আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চার পর্বের সাইকো থ্রিলারঃ জনৈক মৃত্যু বিক্রেতা, জনৈক লেখক ও অন্যান্য - পর্ব ১

কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!! (এই লেখাটা ফেসবুকে প্রকাশের পর অনেকের ভালবাসামাখা কমেন্ট পেয়েছিলাম। সেই সাহসে ব্লগে পোস্ট করলাম। আপনাদের উৎসাহই আমাকে এর পরের পর্ব পোস্ট করতে স্পর্ধা যোগাবে। ধন্যবাদ। ) চ্যাপ্টার ৪ সালেহ তিয়াস হা হা করে হাসছেন।

বেঁচে থাকার আনন্দই এই হাসির উৎস। মানুষটা চলে গেছে। তার রিভলভারের গুলি সে সালেহর মাথা লক্ষ্য করে ছোড়ে নি, ঘরের সিলিং লক্ষ্য করে ছুঁড়েছিল। সালেহর মাথার আঘাতটা ছিল রিভলভারের বাঁটের। সালেহ হাসছেন।

কারণ পুরো লেখাটা তার কম্পিউটারে রয়ে গেছে। খুব সম্ভবত এটাই হতে যাচ্ছে এই বইমেলার সেরা লেখা। চ্যাপ্টার ৩ “ফেব্রুয়ারির এক অলস বিকেলে তার গার্লফ্রেন্ড এসে তাকে বলল, “তোমার সাথে রিলেশন রাখা আর আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আই অ্যাম সরি”। সে তেমন অবাক হল না।

সে সাধারণ একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ একজন ছাত্র, তার পক্ষে এই মুহূর্তে বিয়ে করা কখনই সম্ভব নয়। সুতরাং সে কোন প্রতিবাদ করল না, তার এক্স গার্লফ্রেন্ড আপাতদৃষ্ট অশ্রুসিক্ত নয়নদ্বয়ের আড়ালে চাপা হাসি নিয়ে হেঁটে হেঁটে চলে গেল। তার বাবা মারা গেলেন এই ঘটনার পাঁচ দিন পর। বাবা মারা যাবার পর তার চাচারা নিজেদের আসল চেহারা প্রকাশ করলেন, দলিলের প্যাঁচে ফেলে সদ্য পৈত্রিক বাড়ি থেকে বিধবা মাকে সহ তাকে বিতাড়িত করলেন। মাকে নিয়ে রাস্তায় নেমে এল সে।

মাকে নিয়ে কোনভাবে একটা মেসে উঠে থাকতে শুরু করল সে। এরই মধ্যে ভাগ্য আরেকটি বার তার উপর ছোবল বসিয়ে গেল, ভার্সিটিতে মারামারি হল, এক ফার্স্ট ইয়ারের মেয়ে লাঞ্ছিত হল, তার সবচেয়ে প্রিয় বড় ভাই, যার সাথে তার নিত্যদিনের উঠাবসা, যিনি কিনা তৎকালীন ভার্সিটির সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, তার নাম তিনজন আসামীর একটা সংক্ষিপ্ত তালিকায় ঢুকিয়ে দিলেন। সে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত হল, পরে সে খোঁজ নিয়ে জেনেছিল মেয়েটি লাঞ্ছিত হবার সময় নাকি ঐ বড় ভাই জায়গামত কয়েকটা ডলা ছাড়া আর কিছুই দেন নি। এই ঘটনার পর তার টিউশনি চলে গেল, কারণ তার তৎকালীন ছাত্রীর আপন মামী ছিলেন তারই ডিপার্টমেন্টের এক সুন্দরী ম্যাডাম। আসলে, সেই সূত্রেই টিউশনিটা পেয়েছিল সে।

যাই হোক, এপ্রিলের অলস দুপুরে পড়াতে গিয়ে সে ফিরে এল, চিরদিনের মতই, গত পাঁচ দিনের বকেয়া টাকাটা নেয়ার সাহস বা ইচ্ছা কোনটাই তার তেমন ছিল না। অচিরেই সে বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে ধারকর্জ নেয়া শুরু করল এবং অচিরেই বন্ধুরা বুঝতে পারল তাকে টাকা ধার দেয়া আর টাকা চুলায় দেয়া একই কথা এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই তার বন্ধু সংখ্যা ভয়াবহভাবে কমে শূন্যের কোঠায় নেমে এল এবং সংসারের অভাব প্রকট থেকে প্রকটতর থেকে প্রকটতম হবার আগেই একদিন বিধবা মা টুপ করে মরে গেলেন। সে কাঁদল। কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি নিঃশেষ হয়ে গেল তার। মেসের ভাড়া বাকি পড়ল।

