বাংলাদেশের গণমাধ্যম আমাদের অনিয়মগুলো দ্রুত তুলে ধরছে। এই গণমাধ্যম না থাকলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আবদুল কাদেরের লাশও খুঁজে পাওয়া যেতো কিনা সন্দেহ (যদিও আবদুল কাদের হাইকোর্টে এসেছে হুইল চেয়ারে)। গত ১৫ জুলাই আবদুল কাদের খালার বাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ফিরছিল। সাদা পোশাকধারী পুলিশ তাকে ডাকাত সন্দেহ করে দুদক কার্যালয়ের সামনে সেগুনবাগিচা থেকে গ্রেফতার করে। ডাকাতি, অবৈধ অস্ত্র রাখা ও গাড়ি ছিনতাইয়ের অভিযোগে আবদুল কাদেরের বিরুদ্ধে তিনটি মামল দিয়েছে পুলিশ।
অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক এবং বিভিন্ন তথ্যমতে, আবদুল কাদের কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেই মারধর শুরু করে, চাপাতি দিয়ে পায়ে আঘাত করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলাতে কটাক্ষ করে আরো বেশি মারধর করে। পরে খিলগাঁও থানায় নিয়ে তাকে পাশবিক নির্যাতন করে। এমনকি আদালতের হাজতখানায় নেয়া হলেও তাকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হয়নি। কতোটা বর্বর, নিষ্ঠুর আচরণ।
পুলিশের ঘুষ খাওয়া থেকে শুরু করে উস্কানি দেয়া, গুম করা, সন্ত্রাসী কাজে সহযোগিতা করা, অন্যায়ভাবে পথচারীদের হয়রানি ইত্যাদি অনিয়মের কথা গণমাধ্যমে জানা গেছে। গণমাধ্যম সক্রিয় না হলে পুলিশের এমন বর্বরতার খবর আড়ালেই থেকে যেতো। আইন কি শুধু সাধারণ মানুষের জন্য? পুলিশ যখন যাকে ইচ্ছে ধরে নিয়ে যাবে, মারধর করবে; মামলা দেবে— এ কেমন কথা!
কাউকে দোষী প্রমাণ করা ছাড়াই পুলিশ তাকে মারতে পারে— এ আবার কেমন আইন। মানবাধিকার, মানবাধিকার বলে আমরা চিত্কার-চেঁচামেচি করছি সারাবিশ্ব জুড়ে। এখানে মানবাধিকার কোথায়? আবদুল কাদের গণপিটুনিতে আহত হয়েছে—এরকম মিথ্যা বলতেও পুলিশ কর্মকর্তার বিবেকে বাধে না।
বিবেকবর্জিত মানুষ কী করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করবে?
পুলিশের আচরণবিধি, অপরাধীর সঙ্গে পুলিশের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা, সন্দেহজনক ব্যক্তিকে ধরে হয়রানি না করা, যখন তখন মানুষকে লাঠিপেটা করা ইত্যাদি অমানবিক কাজগুলো সম্পর্কে রাষ্ট্রীয়ভাবে নীতি নির্ধারণ করা উচিত। তা না হলে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।