আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় : সুযোগ সুবিধার অভাবে ব্যবহারিক ক্লাস ব্যাহত

ভাল সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের অনেক ডিপার্টমেন্ট খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। বিশেষ করে কৃষি ও মাৎস্য-বিজ্ঞান অনুষদের ডিপার্টমেন্ট গুলোর অবস্থা অনেক করুন। ব্যবহারিক যন্ত্রপাতির অভাবে কৃষি অনুষদের মৃত্তিকা বিজ্ঞানের ব্যবহারিক ক্লাস অনেক দিন ধরেই বন্ধ আছে। সংশ্লিষ্ঠ শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক মোঃ শাহাদাত হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন-“অনেক দিন ধরেই ব্যবহারিক যন্ত্রপাতির অভাবে আমরা শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে পারছি না। এতে শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে কিছু শিখাতে পারছি না, যা ভবিষ্যতে তাদের প্রতিযোগীতামূলক ক্যারিয়ারে সমস্যার সম্মূখীন হবে।

” এ বিষয়ে একই বিভাগের আরেক সহকারী অধ্যাপক আজমুল হুদা বলেন-“আমাদের ডিপার্টমেন্টে কোন ল্যাব এটেন্ডেন্ট নাই। যার কারনে শিক্ষক হয়েও আমাদের ল্যাব এটেডেন্ট এর কাজ করতে হয়। লোকবল না থাকার কারণে ফাইল আনা দেয়া কিংবা এক কাপ চা খাওয়ার জন্য হলেও মাঝে মাঝে পিয়নের মতো কাজ করতে হয়। ” এ ব্যাপারে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মো: আব্দুল আজিজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- “ব্যাহারিক ক্লাসের যন্ত্রপাতি কেনার জন্য অর্থ চেয়ে আমি প্রশাসনের সাথে অনেকদিন ধরেই যোগাযোগ করেছি এবং কৃষি অনুষদের ডিনও এ বিষয়ে অবগত রয়েছেন। কিন্তু আশানুরূপ ফলাফল পাচ্ছি না।

” খোঁজ নিয়ে জানা যায় মৃত্তিকা বিজ্ঞান ছাড়াও কৃষি অনুষদের অন্যান্য ডিপার্টমেন্টগুলোতেও সুযোগ সুবিধার চরম অভাব রয়েছে। কৃষি রসায়ন বিভাগ ল্যাবরেটরিতে অনেক রাসায়নিক দ্রব্য নেই। প্লান্ট প্যাথলজি বিভাগেও একই অবস্থা। কৌলিতত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগেও ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই। নমুনা বা স্যাম্পল না থাকায় শিক্ষার্থীদের শীট নির্ভর পড়াশোনা করতে হয়।

কৃষি অনুষদের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী পাপিয়া দাস অনেকটা ক্ষোভের সাথেই বলেন-“ন্যুনতম হাতে কলমে যতটুকু শেখার দরকার সেগুলোও আমরা অনেকসময় পাচ্ছি না। একজন টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর ব্যবহারিক জ্ঞানটা অনেকটা ‘বেসিক নীড’ এর মতো। ” তিনি অনতিবিলম্বে এ সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের কাছে দাবী জানান। এদিকে মাৎস্য-বিজ্ঞান অনুষদে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে ব্যবহারিক অসুবিধার পাশাপাশি চলছে চরম শিক্ষক সংকট। একোয়াকালচার, ফিস টেকনোলজি ও ফিস হেলথ ম্যানেজমেন্ট বিভাগে রয়েছে মাত্র একজন করে শিক্ষক।

ফলে ক্লাস নেয়ার ক্ষেত্রে ছাত্র-শিক্ষক উভয়কেই চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাছাড়া মাৎস্য-বিজ্ঞান অনুষদের মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরিতে উল্লেখযোগ্য কোন যন্ত্রপাতি না থাকায় পার্শ্ববর্তী ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের ল্যাবরেটরিতে গিয়ে ক্লাস করতে হয়। মাৎস্য-বিজ্ঞান অনুষদের ছাত্র সৈয়দ মাশেকুল বারী এ সম্পর্কে বলেন-“এখানে মাছ চাষের জন্য কয়েকটি পুকুর থাকলেও ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য তা পর্যাপ্ত নয়। যে কয়েকজন শিক্ষকের জলাশয়ে গিয়ে ব্যবহারিক ক্লাস করানোর সদিচ্ছা রয়েছে লোকবল, যন্ত্রপাতির অভাব সহ বিভিন্ন সমস্যার কারনে তারা আর সাহস পাচ্ছেন না। ফলে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি।

” এ ব্যাপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচালক অধ্যাপক জামাল উদ্দিন ভূঞার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলো কে বলেন-“নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এমনিতেই সুযোগ সুবিধা অনেক কম। বর্তমানে কোন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে না থাকায় ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য যন্ত্রপাতি কিনতে অর্থের যোগান দিতে কষ্ট হচ্ছে। অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে। ” সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে চারটি অনুষদ রয়েছে। এগুলো হল ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্স, কৃষি, মাৎস্য-বিজ্ঞান এবং কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা।

এর মধ্যে প্রতিটি অনুষদের ডিপার্টমেন্ট গুলোতেই ব্যবহারিক নির্ভর পড়াশোনার কোর্স কারিকুলাম রয়েছে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.