কি বলবো ভাল থাকবেন দ্বীনের দাওয়াত মানে কি ---কালেমা, নামাজ, এলমে জিকির, দাওয়াত, সহীহ নিয়ত, একরামুল মুসলেমিন?
অবশ্যই এগুলো দ্বীনের দাওয়াতের অংশ।
কালিমাহ :
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুরাতুল বাক্বরার ১৬৩ নাম্বার আয়াতে বলেন, وَإِلَٰهُكُمْ إِلَٰهٌ وَاحِدٌ لَّا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ আর তোমাদের উপাস্য একইমাত্র উপাস্য। তিনি ছাড়া মহা করুণাময় দয়ালু কেউ নেই।
সুরায়ে নিসার ১৩৬ নাম্বার আয়াতে বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন কর এবং বিশ্বাস স্থাপন কর তাঁর রসূলের উপর।
কালিমায়ে তাইয়্যিবাহ পাঠ ও তার উপর আমলের মাধ্যমে উক্ত আয়াতদ্বয়ের উপর আমল হয়।
সুতরাং, আল্লাহ তাআলা যে বিষয়ে আদেশ করেছেন তার উপর আমল করা বা লোকজনকে তার দাওয়াত দেওয়া অবশ্যই দ্বীনের দাওয়াতের অন্তর্ভুক্ত।
নামাজ :
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুরাতুল আনকাবুতের ৪৫ নাম্বার আয়াতে বলেন, وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَىٰ عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنكَرِ এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে।
সুতরাং যেকাজের জন্য আল্লাহ আদেশ করেছেন অর্থাৎ নামাজ এবং যে নামাজের মাধ্যমে যাবতীয় অন্যায় ও অশ্লিল কাজ থেকে বিরত থাকা যায় বলে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দিয়েছেন সেই নামাজের দাওয়াত দেওয়া অবশ্যই দ্বীনের দাওয়াতের অন্তর্ভুক্ত।
এলেম (জ্ঞানঅর্জণ) :
আনাস ইবনে মালেক রাঃ বলেন, عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, ধর্মিয় এলেম (জ্ঞাণ) অর্জণ করা প্রতিটি মুসলামের উপর ফরজ।
হাদিসটি পাওয়া যাবে : ইবনু মাজাহ ১/২৬০/২২০ নাম্বার হাদিস। (শায়খ আলবানী হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন)
সুতরাং এই এলেম শিক্ষার আদান-প্রদান দ্বীনের দাওয়াতের অন্তর্ভুক্ত।
যিকির :
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুরাতুল আনকাবুতের ৪৫ নাম্বার আয়াতের একাংশে বলেন, وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ আল্লাহর স্মরণ (যিকির) সর্বশ্রেষ্ঠ।
এই আয়াত দ্বার প্রমাণিত যে, যিকির করা সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত।
সুরাতুল আহজাবের ৪১ নাম্বার আয়াতে বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا كَثِيرًا মুমিনগণ তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ (যিকির) কর।
সুতরাং এই যিকিরের দাওয়াত দেওয়া দ্বীনের দাওয়াতের অন্তর্ভুক্ত।
একরামুল মুসলিমিন :
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুরায়ে আলে-ইমরানের ১৩৪ নং আয়াতে বলেন, وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, বস্তুতঃ আল্লাহ সৎকর্মশীলদিগকেই ভালবাসেন।
সুতরাং এই আয়াতে অন্যের প্রতি একরাম করার ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। আর বলা হয়েছে এটা সৎকর্ম। বস্তুতঃ আল্লাহ সৎকর্মশীলদিগকেই ভালবাসেন।
তাই যে কাজকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ভালবাসেন তা মানুষদের কে শিক্ষা দেওয়া দ্বীনের দাওয়াতের অন্তর্ভুক্ত।
সহিহ নিয়ত :
ওমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাঃকে বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে দুনিয়া লাভের অথবা কোন নারীকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে - সেই উদ্দিশ্যই হবে তার হিজরতের প্রাপ্য।
إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوْ إِلَى امْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ
এছাড়াও হাদিসিট আরো পাওয়া যাবে :
আবু দাউদ-৬/১১৮/১৮৮২ ,মিশকাতুল মাছাবিহ-১/১/১ নাম্বার হাদিসে।
নিয়তকে সহিহ করা আমল কবুল হওয়ার শর্ত। সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটির দাওয়াত দেওয়া দ্বীনের দাওয়াতের অন্তর্ভুক্ত।
তাবলীগ :
তাবলীগ শব্দের অর্থই হল দ্বীন প্রচার করা। উপরের কার্যক্রমগুলো প্রমাণ করেযে তারা দ্বীনের দাওয়াতের প্রচার তথা তাবলীগ করছে।
তবে, আমি অবশ্যই একথা বলছিনা যে, দ্বীনের কাজ কেবল এতটুকুই।
আরো অনেক কাজ রয়েছে। তারা যেহেতু এতটুকু সঠিকভাবে সফলতার সাথে করে যাচ্ছেন তাই আসুন আমরা এগুলোর সাথে সাথে আরো কিছু যা কুরআনও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত তা খুজেঁ খুজে বের করে সেগুলোর উপর আমল করার চেষ্ঠা করি ও অন্নকেও দাওয়াত দেই। তাহলেই আমরা আরো অনেক এগিয়ে যেতে পারবো ভাই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।