আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুভ জন্মদিন: ক্রিস্টোফার নোলান দ্যা মাস্টারমাইন্ড

© এই ব্লগের কোন লেখা আংশিক বা সম্পূর্ণ আকারে লেখকের অনুমতি ব্যতীত অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না। আপনাকে যদি আমি প্রশ্ন করি, বর্তমান সময়ে ৩জন ডিরেক্টরের নাম বলুন যাদের সিনেমা আপনার কাছে ভয়ংকর লেভেলের জটিল লাগে? আমি শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি এর মধ্যে ক্রিস্টোফার নোলানের নাম থাকবেই। আজকে এই ভীষণ লেভেলের মেধাবী আর ব্রিলিয়ান্ট লোকটির ৪১ তম জন্মদিন। তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা এবং স্যালুট জানিয়ে আজকের পোস্টটি শেয়ার করলাম। আমরা যারা মুভি দেখি,তাদের কে্উ নোলানের মুভি দেখে নাই এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।

৩০শে জুন, ১৯৭০ সালে লন্ডনে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবা ইংরেজ এবং মা মার্কিন। সে হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য উভয় দেশেরই নাগরিক। তাঁর বাবা পেশায় ছিলেন advertising copywriter আর মা ছিলেন flight attendant। তাঁর একটি ছোটো ভাই রয়েছে,নাম জোনাথান নোলান।

আপনারা যারা নিয়মিত মুভির খবরাখবর রাখেন তাদের কাছে মোটেই অজানা থাকার কথা নয়,এই জোনাথান নোলানও কিন্তু একজন অসাধারন প্রতিভাবান একজন স্ক্রিপ্ট রাইটার। আজকে নাহয় তার কথা থাক। আজকের দিনটা শুধুমাত্র ক্রিস্টোফার নোলানের জন্য। ডুয়েল সিটিজেনশিপ থাকায় নোলানের শৈশবকাল কেটেছে London and Chicago তে। English literature নিয়ে University College London এ পড়ার সময় তিনি বেশ কয়েকটি শর্ট ফিল্ম তৈরি করেন।

এরমধ্যে একটি ছিলো Doodlebug, যেটি বেশ প্রশংসিত হয়েছিলো। এবার আসি তাঁর Professional career এর কথায়। ১৯৯৮ সালর তাণনর প্রথম ফিচারড ফিল্ম বের হয় যার নাম ছিলো Following। এই মুভিটি San Francisco Film Festival এ রিলিজ পায়। মুভিটিকে গন্য করা হয় ওয়ান অফ দ্যা বেস্ট লো বাজেটেড ফিল্ম অফ অলটাইম হিসেবে।

কারণ এই মুভিটি বানাতে মোট খরচ পড়েছিলো মাত্র ৬০০০ ইউ.এস ডলার। নোলান যে কতোটা প্রতিভাধর তা বুঝা গিয়েছিলো এই মুভির মাধ্যমেই। এই মুভিটি ব্যাপক সাড়া ফেলে। এবং এর আশাতীত সাফল্যের পর শুরু হয় ক্রিস্টোফার নোলান অদম্য আর দুর্বার যাত্রা। আস্তে আস্তে বিভিন্ন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে ডাক পড়তে থাকে।

এরপর Newmarket Films এর সাথে বের হয় নোলানের ২য় ফিচারড ফিল্ম Memento যা ২০০০ সালে রিলিজ পায়। এই মুভিটি ক্রিটিক মহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয় এবং সেবছরই বেস্ট স্কীনপ্লে এর জন্য অস্কার নমিনেশন পায়। এটি ছিলো নোলানের প্রথম অস্কার নমিনেশন। এখানে একটা মজার ব্যাপার আছে, এই মুভির প্লট কিন্তু জোনাথন নোলানের একটি ছোটোগল্পকে বেস করে বানানো। যাই হোক, ২০০২ সালে নোলান বের করেন Insomnia নামে আরেকটি মুভি যা ছিলো একটি নরওয়ের মুভির হলিউডি রিমেক।

ঐদিকে ১৯৯৭ সালে Warner Bros যখন ব্যাটম্যান এন্ড রবিন মুভিটি বের করে এটি বক্স অফিসে বেশ ব্যর্থ হয় এবং প্রচুর নেগেটিভ রিভিউ পায়। তখন তারা ঠিক করে এই Batman film franchise টি তারা একজন নবীন এবং মেধাবী একজন ডিরেক্টরকে দিয়ে নতুনকরে বানাবে। তারা ক্রিস্টোফার নোলানকে সিলেক্ট করে। এরপর ২০০৩ সালে নোলানের ডিরেকশানে বের হয় Batman Begins মুভিটি। মুক্তির সাথে সাথেই বক্স অফিসে ঝড় তুলে মুভিটি এবং প্রায় বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩৭৫ মিলিয়ন ডলার ব্যাবসা করে।

