আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেশ-জাতি, সবাই সংযত হোন

জানতে ভালোবাসি,...তাই প্রশ্ন করি... বিরাজমান পরিস্থিতি আমার কাছে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মনে হয়। কি মূল্যস্ফীতি, কি আইনশৃঙ্খলা, কি প্রশাসন, কি অর্থনীতি, কি পররাষ্ট্রনীতি, কি দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়ের পরিস্থিতি—সর্বত্রই একটা ক্রমাবনতিশীল চেহারা প্রতিদিন অবনতির দিকেই ধাবিত হচ্ছে। দেশের এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ-আশঙ্কা ব্যক্ত না করে আমি আর স্থির থাকতে পারছি না। দেশের এই অধঃগতিতে এমন একটা লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে আমাকে আশ্বাসের সুরে বলতে পারবে যে আমি যা দেখছি তা সব ভুল এবং আমার যে উদ্বেগ, এটার কোনো ভিত্তিই নেই। এমনকি যাঁরা দেশ চালাচ্ছেন, তাঁদের মুখ থেকেও এই অবনতিশীল অবস্থা সম্পর্কে মাঝেমধ্যে স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়।

আমি কারও ওপর দোষারোপ করার উদ্দেশ্যে এ কথা বলছি না। আমি সবাইকে বলছি, আপনারা দেশটাকে দ্রুত অবনতির পথ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে একসঙ্গে চেষ্টা করুন। যাঁরা সরকারে আছেন তাঁরা নমনীয় হোন, প্রজ্ঞা প্রদর্শন করুন এবং রাষ্ট্রদেহে যাতে ক্রমাগত ক্ষতের সৃষ্টি না হয়, তার জন্য সতর্কতার সঙ্গে কথা বলুন ও কাজ করুন। মানুষ বড় কষ্টে আছে। এই কষ্টের কথা স্বীকার করুন এবং মানুষের কষ্ট যাতে লাঘব হয় এবং মানুষ যাতে সুখে থাকে তার জন্য দয়া করে আপনাদের সব মেধা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা একত্র করে সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করুন।

যাঁরা সরকারে নেই এবং বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছেন, তাঁদেরও বলব, গতানুগতিক রাজনৈতিক কর্মসূচি পরিহার করে সত্যিকার গণতান্ত্রিক পন্থায় মানুষকে অযথা কষ্ট না দিয়ে গণতন্ত্রের পথে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখুন। সুপ্রিম কোর্ট একটি পরিশীলিত প্রতিষ্ঠান। বার এবং বেঞ্চ উভয়েরই উচিত এই স্থানকে রাজনীতির কলুষমুক্ত রাখা, সেখানে বার এবং বেঞ্চ কোনো পক্ষ থেকেই এমন প্রকাশ্য উচ্চারণ হওয়া উচিত নয় যে তারা বিশেষ একটা কিছু সহ্য করবেন না এবং এমন কথা বলবেন না যাতে আপনাদের অসহিষ্ণুতা বা বিচারকসুলভ সংযমের বিপরীতে ক্রুদ্ধতা বা আক্রোশের মনোভাব প্রকাশ পায়। ক্রমাগতভাবে এবং অতি দ্রুত সুপ্রিম কোর্টের এই অস্বাভাবিক অবস্থা আমার কাছে বড় বেদনাদায়ক। আমাদের চিত্তের উন্মত্ততা, আমাদের কর্মের নিষ্ঠুরতা ও আমাদের বিচারবুদ্ধির দেউলিয়াপনা আজ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ইতিপূর্বে আমি আমার দেশে এই চরম মত্তাবস্থা আগে কোনো দিন দেখিনি।

আপনারা সংযত হোন বচনে-বাচনে, কর্মে ও আচরণে; নিজ নিজ আসনের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে চেষ্টা করুন। আমাদের বুদ্ধিজীবী সমাজের কাছে আমার আবেদন রইল, দেশের বহু সংকটে আপনাদের বুদ্ধিদীপ্ত সতর্ক অবস্থান ও হস্তক্ষেপ অনেক সময় সরকার ও সরকারবিরোধীদের সংযত হতে সাহায্য করেছে। ভবিষ্যতেও আপনাদের কাছে সেই ভূমিকা প্রত্যাশিত। দেশের এই মহাসংকটে আপনারা যেখানেই অরাজকতা দেখবেন সেখানেই গলা উঁচু করে তার প্রতিবাদ জানাবেন এবং অবনতিশীল বাংলাদেশকে চূড়ান্ত অধঃপতনের হাত থেকে রক্ষা করবেন। আমি বিনয়ের সঙ্গে সবাইকে সংযত আচরণের আহ্বান জানাচ্ছি।

মোস্তাফা কামাল: সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি। মূল খবর এখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে কে জেগে উঠবে এই অপশাসন ঠেকাতে? কারণ বর্তমানে এই সরকারের বিরুদ্ধে যে কথা বলে তাকেই তো রাজাকার বা যুদ্ধাপরাধীদের বাচাঁনোর পায়ঁতারা বা বিচার ব্যবস্হা বাধাগ্রস্হ করার অপবাদ বা ষড়যন্ত্রকারী বা পুলিশী নির্যাতন ও হয়রানি হতে হয় বা আদালত অবমাননায় ডেকে পাঠায়। যা আমি ব্যক্তগত ভাবে এইরুপ পরিস্হিতি আগে কখনো দেখেনি। যেখানে গণ মানুষের নানা সমস্যা ও নিত্য চাহিদা গ্যাস,বিদ্যূৎ,পানি, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক উর্ধ্বগতি,বেকারত্ত হার বৃদ্ধি, বিনিয়োগ ও অর্থনীতিতে মন্দা ভাব, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট হাতে সাধারণ মানুষ জিম্মি, বাসা ও বাস ভাড়া বৃদ্ধি, দলীয় সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি, দলীয় ছাত্রদের হাতে শিক্ষক প্রহার,পুলিশের সরাসরি সহায়তায় গণ পিটুনিতে মানুষের মৃত্যু, পুলিশি নির্যাতন। সেখানে সরকারের কোন মাথা ব্যথা নাই।

বরং মামলা হামলা, কার মান গেল কার অবমাননা হলো তা নিয়েই ব্যস্ত আর ব্যস্ত ভারত কে তুষ্ট করতে। আমার মনে হ্য় দিন দিন আমাদের দেশের আইন-শৃংঙ্খলা পরিস্হিতি এতো খারাপের দিকে যাচ্ছে যে গণমানুষ আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আস্হা ও শ্রদ্ধাবোধ হারিয়ে ফেলছে এবং এমন অবস্হা হতে পারে যে আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনী ও আদালতকে অচিরেই মানুষ বুড়ো আঙ্গুল দেখাবে। পরিশেষে বলি হে মহান আল্লাহ্ পাক আমাদের এই দেশেকে আপনি রক্ষা করুন। আমিন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।