পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি ডাক্তার হিসেবে যে কোন অবস্থাতেই সুস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যরক্ষার কথা মাথায় চলে আসে। এই গরম, সর্দিগর্মির মওসুম, নিরাপদ পানির অভাব- এর সময়েও তার ব্যতিক্রম নেই। নিচে একটি রেসিপি দিচ্ছি যা স্বয়ংসম্পূর্ণ , পুষ্টিকর এবং একাধিক ভাবে ব্যবহার যোগ্য ।
উপকরণঃ
মুরগীর মাংস - ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি
চাল- ২-৪ কাপ
ডাল - মুসুরির ডাল ১ কাপ অথবা পাঁচ মিশালী ডাল দেড় থেকে দুই কাপ
পানি- ১ থেকে ২ লিটার
পিঁয়াজ- মাঝারি সাইজের ১টা
তেল বা মাখন - না দিলেও চলে। ১-২ চা চামচ ।
কাঁচামরিচ- না দিলেও চলে। স্বাদের জন্য ২-৩টা ।
আদা - ১ ইঞ্চি / ১ চা চামচ
রসুন- ২-৩ কোয়া অথবা ২/৩ (তিন ভাগের দুই ভাগ) চা চামচ
সবজিঃ
ফুল কপি - ১ কাপ
গাজর - ১ কাপ
আলু- ১ কাপ
মটরশুটি - ১/২ কাপ
বরবটি- ১/২ কাপ
অন্য যে কোন সুস্বাদু সবজি যোগ করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন, সবজির স্বাদ যেন একটা আরেকটার সাথে সমন্বয় বজায় রাখে। বাধাকপি, লাউ, পেপে, ঝিঙা, কুমড়া, ঢেড়স , লাল শাক, ডাটা শাক, পালং শাক যা ইচ্ছা তাই দিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারেন।
তবে, সবজি যেন এত বেশি না হয় যাতে মাংস আর ডালের স্বাদ হারিয়ে যায়। মাংস ৫০০ গ্রাম , চাল ২ কাপ, ডাল এক কাপ হলে সবজি সব মিলিয়ে ৩-৪ কাপের বেশি হওয়া উচিত হবে না। সেইভাবে মেপে নিন।
আস্ত গরম মসল্লা ঃ
দারচিনি - ২ ইঞ্চি
গোল মরিচ- ১০ টা
তেজপাতা - ২টা , বড়
লবঙ্গ - ৪ টা
এলাচ - ৫ টা , সবুজ
লবণ - ১ বা দেড় চা চামচ ( মাংস, চাল ও সবজির পরিমাণের উপরে বাড়বে কমবে)
প্রস্তুত প্রণালীঃ
মাংস কেটে ধুয়ে নিন। যাচ্ছেতাই সাইজে কাটুন, কিচ্ছু যায় আসে না।
বড় ছোট কোন ব্যাপার না। কাটলেই হলো।
ডাল বেছে ধুয়ে নিন।
সবজি খুব ভালো করে ধুয়ে , তারপর কেটে টুকরো করে রেখে দিন। সবজির সাইজ মোটামুটি ১ ইঞ্চির কাছাকাছি রাখলেই হবে।
আলু গাজর ছোট ছোট কিউব করুন।
এবার মাংস, ডাল আর সব মসল্লা পানিসহ চুলায় বসিয়ে দিন। ৩০ মিনিট বেশি জ্বালে ফুটান। এবার চাল দিন। পাঁচ মিনিট ফুটলে সবজি দিন।
পাতিলে বেশ পানি থাকবে। কম হলে পানি যোগ করুন। মাঝে মাঝে নেড়ে দিন যেন তলায় না ধরে যায়। ১০ মিনিট পরে লবণ টেস্ট করুন। পছন্দ অনুযায়ী ঘনত্ব বাড়ান বা কমান।
কখন নামাবেন?
সবজি সিদ্ধ হয়েছে।
চাল ডাল ভেঙে গলে মিশে যাচ্ছে ।
মাংস হাড্ডি থেকে খুলে আসছে।
নামানোর আগে লবণ দেখে নামিয়ে নিন।
প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তনঃ
সাদা খিচুড়ির মত করেঃ
চাল, ডাল, সবজি মিশানো উপরের খাবারটি একটি সুষম খাদ্য।
যে কোন বয়সের জন্য উপকারী এবং খুবই সুস্বাদু। সাধারণ সুস্থ মানুষ এমনি খেতে পারেন। সাথে কোন ঝাল ঝাল তরকারি দিয়ে খেতে পারেন। ইফতার বা সেহরীতে আদর্শ। যারা এসিডিটি বা গ্যাসে ভুগেন- নিশ্চিন্তে খান।
পানি একটু কম করে দিবেন রান্নার সময়ে যাতে রান্না শেষের সাথে পানি শুকিয়ে আসে।
পেট খারাপ, হজমে সমস্যা , স্টমাক ফ্লুঃ
আস্ত গরম মসল্লা গুলো উঠিয়ে নিন। একটা ব্লেন্ডারের অর্ধেক ভরুন। দুই কাপ ফুটন্ত পানি দিন। ব্লেন্ড করুন।
হয়ে গেলো পুষ্টিকর স্যুপ । ১ ঘন্টা পর পর ১ কাপ করে খাওয়ান। সাথে প্রচুর পানি। বমি হলেও খাওয়ান। পছন্দ অনুযায়ী ঘন বা পাতলা করুন।
গলা ভাত বা ঢিলা খিচুড়ির মতঃ
এইটাও যে কেউ খেতে পারেন। যাদের রান্নার মেধা অত্যন্ত প্রখর তারা বেশি করে পানি দিয়ে এইটা বানান। তলায় ধরবে না। সেমি সলিড একটা জিনিস হবে কিন্তু খেতে খুবই মজা। দরকার হলে ম্যাগির চিকেন কিউব যোগ করেন ১-২টা মাংস সিদ্ধ করার সময়ে।
খেয়াল রাখবেন- ডাল দেওয়ার পর থেকে নাড়তে হবে এবং চুলার সামনে থেকে সরা যাবে না।
অন্যান্যঃ
মাংসের বদলে মুরগীর গিলা -কলিজা, চিংড়ি মাছ, মাশরুম , কাঁটা ছাড়ানো মাছ ইত্যাদি দিয়ে করতে পারেন। সেক্ষেত্রে চিকেন/ফিশ/ভেজিটেবল স্টক মিশিয়ে নিবেন।
মাংস/মাছ/সবজি কে লবণ দিয়ে ফুটিয়ে ঝোলটাকে ঘন করলে যা পাওয়া যায় ওটাকেই স্টক বলে। বাড়িতে বানাতে পারেন বা স্টকের কিউব (ম্যাগি) কিনতে পাওয়া যায়।
ওটাও ব্যবহার করতে পারেন।
সাবধানতাঃ
মাশুরুম বা কোন উপকরণে এলার্জি আছে কি না দেখবেন। রক্তে গ্লুকোজ (ডায়াবেটিক) বা ট্রাই গ্লিসারাইড বেশি হলে চাল বেশি খাবেন না।
চাল ডালের তরকারীতে পানিটা উপরে উঠে এসে ফুটতে থাকে। মনে হবে অনেক পানি।
কিন্তু ডাল বা চাল তলায় গিয়ে ধরে যায়। সুতরাং, সাধু সাবধান!
রোযায় সুস্থ থাকুন। শুভ ব্লগিং ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।