তাকে বের করে দেয়া হল একবস্ত্রে। গভীর রাতে যাবার জায়গা না পেয়ে রাস্তার উপরই বসে পড়ল সে। আর ঠিক তখন থেকেই, আমাদের আজকের এ উপন্যাসের কাহিনী শুরু, প্রিয় পাঠক”। -কেমন হয়েছে? -ভালো। প্রারম্ভিকা ভালো ছিল।

শর্ট এন্ড কনসাইজ। “জীবন ধারণের জন্য সে প্রথমে গেল একটা খাবার হোটেলে, বাসন কোসন মাজার কাজ করতে। কাজ সে পেল ঠিকই, তবে দুদিন পর যখন তারই এক্স গার্লফ্রেন্ড ও তার হাজবেন্ড ঐ হোটেলে খেতে এসে অসম্ভবভাবে মুখ বিকৃত করে “খ্যাত” বলে চলে গেল তখনই সে বুঝল এখানে আর তার থাকা হচ্ছে না। এর পরে সে গেল একটা কন্সট্রাকশন ফার্মে লেবার খাটতে। এক সপ্তাহ ভালমতই গেল, তারপরে দেখা গেল সেই ফার্মের মালিক তারই এক জুনিয়রের বাপ।

সে বুঝল, এখানেও তার পক্ষে থাকা সম্ভব না। ক্রমে সে কুলিগিরি, নাইট গার্ডের চাকরি, পিয়নের চাকরি, কেয়ারটেকারের চাকরি ইত্যাদি অনেক কিছুই করল। কিন্তু কোনটাতেই সে বেশিদিন টিকতে পারল না। সে দেখল তাকে শিক্ষিত বলে লেবার শ্রেণীর সবাই হেয় প্রতিপন্ন করছে। এত পড়াশোনা করে ফুলবাবু সেজেও সে আজ এই অবস্থায়, এটাই তাদের খোঁটা দেবার মূল বিষয়।

এক বছর কেটে গেল। এক বুক আশা নিয়ে সে ভার্সিটিতে গেল। দেখা গেল তার অজান্তেই ভার্সিটি তাকে বিপুল পরিমাণ অর্থ জরিমানা করেছে। এটা দিতে পারলেই শুধুমাত্র সে ছাত্রত্ব বজায় রাখতে পারবে। সে আবারও চোখে অন্ধকার দেখা শুরু করল।

বলা বাহুল্য, টাকা ম্যানেজ হল না। তারও আর ভার্সিটিতে পড়া হল না। আর ঠিক সেদিনই, ২০১২ সালের ২৪ আগস্ট, সে অনেক ভেবে স্থির করল, মৃত্যুই তার একমাত্র অবলম্বন। এ জীবন আর রাখার কোন মানে হয় না”। -পছন্দ হয়েছে? -হ্যাঁ হয়েছে।

ভালোই হচ্ছে। “সে প্রথমে একটা ব্লেড কিনে প্রচুর সাহস সঞ্চয় করে নিজের রেডিয়াল আর্টারি কেটে ফেলার একটা ব্যর্থ চেষ্টা করল। দুঃখের ব্যাপার, তার ব্লেডে ধার কম থাকা এবং কম শক্তিতে পোঁচ দেয়া জনিত জটিলতার কারণে তার শরীর থেকে কয়েক ফোঁটা রক্ত বের হল মাত্র, মৃত্যু তো দূরের কথা। এরপরে সে চেষ্টা করল রেললাইনের উপর নির্বাক শুয়ে থেকে জীবনের অবসান করতে। প্রায় দু ঘণ্টা ঠাণ্ডার মধ্যে টানা শুয়ে থাকার পর তার হঠাৎ খুব ক্ষুধা পেয়ে গেল এবং সে উঠে এক প্যাকেট বিস্কুট কিনতে গেল এবং হুশ শব্দ করে রাতের শেষ ট্রেনটা চলে গেল তার চোখের সামনে দিয়ে।

