আবার সেই পুরোনো প্যাচাল, পুরোনো কাসুন্দি। ব্লগে বিভিন্ন সময় অনেক ব্লগার গুরুজী প্রদত্ত চোথা কপি পেস্ট করে থাকেন। কিন্তু তারা কখনো বলেন না, তাদের গুরুজীর পীরগিরির কথা।
কিছুটা গোপন কথা খুলে বলি।
যারা গ্রাজুয়েট (৪ বছরের কোর্স নয়, ৪ দিনের) কোর্স করেছেন তারা আবার মাস্টার্স কোর্স করে থাকেন।
বছরে ১৫-২০ বার গ্রাজুয়েট কোর্স করা হয় আর মাস্টার্স কোর্স করানো হয় ১ বার শুধু। যাদের মাথার ঘিলু সম্পুর্ন্নরুপে নষ্ট হওয়ার পথে, তারাই সাধারণত মাস্টার্স কোর্স করতে যায়
পরিবারে আমি খুব কাছ থেকে এমন কিছু মাস্টার্স কোর্স করা মানুষকে দেখে আসছি অনেক দিন ধরে। ৩-৪ দিনের মাস্টার্স কোর্স করার জন্য রেজিস্ট্রেশন করার সময় আপনাকে উল্লেখ করতে,'' আপনি কোনো পীরের মুরিদ কিনা?'' যদি আপনি এক্টিভিলি কোনো পীরের মুরিদ হন, তবে আপনি এই কোর্স করতে পারবেন না। তার মানে, প্রকারান্তরে গুরুজীকে পীর হিসাবেই মেনে নিচ্ছে তারা।
তারা যে কয় দিন মাস্টার্স কোর্স করে, সেই কয় দিন বাসায় এসেও কারো সাথে কথা বলে না।
মৌনব্রত পালন করে (পীর বাবার আদেশ)।
পীরবাবা আরো শপথ করায় '' এই কোর্স করে মুরীদরা যে সব অলৌকিক জ্ঞান অর্জন করবেন, সেটা কারো সাথে শেয়ার করা যাবে না। ''
পীরবাবা আরো শপথ করায় '' এই চার দিনে যা যা শুনলেন, সেটা কাউকে বলা যাবে না''
পীরবাবা আরো শপথ করায় '' সবাইকে বান্দরবানের লামাতে গিয়ে ৩ দিনের চিল্লা দিয়ে আসতে হবে, চিল্লার সময়ও কেউ কারো সাথে কথা বলতে পারবেন না , পরিবারের সাথেও যোগাযোগ রাখতে পারবেন না, কারণ তাতে মন বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়। আত্ম উপলব্ধি ঠিক মতো হবে না। মোবাইলও অফ থাকবে''
লামাতে একটা পানির উৎস আছে, সেটাকে পীরবাবা নাম দিয়েছে শেফা পানি।
ভক্তরা এই পানি প্রতিদিন নিয়ামত হিসাবে পান করে। একাধারে ৪০ দিন। বোতলে করে পানি নিয়ে এসে অন্য পানির সাথে মিশিয়ে পান করে সকলে।
পীরবাবা আপনাকে বিশেষ কিছু মেডিটেশন দিবে, যেগুলো অনলাইনে পাবেন না, সিডিতে রাইট করে দিবে। সেই মেডিটেশন গুলো আপনাকে সকালে আর রাতে নিয়মিত শুনতে হবে।
কিন্তু সেই বিশেষ মেডিটেশন মাস্টার্স কোর্স না করা কেউ শুনতে পারবে না, কাউকে শুনানোও যাবে না। গুরুজীর আদেশ কাম শপথ। আপনি যদি সেই মেডিটেশন শুনান, তবে আপনার কঠিন বিপদ হবে এবং যে শুনবে তারও সমূহ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
এই মুরিদগুলো এমনই পাগল, একবার এক মুরীদের মোবাইল থেকে সেই বিশেষ মেডিটেশন গুলো মুছে গেছে। সন্ধার পর, তাই সে রাত ৯টা বাজে বৃষ্টির রাতে ২৫০ টাকা সিএনজি ভাড়া দিয়ে মেডিটেশন সংগ্রহ করতে গেলো।
না হলে তো সেই রাতের মেডিটেশন মিস হবে।
আমি বললাম, বৃষ্টির রাতে না গেলে হয় না? এটা তো ফরজ কিছু না। মুরীদের কোনো জবাব নাই, তবে তাকে যেতেই হবে। গুরুজীর নির্দেশ অমান্য করা চলবে না ।
পীরবাবা অনেক বুজুর্গীও দেখায়, একটা পাথর টাইপের কিছু (আমি নিজে দেখি নাই), সেটা সবাইকে ছুয়ে দেখায়।
সেটা নাকি সাইকিক বর্ম। ওটা ছুলে আপনাকে জ্বীন পরি কেউ কোনো অনিষ্ঠ করতে পারবে না।
কোয়ান্টার মেথড ওয়ালারাতো কথায় কথায় কোয়ান্টাম ফিজিক্সের কথা বলে, আচ্ছা, ফিজিক্সে কি জ্বীন পরীর কোনো অস্তিত্ব আছে?
সেদিন আর এক ক্রেক মুরিদের কথা শুনলাম, যে স্বামীকে না জানিয়ে গয়না বিক্রি করে কোর্স করেছে।
আর টিনএজার কিংবা তরুনী যুবতী মেয়েরা মোবাইল, ল্যাপটপের ওয়াল পেপারে গুরুজী ছবি দিয়ে রাখছে!!!! (যদিও তাদের জামাই কিংবা বয়ফ্রেন্ড আছে। ধর্মীয় দিক থেকেও যদি চিন্তা করেন, একজন পরপুরুষের ছবি নিজের মোবাইলে সবসময় দিয়ে রাখাটা কতটুকু শোভন?)
আর সকল কোয়ান্টামওয়ালারা হাতে অষ্টধাতুর বালা পড়ে থাকে।
এই মহাজাতক আগে পাথর বিক্রি করতো, এখন অষ্টধাতুর বালা।
আর আমি এমনও দেখছি, স্ত্রী গুরুজীর মুরীদ, স্বামী এইসব পছন্দ করেন না, তাই সারাদিন সংসারে খিটিমিটি লেগেই আছে। তারপরও স্ত্রী বলবে, বেশশশশ ভালো আছি।
আজব এক দুনিয়া।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।