আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার চোখ বন্ধ হলে এই দেশের কী হবে আল্লাহপাক জানেন == শেখ হাসিনা

ইতিহাসের পেছনে ছুটি তার ভেতরটা দেখবার আশায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'আমি হয়তো আছি তাই বাংলাদেশ নিরাপদে আছে। আমার চোখ বন্ধ হলে কী হবে তা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জানেন। ' বুধবার আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় শেখ হাসিনা এ কথা বলেছেন বলে জানায় বার্তা সংস্থা বাংলানিউজ টোয়েনটিফোর ডটকম। তারা আরও জানায় সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসা জঙ্গিদের তালিকা হাতে আছে বলে দাবি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শুধু তাই নয় ওইসব জঙ্গিকে বাংলাদেশ থেকে ধরে নিয়ে যেতে চায় তারা।

এ মন্তব্য খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। বৈঠক সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ওই আবদারের জবাবে প্রধানমন্ত্রী তাদের বলে দিয়েছেন, 'লিস্ট থাকলে দিয়ে দিন। আমরাই ব্যবস্থা নেব। ' বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'খালেদা জিয়া এত বড় বড় কথা বলেন! পাকিস্তান-আফগানিস্তানে কারা বোমা মারে তার লিস্ট যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে। আফগানিস্তান থেকে কারা ট্রেনিং নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে সেই লিস্টও তাদের কাছে আছে।

এরা বাংলাদেশকে আফগানিস্তান-পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল। এরা স্লোগান দিয়েছিল আমরা হবো তালেবান, বাংলা হবে আফগান'। তারা ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৫০০টি স্থানে একযোগে বোমা হামলাও চালিয়েছিল। খালেদা জিয়া তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিলেন। এই তালেবানদের বাংলাদেশ থেকে ধরে নিয়ে যেতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের ওপর চাপ ছিল।

কিন্তু আমরা রাজি হইনি। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপ আমরা চাই না। আমরা তাদের বলেছি, যদি লিস্ট থাকে আমাদের কাছে দিতে। আমরাই ব্যবস্থা নেব। সূত্র জানায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশের কোন মসজিদে কোন ইমাম জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, কত টাকা জঙ্গিদের পেছনে ব্যয় হচ্ছে সব তথ্যই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে।

আমরা চাই আমরা জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতার দায়ে আর যাতে কোনো রাষ্ট্র বাংলাদেশকে অপবাদ দিতে না পারে। সূত্র জানায়, সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম দণ্ডপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন নিয়ে প্রশ্ন তুললে তার (নাসিমের) প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সূত্র জানায়, মোহাম্মদ নাসিম বৈঠকে বক্তব্যদানকালে আইনশৃক্সখলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি ফাঁসির আসামি লক্ষ্মীপুরের আবু তাহেরের ছেলে বিপ্লবের সাজা মওকুফে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে বলে মন্তব্য করেন। এ সময়ে শেখ হাসিনা নাসিমের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'আপনি এত বড় বড় কথা বলছেন।

আমরা গত টার্মে (১৯৯৬-২০০১) যখন ক্ষমতায় ছিলাম, আপনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। তখনো তো অনেক কিছু হয়েছিল। তাতে কী সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়নি। আপনার কারণেই আপনার এলাকার আসনে বিএনপি প্রার্থী মিসেস টুকুর জয় নিশ্চিত হয়েছে। ' প্রধানমন্ত্রী নাসিমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, শোনা যায় আপনার এলাকায় তো কেউ আপনার জন্য রাজনীতি করারই সুযোগ পায় না।

সূত্র জানায়, সভায় কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলতাফ হোসেনসহ একাধিক সদস্য দেশের আইনশৃক্সখলার অবনতির কথা জানালে জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, 'অতীতের যে সময়ের চেয়ে দেশের আইনশৃক্সখলা পরিস্থিতি এখন ভালো। তবে, মাঝে মধ্যে দু-একটি ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতির আরও উন্নতি হওয়া দরকার। ' দলের কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যক্ষ মতিউর রহমান প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন আমাদের বয়স হয়েছে, জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছি। ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই।

তিনি বলেন, অনেক সংসদ সদস্যের ক্ষেত্রেই আশঙ্কা হচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে তারা আর আগামীতে সংসদ সদস্য হতে পারবেন কিনা। বিষয়টি মনিটরিংয়ের আওতায় আনা দরকার বলে প্রস্তাব রাখছি। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একবার সংসদ সদস্য হলেই যে তিনি আগামীতে মনোনয়ন পাবেন এমন গ্যারান্টি নেই। সবার ব্যাপারেই খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যার যার কাজের ফলই বলে দেবে তার ভবিষ্যৎ।

কেন্দ্রীয় সদস্য হারুন উর রশিদ বলেন, কোনো কোনো সংসদ সদস্য ক্রমান্বয়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। জনগণের সঙ্গে দূরত্ব না কমালে আগামীতে তারা সংসদ সদস্য হতে পারবেন কিনা সন্দেহ। এ সময়ে প্রধানমন্ত্রী জনগণের কাছাকাছি পেঁৗছতে সংসদ সদস্যদের গণসংযোগ বাড়ানোর তাগিদ দেন। এদিকে বুধবারের বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতাদের সফরসূচি চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই দেশের বৃহত্তর ১৯ জেলায় এ সফর হবে।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের নেতৃত্বে ১৯ টিমে বিভক্ত করে কেন্দ্রীয় নেতারা এ সফর সফল করবেন।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।