এরপর সে একটা চমৎকার মোটা দড়ি ম্যানেজ করল। দড়িটা দেখে সে মুগ্ধ হয়ে গেল এবং গলায় ফাঁস পরাবার আগেই জনৈক রাখাল, যার শিংওলা লাল গরুর গলায় দড়িটা বাঁধা ছিল সে এসে তাকে দুটো থাপ্পড় দিয়ে দড়িটা নিয়ে গেল। হাইওয়ের পাশে অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকার পরেও তার সাহস হল না কোন গাড়ির সামনে লাফ দেবার। ব্রিজের উপর পাক্কা এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরও সে পারল না পানিতে লাফ দিতে। সে বুঝল, মৃত্যু জিনিসটা যত সহজ বলে মনে হয় আসলে ততটা সহজ নয়।

আর ঠিক তখনই তার মাথায় একটি ভয়াবহ প্ল্যান এল”। -কেমন হয়েছে? -ইটস গুড। আপনি তো ভালো লেখক। আপনার লেখা তো ভালো হবেই। ভূমিকা মনে হয় আরেকটু ছোট হতে পারত।

আসল কাহিনী তো এখনও শুরুই করতে পারলেন না। -না আপনাকে তো বুঝতে হবে এইটা হচ্ছে একটা থ্রিলার উপন্যাস। প্রথমেই তো সব এনে ফেলা যাবে না। আগে কিছু ভূমিকা না দিলে পাঠক কিভাবে বুঝবে নায়ক কেন এগুলা করছে? -আচ্ছা আচ্ছা বলেন। দেখি কি লিখেছেন।

“সে প্রথমে গেল তার জেলার একটি বেসরকারি মেডিকেলের অ্যানাটমি ল্যাবে। তার সাথে দেখা হল জনৈক রব মামার, কথিত আছে স্টুডেন্টদের কাছে বোনস বিক্রি করে তিনি ইতোমধ্যে ঢাকায় একটি পাঁচতলা বাড়ি করেছেন। সে বলল, আমি তো বোনস বিক্রি করব। রব মামা বললেন, বিক্রি করবেন? মেডিকেল স্টুডেন্ট নাকি আপনি? না। তাইলে পাইছেন কই? আছে।

আমার সাথেই আছে। মানে? বোনস আমার। মানে আমারই হাড্ডিগুড্ডি। বিক্রি করব, নিবেন? কি বলেন এইগুলা? ঠিকই বলি। পাগল ছাগল নাকি? না, পাগল না।

নিবেন কি না বলেন। কেমনে নিব? আমি ক্যান্সারের পেশেন্ট। ডাক্তার বলেছে আগামী মাসেই আমি মারা যাব। মারা যাবার আগে আপনাদের মর্গে আমার বডিটা দান করে দিয়ে যাব। রব মামা অনেকক্ষণ ধরে তার দিকে তাকিয়ে রইলেন।

তারপর বললেন, সত্যি? হুম। ভাই আপনি কিছু মনে কইরেন না আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি। আরে না না ব্যাপার না। তার মানে আপনি মরণোত্তর দেহদান করতে চান তাই তো? দান না ঠিক, বিক্রি করতে চাই বলতে পারেন। কিন্তু ভাই, বিক্রি কেমনে করবেন? আমরা তো আর আপনাকে টাকা দিতে পারব না, নিয়ম নাই।

নিয়মের ধার কে ধারে? আপনি আমারে টাকা দিবেন, আমার বডি নিয়ে যা খুশি করবেন কোন সমস্যা নাই। নাহলে আমি অন্য কোথাও বডি দেবার কথা চিন্তা করব। এখন ভাই, বুঝেনই তো, টাকা দিব কেমন করে... এইটা কোন ব্যাপার? আমি জানি আপনারা বোনস বিক্রি করে অনেক ইনকাম করেন। আপনাদের আরও অনেক রকম ব্যবসা আছে সব হয়তো আমি জানিও না। টাকা কি আপনাদের কাছে কোন ব্যাপার? আপনার রিপোর্ট আছে? কিসের রিপোর্ট? ক্যান্সারের।

ও, আপনি শিওর হতে চাচ্ছেন আমি আসলেই সামনের মাসে মরব কি না, এই তো? ...হুম। রিপোর্ট আছে, নিয়ে আসি নাই আর কি। কালকে নিয়ে আসি, কি বলেন? না না থাক ভাই লাগবে না। আপনার ফোন নাম্বার দিয়ে যান। কত টাকা দিবেন বললেন না তো।

