আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

۞ কিভাবে রাগ নিয়ন্ত্রন করবেন? রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন ۞

জানার আগ্রহ মানুষের চিরন্তন, বই হলো তার বাহন, আইনের মৃত্যু আছে কিন্তু বইয়ের মৃত্যু নেই। রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন মানব চরিত্রের একটি খারাপ দিক রাগ। কারো রাগ যখন মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তখন সেটা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। রাগান্বিত মানুষ বেসামাল হয়ে যায়, তখন অন্যের ওপর জুলুম করে। রাগের কারণে মনের মধ্যে প্রতিশোধের আগুন জ্বলে ওঠে, তখন খুনখারাবি পর্যন্ত হয়ে যায়, ঘর-সংসার ভেঙে যায়।

গিবত সমালোচনার পেছনেও মানুষের রাগ কাজ করে, প্রতিপক্ষের উন্নতি সহ্য হয় না। শয়তান রাগের ইন্ধন জোগায়। কারণ রাগ আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। রাগ নিবারণ অপরিহার্য, নচেৎ জীবনের সমূহ বিপর্যয় অনিবার্য। এক সাহাবি রাসূল সা:-এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! ‘আমাকে অল্প কথায় কিছু নছিহত করুন, রাসূল সা: বললেন, ক্রোধ বর্জন করো।

সাহাবি কয়েক বার বললেন আরো একটু নছিহত করুন, প্রত্যেক বারই রাসূল সা: বললেন, ‘ক্রোধ বর্জন করো। ’ (বুখারি)। রাসূল সা: বলেছেন, ‘প্রকৃত বাহাদুর সেই ব্যক্তি, যে ক্রোধের সময় নিজেকে সংযত রাখতে পারে। ’ (মুসলিম)। যেসব ক্ষেত্রে ইসলাম ক্রোধ বা রাগ করার অনুমতি দিয়েছে তা হতে হবে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে, সে হতে হবে দ্বীনের উদ্দেশ্যে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে, নিজের ব্যক্তিগত আক্রোশে নয়।

রাসূল সা: বলেন, ‘ঈমান পূর্ণ করার চারটা আমল, যা কিছু মানুষকে দেবো আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্য, যা কিছু নেব আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্য। যাকে ভালোবাসব আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালোবাসব। যার প্রতি রাগ করব তাও আল্লাহকে খুশি করার জন্য। ’ (তিরমিজি)। কুরআন-হাদিসে রাগকে নিয়ন্ত্রণ করার অনেক পন্থা বর্ণিত আছে।

তার থেকে সংক্ষেপে কিছু বর্ণনা করা হলো এক. রাসূল সা: বলেন, ‘যখন তোমাদের কারো রাগ আসে, তখন সে দাঁড়িয়ে থাকলে যেন বসে পড়ে। তাতে যদি রাগ দমে যায় তাহলে ভালো। অন্যথায় সে যেন শুয়ে পড়ে। ’ (তিরমিজি)। রাগের গতি হলো ওপরের দিকে, তাই বলা হচ্ছে রাগ দমন করার জন্য গতি নিচের দিকে করে দাও।

দুই. রাসূল সা: বলেন, ‘রাগ আসে শয়তানের পক্ষ থেকে’। শয়তানকে তৈরি করা হয়েছে আগুন থেকে। আগুন নির্বাপিত হয় ঠাণ্ডা পানি দ্বারা। ঠাণ্ডা পানি পান করলে রাগের কারণে রক্তে যে উষäতা সৃষ্টি হয় সেই উষäতা ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। এভাবে রাগ পড়ে যাবে।

’ (আবু দাউদ)। তিন. রাগের মধ্যে শয়তানের ওয়াছওয়াছার দখল থাকে। প্রকৃতপক্ষে এ রাগ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। তা বের করার জন্য আউজুবিল্লাহি মিনাশ্শায়তানির রাজিম পড়ো। এ জন্য আল্লাহপাক বলেন, ‘যদি শয়তানের পক্ষ থেকে কোনো উসকানি তোমাকে পায় তাহলে আউজুবিল্লাহি মিনাশশায়তানির রাজিম পড়ো।

’ (হা-মিম সাজদা ৩৬)। চার. যখন তোমার রাগ হয় তখন মনে করবে যে আমার সৃষ্টিকর্তা আমার চেয়ে অনেক অনেক বড়। তিনি আমার প্রতি রাগ হলে আমার কী উপায় হবে? অতএব আমি তাকে ক্ষমা করতে না পারলে সৃষ্টিকর্তাও আমাকে ক্ষমা করবেন না। আমার রাগ হজম করে যার ওপর রাগ করেছি তাকে ক্ষমা করে দিলে আল্লাহও আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। এভাবে রাগ নিয়ন্ত্রণে এসে যায়।

উপরোক্ত হাদিসগুলো থেকে আমরা জানতে পারিঃ ১. রাগ আসলেই বসে পড়তে হবে অথবা শুয়ে থাকতে হবে। ২. রাগ আসলেই ঠান্ডা পানি পান করতে হবে। ৩. রাগ আসলেই আউযুবিল্লাহি মিনাশশায়তানির রাজিম পড়তে হবে। ৪. আল্লাহ ক্ষমাশীল। সৃষ্টিকর্তাকে স্বরণ করতে হবে।

৫. ক্ষমায় মহৎ গুন এই কথাটি মনে রাখতে হবে।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।