নতুন প্রাণ পায় Batman film franchise টি। এরপর ২০০৬ সালে বের হয় আরেকটি সাড়াজাগানো মুভি The Prestige। এরপরে ২০০৮ সালে বের হয় কালজয়ী The Dark Knight মুভিটি। মুভিটি রিলিজের পর বক্স অফিসে রীতিমতো সুনামী সৃষ্টি করে। ওপেনিং উইকএন্ডেই এটি যুক্তরাস্ট্রে আয় রে ১৫৮ ডলার যা কিছুদিন আগেও রেকর্ড ছিলো।

পোরে অবশ্য হ্যারী পটারের কাছে এই রেকর্ডটি হাতছাড়া হয়ে যায়। The Dark Knight মুভিটি ব্যাটম্যান সিরিজের ২য় মুভি, যা ৮ টি অস্কারের নমিনেশন পেয়েছিলো এবং ২টিতে জিতেছিলো। এরমধ্যে একটি হচ্ছে জোকার চরিত্রে হিথ লেজারের সেই কালজয়ী পারফরমেন্স। The Dark Knight মুভিটি ওয়ার্ল্ডওয়াইড এক বিলিয়ন ডলার আয় করে। এরপর ২০১০ সালে নোলান বের করেন আরেকটি সাড়াজাগানো মুভি Inception।

এটিও ৮ টি বিভাগে অস্কার নমিনেশন পায় এবং ৪টিতে জিতে নেয়। আসছে ২০১২ সালে বের হবে ব্যাটম্যান সিরিজের সর্বশেষ মুভি The Dark Knight Rises। নোলানের সবচেয়ে বড়ো গুণ হলো তিনি তার প্রায় সব মুভিরই স্ক্রিনপ্লে নিজেই লিখেছেন। কিছু কিছুতে তার সাথে তার ছোটোভাইও কাজ করেছেন। তার মুভির আরেকটি স্বকীয় বৈশিষ্ট্য হলো তার প্লট এতোটাই ইউনিক হয় যে মানুষের বিস্ময়ে হতবাক হওয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকে না।

প্রত্যেকটা মুভির প্লট এতোটাই আলাদা এবং ব্রিলিয়ান্ট যে নোলান মানেই অন্যরকম স্বাদ---অন্যরকম একটা ফ্লেভার। এপর্যন্ত মোট ৩ বার অস্কার নমিনেশন পেলেও অস্কার জিতা হনি একবারো। তবে একাডেমী যে তাকে আর আটকে রাখতে পারবে না একথা নিশ্চয়ই আর বলে দেওয়া লাগবে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস পরবর্তী মুভিতেই অস্কার জিতবেন নোলান। একবার আই.এম.ডি.বি Top 250 লিস্টে চোখ বুলালেই বুঝা যাবে নোলান কতোটা মেধাবী।

১। Inception (2010): রেটিং ৮.৯, আই.এম.ডি.বি Top 250 #9 ২। The Dark Knight (2008): রেটিং ৮.৯, আই.এম.ডি.বি Top 250 #10 ৩। The Prestige (2006): রেটিং ৮.৪, আই.এম.ডি.বি Top 250 #71 ৪। Batman Begins (2005): রেটিং ৮.৩, আই.এম.ডি.বি Top 250 #114 ৫।

Insomnia (2002): রেটিং ৭.২ ৬। Memento (2000): রেটিং ৮.৭, আই.এম.ডি.বি Top 250 #31 ৭। Following (1998): রেটিং ৭.৭ এবারে নোলানের মুভিগুলো নিয়ে একান্তই নিজের পছন্দের কথা বলি। আমার লিস্টে পছন্দের তালিকায় সবার শীর্ষে থাকবে Memento (2000) মুভিটি। এরপরই থাকবে Inception, তারপর যথাক্রমে, The Dark Knight,The Prestige, Batman Begins এবং Following।

ক্রিস্টোফার নোলানের পরবর্তী জীবনের অনেক অনেক শুভকামনায় আজকের পোস্টটি শেষ করছি। ধন্যবাদ।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।