আসলে বুঝেনই তো... কত? পাঁচ হাজার। পাঁচ হাজার! ফ্রেশ বোনস এখন পঁচিশ হাজারে বিক্রি হয়, আর আপনি আমারে পাঁচ হাজারের কাহিনী শুনাচ্ছেন? না ভাই বুঝেনই তো... আর আমার বডিটা পাইলে তো আপনি খালি বোনস না, লিভার কিডনি হার্ট সবই বের করে নিতে পারবেন। সেইগুলারও নিশ্চয়ই দাম আছে। আছে না? আছে। তাইলে আপনি পাঁচ হাজার বলেন কোন সাহসে? আমারে বাচ্চা মনে হয়? আর আমি একটা ক্যান্সারের পেশেন্ট, দুই দিন পর মরে যাব, আমার সাথে মিথ্যা বললে আল্লাহ কি আপনারে ক্ষমা করবে? পনের।

এর চেয়ে বেশি দেবার পারমু না ভাই। বিশ। ষোল। ঊনিশ। আঠার।

ওকে। আঠার। দিয়ে দেন, গিয়ে ফ্যামিলিরে খাওয়াই। আমি মরে গেলে তো ওদের পথে বসতে হবে। এখন সাত নেন।

কালকে বাকিটা নিয়েন। না না পুরাটাই দেন। আচ্ছা দশ নেন। ধার করে দিতে হচ্ছে, বিশ্বাস করেন ভাই। ওকে দেন।

রব মামা তার ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, তার চিকিৎসারত ডাক্তারের ঠিকানা ইত্যাদি নেবার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে দশ হাজার টাকা দিলেন। টাকা পেয়ে সে রব মামাকে শুঁকনো একটা হাসি উপহার দিল এবং সদর্পে বেরিয়ে এল মর্গ থেকে। রব মামা ভাবলেন, টাকাটা কি গচ্চাই গেল নাকি? না, জুয়াটা লাগলে তো ব্যাপক লাভ, ভাবলেন রব মামা। ছেলেটা যদি আসলেই দেহদান করে তো তার লিভার কিডনি স্টমাক হার্ট সবই পোস্ট গ্রাজুয়েশন স্টুডেন্টদের কাছে চড়া মূল্যে বিক্রি করা যাবে। আর বোনস তো আছেই, এক মাস প্রসেসিং করলে এই বোনস ত্রিশ হাজারে বিক্রি করা যাবে অতি সহজেই।

নাহ, প্রায় পঞ্চাশ হাজারের মত পাওয়া যাবে সব মিলিয়ে। আর জুয়াতে হেরে গেলে গেলাম, দশ হাজার টাকা এমন কিছু না। ভাবলেন রব মামা, আজই ছেলেটার অসুখ সম্বন্ধে খোঁজখবর নিতে হবে। আর ঠিক এভাবেই, জীবনে প্রথমবারের মত সে তার জীবনের একটা মূল্য খুঁজে পেল - আঠার হাজার টাকা”। -কেমন লাগল? -আরেকটু সাসপেন্স রাখতে পারতেন।

একটু দুর্বল মনে হচ্ছে কথোপকথন। এত সহজে রব মামা টাকা দিয়ে দিবে এইটা কি পাঠকে সহজে বিশ্বাস করবে? -তাহলে কি চেঞ্জ করে দিবো? -নাহ বাদ দেন, যা হয়েছে হয়েছে। তার পরের চ্যাপ্টার থেকে পড়েন। “তারপর সে গেল তার ভার্সিটিতে। সে শুনেছিল তার সেই বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রুপিং হচ্ছে, টেন্ডারের ভাগ নিয়ে অনেক দিন ধরেই বড় ভাইয়ের উপর কয়েকজনের রাগ, ওরাই দাঁড় করাচ্ছে নতুন গ্রুপ।

নতুন গ্রুপের লিডারের নাম আকরাম। সে তাকে কয়েকবার আগে দেখেছে, আকরাম প্রচণ্ড সাহসী, স্যারদের সামনেই সিগারেট গাঁজা ফোঁকে, ক্লাসের ভিতর থেকে মিছিল করার জন্য জুনিয়র পোলাপানকে বের করে নিয়ে আসে। একের পর এক তেরটা মেয়েকে নিয়ে সিনেমা দেখতে যাবার বিরল রেকর্ড তার। সে চুপিচুপি গিয়ে দেখা করল আকরামের সাথে। আকরাম তার সাথে এমন ব্যবহার করল যাতে মনে হয় তারা কতকালের পুরনো বন্ধু।

