তারপরও ফাহমিদের নীরব হৃদয়ের গতি যেন চলেই। মিতু কি তা বুঝে! ধূর! কি মনে করবে! অলক, রুমি কেউ বুঝলেই খবর আছে! সারা দুনিয়া খবর করে দেবে। নাহ্ কোনো কিছু বুঝানো যাবে না। এরকম ভাবনা বিপরীতে মিতুকেও কিছুটা ভাবায়।
মিতুর মাঝে মাঝে মনে হয়, ফাহমিদ কি ইচ্ছে করেই তার বিভিন্ন বিষয় জানতে, নোট এগিয়ে দিতে চায়। মেয়ে পটানো টাইপের কথা না বলতে পারলেও নানা ভাবে যা বলে তাতে মিতুও ভাবে, কি জানি হয়ত একটু বেশিই বন্ধুবৎসল, তবে সবার মতো বলতে পারে না। কিন্তু কাজ করে দিতে এগিয়ে আসবে ঠিকই। প্রেম ট্রেম কিছু তে অসম্ভব।
সেদিন ছিল শিপনের বার্থ ডে।
হঠাৎ করেই রোববার ক্লাস শেষ হওয়ার পর কয়েকজন বুঝা গেল কোথাও একত্রে যাচ্ছে। সেখানে ছিল মিতুও। ফাহমিদ এসে আভাস পেল কোনো অনুষ্ঠানে যাচ্ছে তারা। সে মনে মনে ভাবছিল যাবে। কিন্তু তার কাজ তো আটকে যাবে।
পরে জানা গেল সেটা আসলে শিপনের বার্থ ডে ছিলো না। ক্লাসের মেয়েদের নিয়ে পার্টি টাইপ কিছু দেয়ার জন্য স্মার্ট ছেলেদের এরেঞ্জড অনুষ্ঠান ছিলো।
ক্যাম্পাসের ঘটনাগুলো মনে পড়লে মিতুর মনে হয়, কেন একটু মাথা খাটালেই বা কি হতো। হয়তো রঙ্গিন কিছু মুহূর্ত ভিড়তো। ফাহমিদের সেই বোকামি ভরা আচরণ যখন রুমি, ফারজানাদের সঙ্গে আড্ডায় বসতো তখন শুনেই হাসি পেতো।
কয়েকজন যে টিটকারি করতো না তাও নয়।
সেদিন বড় আপু ফোন করে বললো, স্কুলের চাকরি কি এনজয় করছিস! মিতু মনে মনে বলে- দূর দেশ থেকে তো মনে হবেই এমন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তো বন্ধুদের মিস করতে হবে, এখানে বাড়িতে মা-বাবাও সাথে আছে। সেও চায় যেতে, তবে খুব সহসা নয়।
-আরো, জোস্।
আপু তুমি জানো,পড়ানোর মজাই আলাদা। আমি কিন্তু আবার বেশি পিচ্চিদের পড়াই না, এইট থেকে টেন---জবাব দেয় মিতু।
কানাডায় মাস্টার্সে ভর্তির জন্য এপ্লিকেশনটা এ সপ্তাহেই করে ফেলতে হবে। পরে দেখা যাক। মিতু স্কুলে এতো টা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কোন দিক দিয়ে সময় যায় টেরই পায় না।
সেই সকালে যাওয়ার পর বেলা ৩টা বেজে গেছে বাসায় আসতে। সারাটা দিনই গেছে অবশ্য বৃষ্টিতে।
বাইরে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। ছাদে যাবে কিনা ভাবছে মিতু। না , সে ছাদে যাবে না! ছাতাটা হাতে নিয়ে সে বেরিয়ে পড়লো বাইরে।
রাস্তা ধরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে হাটছে,ছাতা ছাড়িয়ে বৃষ্টি এসে পড়ছে গায়ে.. পড়ুক. একটু জোরে হাটবে নাকি! নাকি খালি রাস্তায় একটু দৌড় দেবে..
(চলবে.. কিনা বুঝতে পারছি না)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।