সবিনয় নিবেদন
এই কাহিনীর সন্ধান সর্বপ্রথম আমাকে দেন মুক্তিযোদ্ধা নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু।
তারপরে অনেকদিন এই কাহিনী আমাকে তাড়িয়ে ফেরে। অতঃপর আমি একটা উপন্যাস লেখার
আশায় মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে শুরু করি। শহীদ আজাদের আÍীয়-স্বজনের খোঁজ
পাওয়ার জন্যে আমি পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও দিয়েছিলাম। বিজ্ঞাপনের সূত্র ধরেই শহীদ আজাদের সম্পর্কে
যাঁরা জানেন, এমন অনেকের সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটে।
তাঁরা আমাকে দিনের পরে দিন তথ্য দিয়ে,
উপাত্ত দিয়ে সাহায্য করেছেন। যাঁদের সাক্ষাৎকার আমি নিয়েছি, তাঁদের নামের তালিকা এ বইয়ের
শেষে সংযুক্ত করে দিলাম। তাঁদের সকলের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। আর বেশ কিছু বইয়েরও সাহায্য
দরকার হয়েছে। সেই তালিকাটাও এই বইয়ের শেষে থাকল।
এই উপন্যাস রচনা করতে গিয়ে আমি নানাজনের কাছ থেকে উৎসাহ, অনুপ্রেরণা পেয়েছি।
ফেরদৌস আহমেদ জায়েদের কথা এখানে বিশেষভাবে উলেখ
করতে হয়। সাপ্তাহিক ২০০০-এর
সম্পাদক শাহাদত চৌধুরী আমাকে দিনের পর দিন সময় দিয়েছেন, সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, উৎসাহ
দিয়েছেন এবং এই বইয়ের পাণ্ডুলিপি সংশোধন করে দিয়েছেন। তাঁদের কাছে আমার ঋণ জীবনেও শোধ
হবার নয়।
এই উপন্যাস রচনাকালে এবং ঈদসংখ্যা প্রথম আলো ২০০২-এ এর সংক্ষিপ্ত রূপ প্রকাশের পরে
অনেকের কাছ থেকেই আমি অনেক উৎসাহ পেয়েছি।
বিশেষ করে পাঠকেরা, তাঁরা ঈদসংখ্যা প্রথম
আলো পড়ে এবং সাপ্তাহিক ২০০০-এ ১৬ ডিসেম্বর ২০০২-এ প্রকাশিত আমার লেখা প্রচ্ছদকাহিনী
শহীদ আজাদের মায়ের সন্ধানে পড়ে, ফোনে, চিঠিতে ও সরাসরি কথা বলে আমাকে বিশেষভাবে
অনুপ্রাণিত করেছেন। আলাদা করে আমি আর তাঁদের নাম বলতে চাই না, তাঁরা নিশ্চয়ই এই লেখা
থেকেই আমার কৃতজ্ঞতাটুকু গ্রহণ করে নেবেন।
এখন একটা দরকারি কথা বলা প্রয়োজন। এই উপন্যাস সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত। তবে এটা
ইতিহাস নয়, উপন্যাস।
ইংরেজিতে যাকে বলে ফিকশন। ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর বেলায় সত্যতা
রক্ষার চেষ্টা করেছি পুরোপুরি। যেমন শহীদ আজাদের চিঠিগুলো আসল। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক
ঘটনাগুলোর বেলায় অনেক জায়গায় কল্পনার আশ্রয় নিতে হয়েছে, এটা বোধহয় বলাই বাহুল্য। সব
ফিকশনেই এটা নেওয়া হয়।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মিলি-সংক্রান্ত বিবরণগুলো পুরোটাই বানানো।
কিন্তু একটি মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ার কথা আজাদ নিজেই লিখেছিলেন তাঁর মাকে লেখা চিঠিতে।
এই উপন্যাস কাউকে আঘাত দেবার বাসনা থেকে রচিত নয়, বরং বাঙালির এক বীরোচিত
আখ্যানকে তুলে ধরার আশায় লিখিত ও প্রকাশিত। যদি কোনো অংশ কাউকে সামান্যতম অস্বস্তিতে
ফেলে, তবে আমি তাঁকে বলব, ওই অংশটুকু সম্পূর্ণ কাল্পনিক ধরে নেবেন।
প্রিয় পাঠক, আপনার মঙ্গল হোক, মঙ্গল হোক এই দেশটার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।