আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৩ বছরের ছেলেকে বলাৎকার

রাজধানীসহ সারাদেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বিকৃত যৌন লালসা, ধর্ষণ, সমকামিতার মতো জঘন্য ঘটনা। প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে নারী ও শিশুরা হচ্ছে যৌন নির্যাতনের শিকার। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে এ বিকৃত রুচির লালসা চরিতার্থ করার হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। গৃহবধূ, যুবতী, কিশোরী এমনকি তিন বছরের বাচ্চা ছেলেরাও রেহাই পাচ্ছে না ধর্ষকদের লোলুপ দৃষ্টি থেকে। বর্বরোচিত এমনই এক সমকামিতার (বলাৎকার) ঘটনা ঘটেছে মদনাড়া, খালপাড়, ধামরাই, ঢাকা এলাকায়।

ফুটফুটে শিশু মজিবর রহমান আকাশ (৩), বাবা-মা’র অত্যন্ত আদরের অবুঝ এ শিশুটি গত ২৩-০৭-১১, বেলা ১১টা ৩০ মিনিট, জমি দেখাশুনার ম্যানেজার কর্তৃক যৌন নির্যাতনের (বলাৎকার) স্বীকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শিশুটির মা হোসনে আরা বেগম, স্বামী আব্দুল জব্বার, বাদী হয়ে ৩৭৭ পেনাল কোর্ট ধারায়, ধামরাই থানায় মামলা করেছেন। মামলা নং-৩৮, তারিখ: ২৪-০৭-১১। হোসনে আরা বেগম এ প্রতিবেদকে জানান, তার তিন ছেলের মধ্যে সে ছোট। সমকামিতায় আসক্ত ধর্ষক ইমদাদুল হক (২৫), বাবা নূর মোহাম্মদ (শুকুর আলী), সাং-মাকরখোলা, ধামরাই, ঢাকা।

জমি দেখাশুনার ছলে প্রায়ই বাড়িতে যাতায়াত করত। গত ২৩-০৭-১১ সকালে হোসনে আরার দুই ছেলে স্কুলে, স্বামী আব্দুল জব্বার ব্যবসার কাছে বাজারে চলে যান। মা হোসনে আরা আকাশকে গোসল করিয়ে গাভীর দুধ দোয়াতে যান। পাষ- ইমদাদুল ফাঁকা বাড়ি থেকে খেলার লোভ দেখিয়ে বাড়ির পশ্চিমপাশে মো. হাসান আলীর পাটক্ষেতে নিয়ে যায় আকাশকে। সেখানে সে নির্মমভাবে আকাশকে বলাৎকার করে।

নির্যাতনের ফলে আকাশ ‘মা’ ‘মা’ বলে চিৎকার করায় হোসনে আরা দৌড়ে পাটক্ষেতে গিয়ে দেখেন শিশু আকাশের পা বেয়ে রক্ত ঝড়ছে। অবুঝ শিশুটি কেঁদে কেঁদে হাত উঁচিয়ে ইমদাদুরের দিকে দেখিয়ে মাকে যেন বুঝাতে চাইছিল ঘটনার বিবরণ। হোসনে আরা ধর্ষককে ধরতে চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা আসার আগেই ইমদাদুল চম্পট দেয়। যাওয়ার আগে হোসনে আরাকে ঘটনার ব্যাপারে কাউকে কিছু বললে জানে মেরে ফেলবে বলেও হুমকি দেয় বলে জানান তিনি। প্রতিবেশীদের সহায়তায় অজ্ঞান শিশুটিকে প্রথমে ধামরাই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অবস্থার অবনতি ঘটলে ডাক্তারের পরামর্শে পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সেকান্দার আলী অপরাধকণ্ঠকে জানান, এক আসামি গ্রেফতার আছে, যেহেতু ডাক্তারি রিপোর্ট এখনো হাতে পাইনি, তাই মন্তব্য করার সময় আসেনি আশক ফাউন্ডেশনের প্রধান সম্বনয়কারী ফিরোজা বেগম এ প্রতিবেদককে জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয় বিদায়ক। তিনি বর্তমান প্রেক্ষাপটের ধর্ষণের কারণ হিসেবে সামাজিক ও পারিবারিক পৃষ্টপোষকতা, হীনমন্যতা, বিকৃত রুচির যৌন লালসাগ্রস্ত পুরুষদের মেয়ে এবং শিশুদের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণ এবং সামাজিক অবক্ষয়কেই দায়ী করেন। তিনি জানান, পারিবারিক নেতিবাচক শিক্ষা কিংবা দৃষ্টান্তের শিকার পুরুষদের মধ্যে ধর্ষণের প্রবণতাই বেশি। বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরো থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যানে দেখা যায় চলতি বছরে জুলাই মাসে ১৬টি, জুনে ৭টি, ফেব্রয়ারিতে ৯, জানুয়ারিতে ৫টি, শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

সম্প্রতি কয়েকটি আলোচিত ধর্ষণের ঘটনা, যেমন রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুলছাত্রী, আদাবরের তিন বছরের শিশু সিনথিয়া, ময়নসিংহের নান্দাইলের ছাবিগ, ঢাকার কলাবাগানে ৩ বছরের শিশু, টঙ্গীতে ঘুমন্ত পাঁচ বছরের শিশু অঞ্জনা, বি-বাড়িয়ায় ১২ বছরের রাজিয়া, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বাগানে ধর্ষিত হয় ৯ বছরে শিশু, লালমনিরহাটের ৯ বছরের কন্যা, বেনাপোলে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী। এছাড়াও শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, পীরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, ঝিনাইদহ, বগুড়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ধর্ষণের ঘটনা জনমনে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। জানা যায়, এক মাসে সারাদেশে ১০৯টি যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় ১৪টি দৈনিকে উঠে আসা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্যে দেখা যায়- ২০০৫ সালে শ্লীতাহানির শিকার হয়েছে ১৪২ জন, ২০০৪ সালে ১৪১ জন, ২০০৭ সালে ১১৪ জন, ২০০৮ সালে ১১১ জন। ৪ বছরে ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে ১৬৫৯টি তাজা প্রাণ।

দেশে নারী ও শিশু যৌন নির্যাতন ও সমকামিতা ব্যাপক হারে বাড়ছে। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও নারী ও শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বিজ্ঞজনের অভিমত, ধর্মীয় শিক্ষা পাঠ ও চর্চার মাধ্যমে কিছুটা সুফল পাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া যৌন নির্যাতনের ঘটনা যেন বৃদ্ধি না পায় তার জন্য প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। সেই সাথে যৌন হয়রানি বা নির্যাতনের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে এ প্রবণতা ধীরে ধীরে হ্রাস পাবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।