সে বলল, আকরাম ভাই, আমার প্রতিশোধ লাগবে। আকরাম বলল, জানি। ঐ শালা আমারেও ফাঁসাইতে চাইছিল। ওরে সাইজ করাই লাগবে। শুধু সাইজ না, সেইরকম সাইজ করতে হবে।

হ্যাঁ, সেইরকম সাইজ। তা তুই আমাদের দলে ঢুকে পড় না। কেমনে ঢুকব, আমি তো এখন ছাত্রই না। কে বলেছে তুই ছাত্র না? তোর নাম তো এখনও রেজিস্টারে আছে, নাকি? নাই মনে হয়। সমস্যা নাই।

তুই আমার সাথে থাক, আমি তোর একটা গতি করে দিবো। আমার গতি লাগবে না। প্রতিশোধ পাইলেই আমি খুশি। তোর কি কোন প্ল্যান আছে নাকি? আছে। কি? আপনাদের সাথে উনাদের মারামারি বাঁধার চান্স আছে কবে? যেকোনো দিনই বাঁধতে পারে।

মারামারির ডেট আগামী মাসে ফেলেন। এইটা তুই কি বললি? মারামারি কি ডেট ফিক্সড করে হয়? হয়। চেষ্টা করলেই হয়। আচ্ছা, মারামারি নাহয় নেক্সট মাসে হইল। তারপর? ঐ মারামারিতে ধরেন আপনাদের পক্ষের কেউ ওদের গুলি খেয়ে বা মাইর খেয়ে মারা গেল।

কি কস এইগুলা? কে মারা যাইব? ধরেন গেল। তাতে কি হবে? কি হবে? আপনাদের হাতে একটা প্রোপাগান্ডা চলে আসবে। খুনের মামলায় আপনারা ওদের ফাঁসাইতে পারবেন। আর একবার ফাঁসাইয়া দিলেই কাম সারা, আপনারা তখন ক্যাম্পাসের বস। দুই একজনরে ফাঁসি দিয়ে দিলে তো কথাই নাই।

আর যদি ওরা বলে আমরা নিজেদের লোক নিজেরা মারসি? তাহলে এমন কারো মরতে হবে যার উপর ওদের সেইরকম রাগ, বা যে মরলে ওরা খুবই লাভবান হবে, তাহলে ওরাই যে মারসে এই কথা আরও পাকাপোক্ত হবে। এমন কে আছে? আমি। কি? কি বললি তুই? হ্যাঁ আমি। দেখেন আকরাম ভাই, আমার বেঁচে থাকার কোন কারণ নাই, বাপ মা মরে গেসে, গার্লফ্রেন্ড ভাগসে, ভার্সিটিও আমারে তাড়ায়া দিসে। আমি বাইচা কি করুম? ওর চেয়ে আমি মইরা যাই, ঐ কুত্তার একটা শিক্ষা হউক।

আমার জীবনটা কুত্তাটা নষ্ট করসে, সুতরাং এমন তো হইতেই পারে আমি প্রতিবাদ করতে গিয়ে কুত্তার সাথে এক্সট্রিম কিছু করে ফেলসি, কুত্তার সাঙ্গোপাঙ্গ রাগে আমারে মাইরা ফালাইসে। কি বলেন? তুই কি জাইনা শুইনা এইসব কথা বলতেসিশ? জি ভাই। সিরিয়াস। আর আমার ভাই ব্রেনে কি একটা রোগ ধরা পড়সে, ডাক্তার বলসে তিন মাসের বেশি আশা নাই। তা হুদাই মইরা যাওয়ার চেয়ে একটা ভালো কাম কইরা মরি, কি বলেন? বুঝলাম।

আচ্ছা তুই লাঞ্চ খাইসোস? না ভাই খাই নাই। আচ্ছা তুই কই খাবি বল, যেইখানে চাস ঐখানেই খাওয়ামু তোরে। ভাই একটা শেষ কথা আছে। কি কথা? আমি তো ভাই বিয়া করসি। তা ভাই, আমি মইরা গেলে তো ওর দেখাশোনা করার কেউ থাকবে না।

তা ভাই আপনি কি কিছু টাকা আমার মরার পর আমার বউরে দিয়া আসতে পারবেন? হ পারব। কত? এই ধরেন, বিশ। বিশ কি? হাজার। বিশ হাজার!! (চলবে) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।