তরুণ নামের জয়মুকুট শুধু তাহার, বিপুল যাহার আশা, অটল যাহার সাধনা প্রয়োজনীয় নোট-
আমাদের জাতীয় কবি প্রাণের কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পর্ব এ ব্লগে আপনারা পড়েছেন। কেউ কেউ বাহবা দিয়েছেন, কেউ হয়ত এমন তথ্য জেনে মনক্ষুণœ হয়েছেন।
আমি এখনও একজন ছাত্র। আমার অধ্যয়নের বিষয়ের সাথে কবি নজরুলের কোন সম্পর্ক নেই। তবু ছোটবেলা থেকে কবি নজরুলের প্রতি আমার প্রচন্ড কৌতুহল।
তার কাব্য কবিতা যতই পড়েছি, ততই তাকে জানতে ব্যাকুল হয়েছি। যত বই কিনেছি, পড়েছি- সবগুলোতে প্রায় একই তথ্য দিয়ে ঠাসা। তার জীবনের একটি পূর্ণ চিত্র আমি কোথাও পাইনি।
নজরুল গবেষকরা সবাই তাকে নিয়ে লিখেছেন এবং ওসব লেখায় তার ব্যক্তিত্বের চেয়ে তার কাব্য ও প্রতিভার আলোচনাই বেশী। কেউ তাকে নিয়ে লিখতে বসে নিজেদের গুণ গরিমা তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন।
একই কথা প্রযোজ্য পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত অসংখ্য প্রবন্ধ ও রচনার বেলায়।
কাজী নজরুলের জীবন সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে বেশ কিছূ দুর্লভ ও পুরনো বই সংগ্রহ করি ঢাকার বিভিন্ন জায়গা ও পুরনো লাইব্রেরী থেকে। মুন্সী জুলফিকার হায়দারের লেখা- নজরুল জীবনের শেষ অধ্যায় (বাংলা একাডেমী সংস্করণ-১৯৬৪), বিশ্বনাথ দে সংকলিত নজরুল স্মৃতি (সংস্করণ-১৯৭১), আব্দুল কাদির সম্পাদিত নজরুল রচনা সম্ভার (সংস্করণ-১৯৬৯) সহ বেশ কিছু বই আমার কাছে রয়েছে।
এ বইগুলো বারবার পড়ে একই ঘটনা বিভিন্ন বইয়ে মিলিয়ে যাচাই করে আমি এ তঘ্যগুলো সংকলন করছি। এ ধারাবাহিকের লেখাগুলো একটি বৃহৎ উপন্যাসের খসড়া হিসেবে সংকলিত হচ্ছে।
আগামী দু তিন বছর পর হয়তো কবির জীবনের নিরেট তথ্যচিত্রের এ খসড়াগুলোর সাহায্যে একটি উপন্যাস লেখার কল্পনা ইচ্ছায় রূপান্তরিত হতে পারে।
কবির জীবন ছিল রহস্যময়। কবির জীবনছিল দুঃখঘেরা। নির্মম তিরস্কার আর কটুবাক্য কবির পেছনে লেগেছিল জীবনভর। কবির জীবনের কিছূদিক এমনও রয়েছে যা মেনে নেয়া কঠিন।
একজন মানুষ হিসেবে এ ভুল তার জীবনে খুবই স্বাভাবিক। যারা কবিকে একদম সাধু দেবতা করে হাজির করতে চান, তারা এক্ষেত্রে লুকোচুরি কিংবা মিথ্যার আশ্রয় নেন।
একথা অনস্বীকার্য সত্য যে, কবি নজরুল ইসলামের প্রতিভা তার এ সবগুলো ভুল ও খামখেয়ালী ছাপিয়ে সূর্যের মতো জ্বলজ্বল করছে। বিদ্রোহী কবিতার উৎসমুখ আমাদের কবি নজরুলের এসব দিক তাই আমার কাছে বিস্ময়ের। আমি শুধু কবি নজরুলকে ভালোবাসি না, ভালবাসি তার ব্যক্তিত্বকেও।
শুধু কাব্য প্রশংসা করে তাকে নিয়ে মেতে থাকলে কেমন যেস স্বার্থপর স্বার্থপর মনে হয়। কবি তার ব্যক্তিগত জীবনেও এসব পছন্দ করতেন না। তার প্রিয় এক বন্ধূকে তাই বারণ করেছিলেন তার মৃত্যুর পর যারা তার গীত গেয়ে বক্তৃতার বুলি আওড়াবে- সেসব অনুষ্ঠানে যেন তিনি না যান।
কবির জীবন নিয়ে আলোচনা করতে গেলে হিন্দু মুসলিম প্রসঙ্গ একেবারে স্বাভাবিক। তার সাথে এ দু জাতির ব্যবহার সম্পূর্ণ প্রশংসনীয় ছিল না।
অসা¤প্রদায়িক ভাবে লিখতে গেলেও এ প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া যায় না। আমি তাই একজন দর্শকের ভূমিকায়। নির্মোহ ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে সেকালের কবির চারপাশের মুসলিম ও হিন্দুদের আচরণগুলো উল্লেখ করতে চাই এ সংশ্লিষ্ট পর্বে।
মনে রাখতে হবে, এত বছর পর আজকের এখন এই সময়ে এসে সেসব নিয়ে আহত কিংবা হুজুগে হওয়ার কোন অবকাশ নেই। এখানে আমরা নির্বাক দর্শক।
কবিকে নিয়ে ব্যবসা করার মতো লোকেরও অভাব হয়নি, কবির জীবদ্দশায় এবং কবির মৃত্যুর পরও। কাজেই নিজেদের স্বার্থে আঘাত লাগলেও সত্যকে মেনে নেয়াই বুদ্ধিমানের পরিচয়।
জাতীয় কবিকে নিয়ে লেখা যেমনি গৌরবের, তেমনি ভয়ের। কাজেই আস্থা ও নিরপেক্ষতা এখানে সর্বাগ্রে প্রয়োজন। কেউ কেউ তথ্যসূত্র জানতে চেয়েছেন- সেসব জানাতে এ কয়েকটি কথা লেখা।
আপনার সবাই ভালো থাকুন। ভাল লাগলে জানাবেন, খারাপ লাগলেও।
নজরুলের রক্ত নেয়া হলো না... কিন্তু কেন??
পাগলের গলায় গান ধরালেন কবি নজরুল
কবি কাঁদলেন এবং বদলে গেলেন যে ঘটনায়
কবি নজরুলের অদ্ভূত কান্ড কারখানা
চলুন, কাজী নজরুলকে দেখে আসি কলকাতা থেকে..
নজরুলের গান গজল কীভাবে তৈরী হতো....
কাজী নজরুলের খেয়ালখুশী
কবি যখন থেকে নির্বাক হলেন.. কবির ঢাকা ভ্রমণের বিচিত্র কান্ড
নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন কবি নজরুল, কিন্তু জয়ী হয়েছিলেন ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।